Pray for the world economy

আল্লাহ্‌ যদি সকল প্রাণীর রিযিকের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে আফ্রিকার লাখ লাখ মানুষকে অনাহারে রাখার পেছনে যুক্তি কি?

 

আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে। [1]

 

নাস্তিক-মুক্তমনারা প্রায়ই কুরআনের এই আয়াত ব্যবহার করে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে যেহেতু, এত এত লোক অনাহারে তাই স্রষ্টা বলতে কিছু নেই! অথচ আপনি যে দিব্যি আহার করেই এই ধরণের প্রশ্ন তুললেন; এবং দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই যে প্রতিদিন খেতে পারছে- সেটা নিয়ে একবারও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন না! প্রথমত, পৃথিবীতে কেউ যদি অনাহারে মারা যায়, এর মানে এই না যে স্রষ্টা বলে কেউ নেই। এর মানে এই যে, আপনি স্রষ্টার উদ্দেশ্য এবং সবথেকে বড় কথা আপনার নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন নি। পৃথিবীতে কোন সমস্যা থাকার মানে এই না যে কোন পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা নেই বরং এটাই প্রমাণ হয় যে আপনি সৃষ্টিকর্তার সংজ্ঞা সম্পর্কে নিজে নিজেই কিছু একটা ধারণা করে নিয়েছেন, যা সঠিক না। একটা পিঁপড়া যদি মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে– “তোমাদের না এত বুদ্ধি? তাহলে তোমরা মাটির উপরে বাড়ি বানাও কেন? আমাদের মত মাটির নিচে থাকলেই তো পারো?” এখানে পিঁপড়া ধরে নিচ্ছে বুদ্ধিমান হলেই মাটির নিচে থাকতে হবে, যা হাস্যকর। ঠিক একই ভাবে এটা হাস্যকর যে মানুষ সৃষ্টিকর্তার এক সংজ্ঞা নিজে নিজে বানিয়ে, সেই সংজ্ঞা ব্যবহার করে নিজেরাই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে অস্বীকার করে।

 

দ্বিতীয়ত, আপনাকে কে শেখাল করুণা কি? পৃথিবীতে যদি কোন সমস্যা না থাকতো, কোন অন্যায় না হত, কোন খারাপ কিছু না থাকতো, তাহলে আপনি বুঝতেন কি করে ‘খারাপ’ কি এবং তখন ‘ভালো’ বলতেই বা কি বোঝাতো? করুণা করার প্রশ্ন তখনই আসে যখন কোন মন্দ ঘটনা ঘটে। কোন মন্দ না থাকলে তো করুণার অস্তিত্ব থাকতো না। বরং আপনার মনে করুণার ধারনাটি যে আছে সেটাই তো প্রমাণ করে যে কেউ একজন আছে যে আপনাকে করুণার ধারনাটি দিয়েছে! না হলে এই ধারণাটি আপনার মনে আসলো কিভাবে?  

 

তৃতীয়ত, আল্লাহ পরম করুণাময় হলেই যে তিনি কাউকে কোন অন্যায় করতে দিবেন না, তা আপনাকে কে বলেছে? বাবা-মা তাদের বাচ্চাদেরকে অত্যন্ত ভালবাসে, কিন্তু তাই বলে তারা নিশ্চয়ই তাদের বাচ্চাদের চিন্তার স্বাধীনতা কেড়ে নেয় না এবং প্রত্যেকটা কাজে বাধা দেয় না। বাচ্চারা অন্যায় করে, তারপর তার জন্য শাস্তি পায়। বাবা-মা সবসময় চেষ্টা করে বাচ্চাদেরকে যতটুকু সম্ভব ভুল না করতে দেওয়ার, অন্যায় থেকে দূরে থাকার জন্য উপদেশ দেবার। আল্লাহও সেটাই করেন আমাদের সাথে।

 

