Pray for the world economy

মিরাজের রাতে নবী(ﷺ) কি আসলেই ডানাওয়ালা ঘোড়ায় করে আসমানে গিয়েছেন?

 

নাস্তিক প্রশ্নঃ

নবী মুহম্মদের() ভাষ্যমতে, তিনি ডানাওয়ালা এক ঘোড়ায় (বোরাক) চড়ে সাত আসমান পাড় হয়ে আল্লাহর সাথে দেখা করতে যান (মেরাজ গমন) ! বায়ুশূন্য মহাকাশে চলার জন্যে বোরাকের ডানার প্রয়োজনীয়তা পড়লো কোনদিক দিয়ে ? মহাকাশ যে বায়ুশূন্য সে ব্যাপারে কি মুহম্মদের কোন ধারনাই ছিলো না ?

 

উত্তরঃ

পশ্চিমা ইসলামের সমালোচকদের মধ্যে এই অভিযোগটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। রিচার্ড ডকিন্সসহ [1] অনেক রথী মহারথীব্যক্তি ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে হাসি-ঠাট্টা করেছে। আর বঙ্গীয় নাস্তিক সমাজে এই অদ্ভুত অভিযোগ উত্থাপনের অন্যতম হোতা হচ্ছে আরজ আলী মাতুব্বর। সে তার একটি বইতে [2] এ নিয়ে বিভিন্ন অহেতুক অভিযোগ এনেছে মুক্তমনাদের ব্লগেও এ নিয়ে নানা প্রকারের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ দেখা যায়। অথচ এইসব অভিযোগের পেছনে আছে অজ্ঞতা অথবা অসততা।

 

অভিযোগের খণ্ডনের পূর্বে এটা বলে রাখি যে, ইসলামী আকিদা অনুযায়ী আমরা নবীদের মুজিজা ও পূণ্যবানদের কারামতে বিশ্বাস করি। [3] যদি কুরআন বা সহীহ হাদিস দ্বারা এটি প্রমাণিত হতো যেঃ নবী মুহাম্মাদ() কোনো ডানাযুক্ত ঘোড়ায় করে আসমানে গিয়েছেন, আমরা নির্দ্বিধায় তা বিশ্বাস করতাম। যে মহান স্রষ্টা বিশাল মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতে পারেন, এর নিয়ন্ত্রন করতে পারেন, তাঁর পক্ষে এমন কিছু করা মোটেও কঠিন নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কুরআন-হাদিসে কি সত্যিই এমন কিছু বলা আছে? নাকি এখানেও অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল অভিযোগ তোলা হচ্ছে? 

 

কুরআন ও হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ইসরা-মিরাজের রজনীতে রাসুল() আসমানে গিয়েছিলেন। আমরা প্রথমেই জেনে নিই ইসরা ও মিরাজ কী।

 

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ() এর সফরকে ইসরা’ (রাত্রিকালীন ভ্রমণ) বলা হয় আর বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহনকে মিরাজ বলা হয়

অর্থাৎ ইসরা হচ্ছে মক্কা থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত সফর। আর মিরাজ হচ্ছে জেরুজালেম থেকে আসমানে সফর। [4]

 

এবার দেখি ইসরা ও মিরাজের বাহনের ব্যাপারে ইসলামী সূত্রগুলো কী তথ্য দেয়।

 

সহীহ হাদিস দ্বারা এটি সাব্যস্ত যে -- ইসরার বাহন ছিল বুরাক নামক এক বিশেষ জন্তু।

 

রাসুলুল্লাহ() বলেনঃ আমার জন্য বুরাক পাঠানো হলো। বুরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু । যতদুর দৃষ্টি যায়, এক এক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে । রাসুলুল্লাহ () বলেনঃ আমি এতে আরোহন করলাম এবং বাইতুল মাকদিস পর্যন্ত এসে পৌঁছলাম। তারপর অন্যান্য নবীগণ তাদের বাহনগুলো যে রজ্জুতে বাধতেন, আমি সে রজ্জুতে আমার বাহনটিও বাধলাম। তারপর মসজিদে প্রবেশ করলাম ও দুই রাকাত সলাত আদায় করে বের হলাম।

...  [5]