চতুর্থত, আপনি ধরে নিচ্ছেন, পৃথিবীতে যাবতীয় দুঃখ কষ্টের জন্য শুধু আল্লাহ তা'আলা 'দোষী' (নাউযুবিল্লাহ)। এখানে মানুষের কোন প্রকার হাত নেই। মানুষের হাত থাকলেও কেন আল্লাহ এমন ব্যবস্থা করলো না যার জন্য মানুষ যেন কখনও অন্য মানুষকে কষ্ট দিতে না পারে। আমরা অনেক সময় ঠিকভাবে সময় নিয়ে চিন্তা করে দেখিনা আমরা আল্লাহকে কি নিয়ে দোষ দেই। যেমন আপনি হয়তো আফ্রিকার গরিব মানুষদের কষ্ট দেখে ভাবছেন কেন আল্লাহ তাদেরকে এত কষ্ট দেয়? আল্লাহ আফ্রিকার দেশগুলোকে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। তাদের তেল ছিল, হীরা ছিল, সোনা ছিল। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তাদের ব্যবসায়ী সরকার নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাবার জন্য পশ্চিমা দেশের কোম্পানিগুলোর সাথে চুক্তি করে সব তেল, গ্যাস, হীরা, সোনা পশ্চিমা দেশে পাচার করে দিয়েছে। যার ফলে নিজের দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে দেশের মানুষগুলো চরম গরিব হয়ে না খেয়ে মারা যাচ্ছে। আফ্রিকার গরিব দেশগুলোর সরকারগুলো যদি পররাষ্ট্র নীতিতে স্বচ্ছ এবং দক্ষ হত, তারা নিজেদের কমিশনের কথা চিন্তা না করে দেশের মানুষের জন্য ভাবতো, প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে গোপন রাখত, যতক্ষণ না তারা নিজেদের দেশে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে সেই প্রাকৃতিক সম্পদগুলো নিজেরাই ভোগ করতে না পারছে, তাহলে আজকে তাদের এই অবস্থা হত না। আল্লাহ সেই দেশগুলোকে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়েছিলেন, যেরকম কিনা তিনি মালয়েশিয়াকে দিয়েছেন। কিন্তু মালয়েশিয়া তাদের সম্পদকে নিজের দেশে রেখে নিজেরাই ভোগ করে বিরাট বড় লোক হয়ে গেছে। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশগুলো অল্প কমিশনের বিনিময়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সেই প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়ে ফকির হয়ে গেছে।  [2]

 

আল্লাহ কখনও কোন জাতির উপরে দেয়া তাঁর অনুগ্রহকে বদলান না, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেদেরকে বদলিয়ে না ফেলে। [3]

 

এবার দয়া করে এই দাবি করবেন না যে, ‘আল্লাহ্‌ কেন অলৌকিক কিছু করলেন না যাতে এরকম কিছু না হয়? আল্লাহ্‌ তো চাইলেই এখন অলৌকিকভাবে তাদেরকে খাবার পাঠাতে পারেন!’ একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে এরকম চিন্তা করা কতটা হাস্যকর। ধরুন, একদিন সোমালিয়াতে আকাশ থেকে খাবার পড়তে শুরু করলো। এরপর ফলাফলটা কি হতে পারে ভাবুন তো! বিশ্বের সব মিডিয়া ঐখানে জড়ো হবে, টুরিস্টরা দেখতে আসবে। ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলো আসবে গবেষণা করতে। অতঃপর, ঐ এলাকাকে তারা restricted area ঘোষণা করে দিবে। যাদের মূলত উপকার পাওয়ার কথা, তারাই বঞ্চিত হবে। সবশেষে তাদের গবেষণায় উঠে আসবে, এলিয়েনদের খাবার পাঠানো থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন ধরণের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব! (আল্লাহ্‌ কেন অলৌকিক কিছু করেন না- এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন এই লেখাটি https://goo.gl/ZsvHbk)

 

এক ভাইয়ের একটা ঘটনা শেয়ার করি-

//সেঃ ভাই, এগুলো সব বানানো। বাড়াবাড়ি করে দেখায় মানুষকে গলানোর জন্য।

আমিঃ না ভাই, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের রিপোর্ট দেখেন, WFP রিপোর্ট দেখেনউইকিপিডিয়া দেখেন। সবাই একই জিনিস বলছে। একসাথে সবাই প্রতারণা করতে পারেনা।