অনুরূপ আরো বিবরণ আছে। হাসান বসরী(র.) এর বর্ণনায় বুরাকের দুটি ডানারও উল্লেখ আছে। [6]

 

অনেকে বলে থাকেন যে বুরাক নাকি মানুষের মুখবিশিষ্ট জন্তু। [7] এমনকি সেভাবে বুরাকের বিভিন্ন কাল্পনিক চিত্রও আঁকা হয়। অথচ এটি নির্জলা মিথ্যা কথা। হাদিসে বুরাকের বর্ণনায় এমন কোনো কথারই উল্লেখ নেই।

 

হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা গেলো যে - রাসুলুল্লাহ() সে রাতে বুরাক নামক জন্তুর পিঠে করে মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস গমন করেন। রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহন হয় এর পরে। এই আসমানে ঊর্ধ্বারোহন কোন বাহনের মাধ্যমে হয়? চলুন দেখি হাদিসে এ ব্যাপারে কী বলা হয়েছে।

 

ইবন ইসহাক বলেনঃ আবু সাঈদ খুদরী(রা) হতে আমার কাছে এমন এক ব্যক্তি বর্ণনা করেন, যার নির্ভরযোগ্যতায় আমি সন্দেহ পোষণ করি না।

 

তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ()কে বলতে শুনেছি যে, বাইতুল মুকাদ্দাসের কাজ শেষ হবার পর আমার সামনে একটি সিঁড়ি (মিরাজ) উপস্থিত করা হল। আমি এমন সুন্দর জিনিস আর কখনো দেখিনি। এটাই সে বস্তু যার দিকে তোমাদের মত ব্যক্তিরা মৃত্যুকালে বিস্ফোরিত নেত্রে তাঁকিয়ে থাকে। আমার সঙ্গী [জিব্রাঈল(আ)] আমাকে তার উপর সওয়ার করালো। সেটি আমাকে নিয়ে আকাশের একটি দরজায় উপনিত হল যার নাম বাবুল হাফাযা অর্থাৎ প্রহরীদের ফটক। ইসমাঈল নামক একজন ফেরেশতা তার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল। তাঁর ২ হাতের নিচে ছিল ১২ হাজার ফেরেশতা, যাদের প্রত্যেকের হাতের নিচে ছিল ১২ হাজার করে ফেরেশতার অবস্থান।

আবু সাঈদ খুদরী(রা) বলেনঃ এ হাদিস বর্ণনাকালে রাসুলুল্লাহ() কুরআন মাজিদের এ আয়াত পাঠ করেন

আপনার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন” (৭৪ : ৩১)

এরপর তিনি বলেন, আমাকে যখন দরজার মুখে হাজির করা হল, তখন প্রশ্ন করা হল, ইনি কে, হে জিব্রাঈল? ...”  [8]

 

 

এখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে - বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহনের মাধ্যম ছিল এক প্রকার বিশেষ সিঁড়ি। এটি কেমন সিঁড়ি তা আল্লাহই ভালো জানেন। হতে পারে মহাজাগতিক বিশেষ কোনো সিঁড়ি বা ঊর্ধ্বারোহনের মাধ্যম যার ব্যাপারে আমাদের বিস্তারিত জ্ঞান নেই। কিন্তু তা মোটেই বুরাক নয়। এ সম্পর্কে ইবন আবিল ইয হানাফী(র.) তাঁর শারহ আকিদা তাহাবীতে বলেছেন,

 

মিরাজ (المعراج) শব্দটি مفعال এর ওজনে ব্যবহৃত হয়েছে। উপরে ওঠার যন্ত্রকে المعراج বলা হয়। এটি সিঁড়ির মতোই। কিন্তু এটি কেমন, তা জানা সম্ভব নয়। এর হুকুম অন্যান্য গায়েবী বিষয়ের হুকুম একই রকম। আমরা এগুলোর উপর ঈমান আনয়ন করি। কিন্তু এগুলোর কাইফিয়ত (ধরণ) জানার চেষ্টা করি না। [9]

 

 

আমরা দেখলাম যে, রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহন মোটেও বুরাকের দ্বারা হয়নিতিনি তো বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশের আগেই বুরাককে বেঁধে রেখেছিলেন, যেভাবে পূর্বের নবীরাও তাঁদের বাহন বাঁধতেননবী() এর আসমানে সফর হয়েছিল এর পরে। সেই বিশেষ সুন্দর সিঁড়িটির মাধ্যমে।

 

নাস্তিক-মুক্তমনারা  দাবি করেছে --রাসুল() নাকি ডানাওয়ালা ঘোড়ায় চড়ে মিরাজে গমন করেছেন। এরপর বুরাকের ডানা, মহাকাশে বায়ুশূন্যতা ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ তুলে এনে ইসলামের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে। অথচ রাসুল() মোটেও বুরাকে করে আসমানে যাননি। বরং ফিলিস্তিনের অন্তর্গত জেরুজালেমের বাইতুল মুকাদ্দাসে বুরাকে চড়ে গিয়েছেন। ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর অধিকাংশের অবস্থাই এরূপ। মূলে থাকে একটা মিথ্যা। এর উপর রঙ চড়িয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিশাল আকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু সত্য যখন সামনে আসে, মিথ্যার সকল ফাঁপা বেলুন চুপসে যেতে বাধ্য।

 

সমালোচনাকারীরা এবার হয়তো বলতে পারে কিছু কিছু হাদিস আছে, যেগুলো দেখে মনে হয় যে, রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহন বুরাকে করেই হয়েছিল। সেগুলোর বর্ণনা এমন কেন? 

এমন কিছু হাদিস উল্লেখ করছি

 

নবী() ইরশাদ করেনঃ একদা আমি কাবা শরীফের কাছে নিদ্রা ও জাগরণের মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম। তখন তিন ব্যাক্তির মধ্যবতী একজনকে কথা বলতে শুনতে পেলাম। যাহোক তিনি আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। তারপর আমার কাছে একটি স্বর্ণের পাত্র আনা হল, তাতে যমযমের পানি ছিল। এরপর তিনি আমার বক্ষ এখান থেকে ওখান পর্যন্ত বিদীর্ণ করলেন। ... রাসুলুল্লাহ() বলেনঃ এরপর আমার হৃদপিণ্ডটি বের করা হল এবং যমযমের পানি দিয়ে তা ধৌত করে পূনরায় যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হল। ঈমান ও হিকমতে আমার হৃদয় পূর্ন করে দেয়া হয়েছে।

এরপর আমার কাছে বুরাক’- নামের একটি সাদা জন্তু উপস্থিত করা হয়। এটি গাধা থেকে কিছু বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট। যতদুর দৃষ্টি যায় একেক পদক্ষেপে সে ততদুর চলে। এর উপর আমাকে আরোহন করান হল। আমরা চললাম এবং দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত পৌছলাম। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) দরজা খুলতে বললেন। বলা হল, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। বলা হল, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, আমার সাথে মুহাম্মাদ আছেন। ...

...”  [10]

 

“...তাপর আমার বুক থেকে পেটের নীচ পর্যন্ত বিদীর্ণ করা হল। এরপর আমার পেটে যমযমের পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা হল। তারপর হিকমত ও ঈমান পরিপূর্ণ করা হল এবং আমার নিকট সাদা চতুষ্পদ জন্তু আনা হল, যা খচ্চর হতে ছোট আর গাধা থেকে বড় অর্থাৎ বুরাক। এরপর তাতে আরোহণ করলাম, আর জিবরাঈল(আা)সহ ততক্ষন চললাম যতক্ষন না পৃথিবীর নিকটতম আসমানে গিয়ে পৌঁছলাম। [সেখানে] জিজ্ঞাসা হল, এ কে? উত্তরে বলা হল, জিবরাঈল। জিজ্ঞাসা করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে? উত্তর দেওয়া হল মুহাম্মাদ() প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে ধন্যবাদ, তাঁর শুভাগমন কতই না উত্তম।  [11]

 

চট করে এই হাদিসগুলো দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, রাসুলুল্লাহ() এর আসমানে ঊর্ধ্বারোহন হয়তো বুরাকে করেই হয়েছিল।