সে অনেকক্ষণ ঘাটাঘাটি করে দেখল।

সেঃ হুমম, ঠিক কথাই তো মনে হচ্ছে। মানুষের অবস্থাতো সত্যিই খারাপ।

আমিঃ আসেন না আমরা কিছু ডোনেট করি। চলেন প্রতি মাসে মাত্র বিশ পাউন্ড হলেও ডোনেট করি। যে কোন একটা চ্যারিটির ওয়েব সাইটে যান, পাচ মিনিটও লাগবে না।

সেঃ বিশ পাউন্ডতো অনেক! আগে পাচ পাউন্ড দিয়ে শুরু করি।

আমিঃ ভাই, আপনি আপনার পরিবার নিয়ে একবার সিনেমা দেখতে গেলেই বিশ পাউন্ড উড়ে যায়। আর আপনি মাসে একটা সিনেমার টাকা বাঁচিয়ে দশটা গরিব মানুষকে একমাসের জন্য তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন না?

সেঃ আচ্ছা, আচ্ছা, আজকে রাতে চিন্তা করে দেখি। বউয়ের সাথে কথা বলি আগে। কালকে আপনাকে জানাব।

আমি গভীর আগ্রহে রাত পার করি আগামী কালকের জন্য। বড় আশা তাকে আগামী কালকে রাজি করাতে পারবো ডোনেট করার জন্য।

সেঃ ভাই, রাতে অনেক চিন্তা করলাম। আমার অবস্থা বেশি ভালো না ভাই। আমার মাস্টার্সের খরচ দিতে হচ্ছে। প্রত্যেক মাসে বাড়ির মর্টগেজ দিতে হয়। আমার ছেলেরা বড় হচ্ছে। দশ বছর পরেই ওদেরকে ইউনিভার্সিটিতে দিব। অনেক পড়ার খরচ দিতে হবে। আর এই বছর দেশেও যাওয়া দরকার। যতটুকু পারি পাউন্ড জমানোর চেষ্টা করছি।

আমিঃ কি বলেন ভাই? আপনার মাসে মাত্র বিশ পাউন্ড দিলে এগুলো সব বন্ধ হয়ে যাবে?

সেঃ বলা তো যায় না। মাসে বিশ পাউন্ড মানে বোঝেন? বছরে আড়াই’শ পাউন্ড। একজনের প্লেনের টিকেট হয়ে যায়।

আমিঃ একবার না বেড়িয়ে সেই টাকা দিয়ে দশটা মানুষকে পুরো এক বছর তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবেন না? দশটা মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। এতে আপনার কিছুই যায় আসে না?

সেঃ আমার টাকাগুলো তাদের কাছে যাবে তার গ্যারান্টি কি? দেখবেন এর মধ্যে দশ পাউন্ড সব কর্মচারীদের বেতন, যাতায়াত খরচ হাবিজাবিতে খরচ হয়ে যাচ্ছে। এগুলো সবই ব্যবসা।

আমিঃ তাতে কি? সেটাও তো দরকার। না হলে এই টাকাগুলো গরিব লোকদের কাছে যাবে কি করে? আপনি আমি তো নিজেরা প্লেনে করে আফ্রিকায় গিয়ে গরিবদের হাতে তুলে দিব না। কাউকে তো যেতে হবেই নাকি?

সেঃ নাহ, আমার ঠিক মন টানছেনা। মনে হচ্ছে বিপদের জন্য টাকা গুলো রেখে দেওয়া দরকার। আপনার বাচ্চা হলে বুঝবেন কত যন্ত্রনা জীবনে। ঈদে ওদেরকে জামা কাপড় কিনে দিতে হবে। এর জন্য টাকা বাঁচাচ্ছি।

আমিঃ আপনার একটা প্যান্টের দাম কমপক্ষে বিশ পাউন্ড। এবার ঈদে একটা প্যান্ট না কিনে তিনটা মানুষকে বাঁচান?