কিন্তু হাদিসগুলো হচ্ছে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এগুলোতে শুধুমাত্র রাসুলুল্লাহ() এর বুরাকে আরোহনের কথা উল্লেখ আছে। সংক্ষিপ্ত বিবরণে রাসুলুল্লাহ() এর এর বাহন পরিবর্তনের উল্লেখ নেই। এর অর্থ এই নয় যে পূর্ণ যাত্রায় একমাত্র বাহন বুরাকই ছিলো। কোনো ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে অনেক সময়েই কিছু কিছু তথ্য উহ্য থাকে।

 

আমরা উদাহরণস্বরূপ একটি ঘটনা বিবেচনা করতে পারি।

 

ধরা যাক একজন ব্যক্তি খুলনা থেকে ঢাকা যাবে। বাসে করে সে সকাল ৬টায় রওনা হল। দুপুর ১২টায় সে সাভার পৌঁছালো। সেখানে বাস থেকে নেমে সে একটি প্রাইভেট কারে উঠল। এরপর দুপুর ২টায় সে ঢাকা এসে পৌঁছালো।

 

এই ঘটনাটিকে যদি এভাবে বলি তাহলে কেমন দেখায়? --

লোকটি সকাল ৬টায় খুলনা থেকে বাসে উঠল। অতঃপর দুপুর ২টায় ঢাকায় পৌঁছালো

 

২য় বর্ণনাটি হচ্ছে সম্পূর্ণ ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এখানে লোকটির বাহন পরিবর্তনের ব্যাপারটি উহ্য আছে।   সংক্ষিপ্ত বিবরণ চট করে পড়লে মনে হতে পারে যে লোকটি বোধহয় খুলনার যে বাসে উঠেছিলো, সেই বাসে করেই ঢাকায় এসেছে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মাঝপথে সে বাহন পরিবর্তন করেছে। সে মাঝখানে প্রাইভেট কারে চড়েছিলো। কিন্তু তার যাত্রার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়াতে মাঝখানে প্রাইভেট কারের ব্যাপারটা আর আসেনি।

 

উপরের হাদিস ২টিতেও একই ব্যাপার ঘটেছে। ইসরা-মিরাজের ঘটনার বিবরণ এই হাদিসগুলোতে কিছুটা সংক্ষেপে আছে। এ কারণে চট করে দেখে মনে হচ্ছে যে নবী() বুঝি শুধু বুরাকে করেই আসমানে গিয়েছেন। কিন্তু ইসরা-মিরাজের বিস্তারিত বিবরণের হাদিসগুলোতে স্পষ্টতই উল্লেখ আছে যে আসমানে যাবার বাহন ছিলো এক প্রকারের বিশেষ সিঁড়ি। এর পূর্বে জেরুজালেম পর্যন্ত যাত্রার বাহন ছিল বুরাক।

 

কেউ কেউ এরপরেও অপতর্ক করা চেষ্টা করতে পারেন। তাদের জন্য আমি এখানে আরো একটি পয়েন্ট উল্লেখ করি যাতে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হবে যে এই হাদিসগুলোতে মিরাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ আছে এবং এগুলো থেকে মোটেই এ সিদ্ধান্তে আসা যাবে না যে রাসুলুল্লাহ() বুরাকে করেই আসমানে গিয়েছেন। ঐ হাদিসগুলো লক্ষ্য করলে আমরা দেখব যে, এগুলোতে রাসুলুল্লাহ() এর বাইতুল মুকাদ্দাসে যাবার কোনো বিবরণও নেই।

এর মানে কি এই যে রাসুলুল্লাহ() সে রাতে বাইতুল মুকাদ্দাসে যাননি? কখনোই না। বাইতুল মুকাদ্দাসে যাবার ঘটনা স্বয়ং আল কুরআনে আছে। [12] এটি অস্বীকার করলে পূর্ণ যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ অস্বীকার করা হয়ে যায়। আর রাসুলুল্লাহ() এর বাইতুল মুকাদ্দাসে যাবার কথা মানলে অবশ্যই এটা মানতে হবে যে যাত্রার এ ধাপে বাহন এক ছিলো না বরং ভিন্ন ছিলো[13] কেননা বিস্তারিত বিবরণে স্পষ্টভাবে অন্য বাহনের উল্লেখ আছে। কাজেই যৌক্তিকভাবে এটি স্বীকার করতেই হবে যে, সংক্ষিপ্ত বিবরণ বলে কিছু হাদিসে মাঝখানে ঘটনার (বাইতুল মুকাদ্দাস গমন) উল্লেখ নেই। এ কারণেই বুরাক বেঁধে রাখা ও সিঁড়িতে যাবার কথা আসেনি। মূল ঘটনার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিস্তারিত বিবরণের উপর নির্ভর করতে হবে। আর বিস্তারিত বিবরণের হাদিস লেখার শুরুতেই উল্লেখ করেছি।