সেঃ ঈদেও নতুন জামা কাপড় কিনব না কি বলেন। একই কাপড় পড়ে মানুষের বাসায় বেড়াতে যাবো, লোকে কি বলবে?

আমিঃ আমি এই খয়েরি প্যান্টটা পড়ে গত দুই মাস ধরে অফিস করছি। একবারও খেয়াল করেছেন সেটা? আমার কি মান সন্মান চলে গেছে, বা ডিমোশোন হয়েছে, বা আমাকে অফিস থেকে বের করে দিয়েছে?

সেঃ সবাই এক না ভাই। আপনি এক রকম, আমি আরেক রকম। আপনার পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না, আমার অনেক দায়িত্ব।

আমিঃ ভাই একটা বার চিন্তা করেন। আপনার বাচ্চা দু’টা যদি তিন দিন খেতে না পেরে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়, দুর্বল হয়ে আপনাকে শব্দ করে বাবা পর্যন্ত ডাকতে না পারে,  চুপ করে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আপনার কোলে একসময় মারা যায়, আপনার কেমন লাগবে?

সেঃ কি সব বাজে কথা বলছেন আপনি? আস্তাগ ফিরুল্লাহ!

আমিঃ মাফ চাচ্ছি। কিন্তু একটা বার ঠাণ্ডা মাথায় ভাবেন। আপনার তো বাচ্চা আছে, আপনার তো বোঝা উচিৎ। আপনার কি মনে হয়না আজকে যে চার হাজার বাচ্চা তাদের বাবা-মায়ের চোখের সামনে মারা যাবে, তাদের একজনকে হলেও আপনার বাঁচানো উচিৎ? মাত্র একজন?

সেঃ ভাই, আর কথা বলতে ভালো লাগছে না। এমনিতেই টাকা পয়সার টানাটানি যাচ্ছে। ছেলে বড় হচ্ছে, বিয়ে করবে, তার জন্য আরেকটা বাড়ি কিনতে হবে। আগে নিজের পরিবার বাঁচাই, তারপর অন্যকে বাঁচাব।

সে চলে গেল। আমি অবাক হয়ে দেখলাম, মানুষ এতো পাথর হয়?//

 

আপনি কি অস্বীকার করতে পারবেন যে আমাদের অধিকাংশের মন-মানসিকতা এমনটা না? তাহলে আপনি কি করে স্রষ্টাকে দোষ দেন?

 

আপনি জানেন কি অনেক দেশের সরকার তাদের কৃষকদের ভর্তুকি দেয় ফসল না ফলানোর জন্য এবং অতিরিক্ত ফসল নষ্ট করার জন্য? যাতে করে বাজারে মূল্য বৃদ্ধি করে বেশি লাভ করা যায়। এর একটা সুন্দর নামও আছে- Agricultural Adjustment Act. [4] মানুষ যখন মানবতার থেকে নিজের পকেট ভারী করতেই বেশি ব্যস্ত, তখন ভারসাম্য যে হারাবেই!

 

FAO-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা পৃথিবীতে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য আছে। কিন্তু তারপরেও কেন মানুষ অনাহারে থাকে? এর প্রধান কারন হল দারিদ্রতা [5]। আমাদের নিজেদের তৈরি পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এত সুন্দর ভারসাম্য তৈরি করেছে।  

 

এছাড়া FAO-এর আরও একটা রিপোর্ট বলে, প্রতিবছর গড়ে আমাদের খাবারের এক-তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়, যা প্রায় ১.৩ বিলিয়ন টনের সমান। এই ক্ষতির পরিমাণ উন্নত দেশে ৬৮০ বিলিয়ন এবং ৩১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান।[6] তাছাড়া একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ১৮০০ কিলোক্যালরি যথেষ্ট, সেখানে আমেরিকাতে এর পরিমাণ মাথাপিছু ৩৭৫০! [7] ভাবতে পারেন কিছু লোক না খেয়ে থাকছে, আর কিছু লোক খাবার অপচয় করে, ইচ্ছা মত খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আবার স্রষ্টাকে দোষারোপ করে!