 

তবে হুযায়ফা(রা.) এর বর্ণনা। সেখানে বিপরীত একটি তথ্য পাওয়া যায় যে - নবী() বুরাককে বাইতুল মাকদিসে বেধে রেখে যাননি, বাইতুল মাকদিসে সলাত পড়েননি বরং তা না করেই (সরাসরি বুরাকেই) আসমানে গিয়েছেন।

 

যির ইবনু হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)- কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ() কি বাইতুল মাক্বদিসে নামায আদায় করেছেন? তিনি বলেলেন, না। আমি বললাম, হ্যাঁ তিনি নামায আদায় করেছেন। তারপর তিনি (যির) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন : পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি এক রাতে তাঁর বান্দাকে মাসজিদুল হারাম হতে দূরবর্তী মাসজিদে নিয়ে গেলেন”- (বানী ইসরাঈল ১)। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, এ আয়াতের মাধ্যমে কি তুমি প্রমাণ করতে চাও, রাসূলুল্লাহ() সেখানে নামায আদায় করেছেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সেখানে যদি রাসূলুল্লাহ() নামায আদায় করতেন, তাহলে তোমাদের উপরও সেখানে নামায আদায় করা বাধ্যতামূলক হত, যেমন মাসজিদুল হারামে নামায আদায় করা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হুজাইফাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ()এর নিকট একটি পশু আনা হল। এর পিঠ ছিল দীর্ঘ এবং (চলার সময়) এর পা দৃষ্টির সীমায় পতিত হয়। তাঁরা দুজন (মহানাবী ও জিবরীল) জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননিতারপর তাঁরা দুজন প্রত্যাবর্তন করেন। তারা যেভাবে গিয়েছিলেন অনুরূপভাবেই ফিরে আসেন (অর্থাৎ সওয়ারী অবস্থায়ই ফিরে আসেন)। হুজাইফাহ (রাঃ) বলেন, লোকেরা বলাবলি করে, তিনি বোরাককে বেঁধেছিলেন। কেন এটি তার নিকট হতে পালিয়ে যাবে। অথচ গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছু জানার মালিক (আল্লাহ তাআলা) বোরাককে তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছিলেন।  [14]

 

শায়খ আলবানী(র.) এর মতে এই বর্ণনাটি হাসান। তবে অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ এই বর্ণনার কিছু রাবীর দুর্বলতার ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন। এই হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে শুরুতেই দেখা যায় ইবন আবি উমারের নাম। [15] তার সম্পর্কে ইবন আবি হাতিম আর রাজি(র.) বলেছেন,

 

“তিনি নেককার। কিন্তু তাঁর মাঝে ভুলে যাবার প্রবণতা ছিলো। আমি দেখেছি তিনি ইবন উয়াইনাহ থেকে জাল হাদিস বর্ণনা করতেন।[16]

 

এই হাদিসের আরেকজন রাবী আসিম বিন আবিন নাজুদ। ইমাম যাহাবী(র.) এর মিযানুল ই’তিদাল গ্রন্থে এই রাবীর অবস্থা বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ তাকে বিশ্বস্ত রাবী গণ্য করলেও কেউ কেউ তার কিছু দুর্বলতা আছে বলে উল্লেখ করেছেন। [17]

 

এই বর্ণনা যদি দুর্বল না হয়ে হাসানও হয়, তবু এ থেকে কিছু প্রমাণ হয় না। ইমাম ইবন কাসির(র.) নবী() থেকে অন্যান্য সাহাবীদের বিবরণগুলোর কথা বর্ণনা করে এরপর উল্লেখ করেছেনঃ... "বাইতুল মুকাদ্দাসে সালাত পড়া ও হালকার সহিত বোরাক বাঁধাকে হযরত হুযায়ফা(রা.) অস্বীকার করিয়াছেন। কিন্তু অন্যান্য রাবীগণ তাহা রাসূলুল্লাহ() হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। আর রাসূলুল্লাহ() হইতে যাহা বর্ণিত হইয়াছে উহা হযরত হুযাইফা (রা.) এর কথা হইতে অধিক গ্রহণযোগ্য" [18]

 

 

এ বর্ণনার ব্যাপারে ইমাম ইবন হাজার আসকালানী(র.) বলেছেন,

 

فَهَذَا لَمْ يُسْنِدْهُ حُذَيْفَةُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيحْتَمل انه قَالَ عَنِ اجْتِهَادٍ

অর্থঃ “হুজাইফা(রা.) হাদিসটিকে রাসুলুল্লাহ ()-এর দিকে সম্পৃক্ত করেননি। বরং এই সম্ভাবনা আছে যে এটা তিনি ইজতিহাদ করে নিজের থেকে বলেছেন।” [19]

 

সকল হাদিস একত্রে বিশ্লেষণ করে প্রখ্যাত আলেম-উলামাদের সিদ্ধান্তও এটি যে, রাসুল () সে রাতে সিঁড়িতে করে আসমানে গিয়েছেন। বুরাকে করে নয়।

 

সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুফাসসির ইমাম ইবন কাসির(র) তাঁর তাফসির গ্রন্থে [সুরা বনী ইস্রাঈলের ১নং আয়াতের তাফসির] ইসরা-মিরাজ সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস উল্লেখ করে শেষ অংশে উল্লেখ করেছেন যে, রাসুল() সে রাতে বুরাকে করে বাইতুল মুকাদ্দাসে গিয়েছেন। এরপর এক প্রকার মইতে (বা সিঁড়িতে) করে ১ম আসমানে গিয়েছেন, এরপর অবশিষ্ট আসমানগুলোতে গিয়েছেন। [20]

 

 

এ সংক্রান্ত সকল হাদিসের আলোকে এটিই তাঁর অভিমত। তিনি তাঁর ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,

 

والمقصود أنه صلى الله عليه وسلم لما فرغ من أمر بيت المقدس نصب له المعراج؛ وهو السلم، فصعد فيه إلى السماء، ولم يكن الصعود على البراق كما قد يتوهمه بعض الناس؛ بل كان البراق مربوطًا على باب مسجد بيت المقدس ليرجع عليه إلى مكة.

অর্থঃ রাসুলুল্লাহ() যখন বাইতুল মুকাদ্দাসের কাজ শেষ করলেন তখন তাঁর জন্য মিরাজ (সিঁড়ি) আনা হল এবং এতে করে তিনি আসমানে গমন করেন। বুরাকে করে যাননি। যেমন কতিপয় মানুষ তা ধারণা করে থাকে। বরং বুরাক বাইতুল মুকাদ্দাসের দরজায় সাথে বাঁধা ছিল যেন তাতে করে তিনি আবার মক্কায় ফিরে আসতে পারেন।[21]

 

 

তাফসির মাআরিফুল কুরআনেও সুরা বনী ইস্রাঈলের ১নং আয়াতের তাফসিরেও ইবনে কাসিরের মতটিকেই সমর্থন করা হয়েছে। তাঁর বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে - রাসুল () সে রাতে সিঁড়িতে করে আসমানে গিয়েছেন [বুরাকে করে নয়] । [22]

 

 

 

 

 

 

জালালুদ্দিন সুয়ুতী(র.) বলেছেন,

الصحيح الذي تقرر من الأحاديث الصحيحة أن العروج كان في المعراج لا على البراق

অর্থঃ বিশুদ্ধ মত যা সহীহ হাদিস থেকে স্থিরকৃত হয়েছে, ঊর্ধ্বগমন মিরাজ বা সিঁড়ি জাতীয় এক ধরণের বস্তুর মাধ্যমে হয়েছিল, বুরাকের মাধ্যমে নয়।[23]

 

সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাদিস বিশারদ ইমাম ইবন হাজার আসকালানী(র.)ও এ সংক্রান্ত সকল হাদিস বিশ্লেষণ করে অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। [24]

 

কেউ কেউ ইসরা-মিরাজের বাহনের ব্যাপারে 'রফ রফ' এর কথাও উল্লেখ করে[25] "রাসুল () রফ রফে করে আসমানে গিয়েছেন" এই তথ্য কতটুকু সঠিক?