 

আপনি যদি ভেবে থাকেন, আফ্রিকার দেশগুলোর জলবায়ুই দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছে, তাহলে ভুল ভাবছেন। একটা দেশে দুর্ভিক্ষের পেছনে শুধু প্রাকৃতিক কারণই কাজ করে না, এর পেছনে থাকতে পারে যুদ্ধের মত অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দারিদ্রতা, যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা সহ আরও অনেক কারণ, যেগুলোর সবগুলোই আসলে মানবসৃষ্ট। খাদ্য সমস্যা নিয়ে আরও বিস্তারিত পড়তে পারেন World Hunger: Ten Myths বইতে। [8]

 

স্রষ্টা থাকার পরেও মানুষ কেন অনাহারে মারা যায়, এর উত্তর আল্লাহ্‌ কুরআনেই দিয়েছেন- “এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে।” [9]

 

আল্লাহ্‌ বলেই দিয়েছেন তিনি আমাদের ক্ষুধা দিয়ে পরীক্ষা করবেন। এই পরীক্ষাটা শুধু যাকে ‘ক্ষুধা’ দেয়া হয়েছে, তার জন্য না। বরং আমরা যারা এই ‘ক্ষুধা’টা দেখছি তাদের জন্যেও এটা একটা বিশাল পরীক্ষা। স্রষ্টা কি আমাদের প্রতিবেশীর প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলে না? স্রষ্টা কি আমাদের ক্ষুধার্তকে খাওয়াতে বলে না? আপনি স্রষ্টার আইনকে ভঙ্গ করে আবার স্রষ্টাকেই দোষারোপ করেন কোন সাহসে?

 

সূরা হুদের ৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় অনেক আলেমগণ বলেন, এখানে রিযিকের দায়িত্ব গ্রহণের অর্থ হবে আয়ুষ্কাল শেষ হওয়া পর্যন্ত এক নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত আল্লাহ্‌ রিযিকের দায়িত্ব নিয়েছেন। অর্থাৎ, যারা অনাহারে মারা যায় তাদের আয়ু শেষ হয়ে যায়। ফলে রিযিক প্রদান বন্ধ করে দেয়া হয়। [10]

 আপনি যদি মুসলিম হয়ে এই দাবি তুলেন যে, একজন শিশুর কি দোষ? তাহলে আপনাকে সূরা বাকারাহ্‌র ২৫৫ নং আয়াতটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আকাশগুলো এবং পৃথিবীতে যা কিছুই আছে, সবকিছু শুধুমাত্র তাঁর। হতে পারে এতে কোন হিকমাহ আছে, যেটা আমরা এখন বুঝতে পারছি না। [11] [12]

 

এবং যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন বলেঃ আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন। [13]

 

আরো পড়ুনঃ

"এই পৃথিবীতে ছোট শিশুরা কেন দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে? এর পেছনে হিকমত কী?"

 

"মানবজাতির দুঃখ-যন্ত্রণার বিষয়টির ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ কেন এগুলোতে বাধা দেন না?"

 

তথ্যসূত্রঃ

[1]  সূরা হুদ ১১:

[2]   https://en.wikipedia.org/wiki/Economic_history_of_Africa

[3]  সূরা আনফাল ৮:৫৩

[4]  https://en.wikipedia.org/wiki/Agricultural_Adjustment_Act

[5]  http://www.worldhunger.org/2015-?"world-hunger-and-poverty-facts-and-statistics/

[6]   http://www.fao.org/save-food/resources/keyfindings/en/

[7]  https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_countries_by_food_energy_intake

[8]  https://foodfirst.org/publication/world-hunger-ten-myths/

[9]  সূরা বাকারাহ্‌ ২:১৫৫

[10]  তাফসীরে মা’রিফুল কুরআন- মুফতি শাফি উসমানী, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৬৫২

[11]  https://islamqa.info/en/13610

[12]   https://islamqa.info/en/20785

[13]  সূরা ফাজ্‌র ৮৯:১৬

http://blog.omaralzabir.com/2012/09/11/why-did-allaah-do-this-part-2/