 

রফ রফের এর কথা আমাদের সমাজে বেশ প্রচলিত। কিন্তু আসমানে যাবার বাহন হিসাবে এ জাতীয় কোন কিছুর নাম সিহাহ সিত্তাহ, মুসনাদ আহমাদ বা অন্য কোন হাদিস গ্রন্থে আসেনি। হিজরতের ১ম ৫-৬ শতাব্দীতে এ বিষয়ে তেমন কিছুই উল্লেখ নেই। এর পরের গ্রন্থগুলোতে আসমানে যাবার বাহন হিসাবে এই জিনিসের কথা এসেছে। কিন্তু সহীহভাবে মোটেও এটি প্রমাণিত নয়।  [26] ইসলামের নামে অভিযোগ করতে হলে অবশ্যই সঠিক উৎস থেকে তা করা উচিত। ইসলামবিরোধীদেরকে যা অনেক সময়েই করতে দেখা যায় না। তাদের সম্বল ইসলামের নামে প্রচলিত বানোয়াট কথা, অপব্যাখ্যা কিংবা নির্জলা মিথ্যা।

 

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে রূহানীভাবে বা স্বপ্নে নয় বরং নবী() এর মিরাজ সশরীরে ও বাস্তবিকভাবেই হয়েছে। ইসরা-মিরাজ মূলত একটি মুজিজা বা অলৌকিক জিনিস (Miracle)যা প্রকৃতির সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম সেটিই হচ্ছে Miracleকাজেই সাধারণ বস্তুবাদী দৃষ্টিতে এ ঘটনার অনেক কিছুকে অসম্ভব বলে মনে হতে পারে। কিন্তু যদি আল্লাহর অস্তিত্ব ও মুহাম্মাদ() এর নবুয়তের ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত হয় তাহলে অবশ্যই তার চোখে এই মুজিজা বাস্তব সত্য হয়ে ধরা দেয়। এটি ভিন্ন ও দীর্ঘ আলোচনার বিষয়। কিন্তু বায়ুশূন্য মহাকাশে ডানাওয়ালা ঘোড়ায় চড়ে ভ্রমণে যাবার কথা বলে যে অভিযোগ ইসলাম ও নবী মুহাম্মাদ() এর বিরুদ্ধে তোলা হয় তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হলো। বরং এখানে এমন জিনিস ইসলামের নামে চাপানো হয়েছিলো যা কুরআন বা হাদিসে বলা হয়নি

 

لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ

অর্থঃ সে [মুহাম্মাদ()] অবশ্যই তাঁর প্রতিপালকের মহা নিদর্শনাবলী দেখেছিলো[27]

 

 

দেখুনঃ

"মিরাজের রাতে নবী(ﷺ) কি আসলেই ডানাওয়ালা ঘোড়ায় করে আসমানে গিয়েছেন? | মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনার"

https://youtu.be/y06OzHQ1ego

 

আরো পড়ুনঃ

 

রাসুলুল্লাহ(ﷺ) কি বোরাকে করে আসমানে গমন করেছিলেন?

 

নবী (ﷺ) এর ইসরা ও মিরাজ: ইসরার ঘটনার সত্যতা কতটুকু? মাসজিদুল আকসা (বাইতুল মুকাদ্দাস) কি আসলেই সে সময়ে ছিল?


কা'বা ও আল আকসা নির্মাণের সময়ের ব্যাবধান সম্পর্কে হাদিসের তথ্য কতটুকু সঠিক?

 

মিরাজের রাতে নামায ৫০ থেকে ৫ ওয়াক্ত হবার দ্বারা কি আল্লাহর বাণী বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে?

 

মিরাজের যাত্রা শুরুর স্থান নিয়ে হাদিসে কি স্ববিরোধিতা আছে?

 

মিরাজের ঘটনায় রাসুল(ﷺ) ও উম্মে হানী(রা.) এর উপর ইসলামবিরোধীদের নোংরা অপবাদের জবাব

 

 

তথ্যসূত্র


[1]  Richard Dawkins Debates Flying Horses with Muslims(YouTube)

https://www.youtube.com/watch?v=mWfHkLbMm6w

[2]  আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র ১ সত্যের সন্ধান, পৃষ্ঠা ৯০-৯১

[3]   কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকিদা . খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, পৃষ্ঠা ১২৯-১৩৩

আকিদা তাহাবী ইমাম আবু জাফর তাহাবী, আকিদা নং ৯৯

[4]  কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির), ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, ২য় খণ্ড; সুরা বনী ইস্রাঈলের ১ নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ১৪৬৫

[5]  সহীহ মুসলিম, খণ্ড ১, কিতাবুল ঈমান অধ্যায়, হাদিস ৩০৯

[6]  সীরাতুন নবী(সা) ইবন হিশাম, ২য় খন্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), পৃষ্ঠা ৭২

[7]  এহেন ভিত্তিহীন কথা যারা বলে থাকেন, তাদের মধ্যে বঙ্গীয় নাস্তিকদের প্রাণপুরুষ আরজ আলী মাতুব্বরও ছিলেন অন্যতম। দেখুনঃ আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র ১ সত্যের সন্ধান, পৃষ্ঠা ৯০

[8]   সীরাতুন নবী (সা) - ইবন হিশাম, ২য় খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ); পৃষ্ঠা ৭৭-৭৮

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া – ইবন কাসির, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১১০

শারহে মাওয়াহিব – যারকানী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৫৫

[9]  শারহুল আক্বীদা আত্-ত্বহাবীয় ইবন আবিল ইয আল হানাফী, ১ম খণ্ড (মাকতাবাতুস সুন্নাহ), আকিদা নং ৪৩ এর ব্যাখ্যা, পৃষ্ঠা ৩৭৩

https://www.hadithbd.com/showqa.php?b=63&s=855

[10]  সহীহ মুসলিম, হাদিস নং : ৩১৩

[11]  সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ২৯৮০

[12]  আল কুরআন, সুরা বনী ইস্রাঈল (ইসরা) ১৭ : ১ দ্রষ্টব্য

[13]  ইসলামের সমালোচকরা ইসরা ও মিরাজের সম্পূর্ণ ঘটনাকেই মূলত অস্বীকার করে। কিন্তু এখানে তাত্ত্বিকভাবে প্রাসঙ্গিক অভিযোগটির কথা আলোচনা করা হচ্ছে। আর এটি আলোচনার জন্য যুক্তির খাতিরে হলেও সকলকেই পূর্ণ ঘটনাটিকে বিবেচনা করতে হবে।

[14] সুনান তিরমীযী , হাদিস নং : ৩১৪৭

[15] হাদিসটির সকল বর্ণনাকারীর নামসহ সম্পূর্ণ আরবি ইবারত রয়েছে এখানেঃ

http://ihadis.com/books/tirmidi/hadis/3147

[18] তাফসির ইবন কাসির, ৬ষ্ঠ খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), সুরা বনী ইস্রাঈলের ১নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ২২৫ দ্রষ্টব্য পৃষ্ঠা ২১৭-২১৮

[19]  ফাতহুল বারী ৭/২০৮

[20]  তাফসির ইবন কাসির, ৬ষ্ঠ খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), সুরা বনী ইস্রাঈলের ১নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ২৫৪

[21] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া  ৩/১৩৮

https://rb.gy/ghntb6

[22]  তাফসির মাআরিফুল কুরআন (সংক্ষিপ্ত),সুরা বনী ইস্রাঈলের ১নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ৭৬৪

[23]  আয়াতুল কুবরা ফি শারহে কিসসাতুল মিরাজঃ ৬০

[24]  বিস্তারিত আলোচনার জন্য দেখুনঃ ফাতহুল বারী ৭/২০৮

[25]  দেখুনঃ আরজ আলী মাতুব্বর রচনা সমগ্র ১ সত্যের সন্ধান, পৃষ্ঠা ৯০

[26]  ইমাম আবু হানিফা(র) এর "ফিকহুল আকবর" অনুবাদ ও ব্যাখ্যা - ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, পৃষ্ঠা ৫০৪ দ্রষ্টব্য

[27]  আল কুরআন, নাজম ৫৩ : ১৮