Pray for the world economy

“কুরআন ও সুন্নাহ” নাকি “কুরআন ও আহলে বাইত” ?

 

প্রশ্নঃ হাদিস শাস্ত্র যদি নির্ভরযোগ্য হতো, তাহলে এতে স্ববিরোধিতা পাওয়া যায় কেন? বিদায় হজের মতো গুরুত্বপূর্ন ভাষণটি যা হাজার হাজার মানুষ একই সময়ে শুনেছিল , সেই ভাষণ থেকে ১টি-২টি নয় বরং  ৩টি পরস্পরবিরোধী সহীহ হাদিস পাওয়া যায়!!!

 

 ১) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কিতাবকে (কুরআন) রেখে গেলাম , যদি তোমরা এটাকে  আঁকড়ে থাকো, তবে কখনো বিপথগামী হবে না।  [মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ]

 ২) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও আমার সুন্নাহকে রেখে গেলাম , যদি তোমরা এ দু’টোকে আঁকড়ে থাকো, তবে কখনো বিপথগামী হবে না।  [মুয়াত্তা]

 ৩) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও আমার পরিবারকে (আহলে বাইত) রেখে গেলাম , ... [মুসলিম , আহমাদ, দারিমি]

 

হাজার হাজার সমবেত মুসলমান শোনার পরেও একই কথার ৩টি ভার্সন পাওয়া যায় কেন? একই ঘটনার হাদিস থেকে আহলে কুরআনরা (Quranist) ১ নং ভার্সন গ্রহন করেছে, সুন্নীরা নিজেদের স্বার্থে ২ নং ভার্সন গ্রহণ করেছে আর  শিয়ারা ওদের স্বার্থ অনুযায়ী ৩ নং ভার্সন গ্রহণ করেছে। কাজেই হাদিস কি আদৌ ইসলামি শরিয়তের গ্রহণযোগ্য উৎস হতে পারে?

 

উত্তরঃ উপরে যে হাদিসগুলোর কথা বলা হল, এর সবগুলোই সহীহ হাদিস। অতএব সবগুলোই নিঃসন্দেহে সত্য। কিন্তু হাদিসগুলো দেখিয়ে যে ‘স্ববিরোধিতা’(?)র কথা বলা হল, এখানে কিছু শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। এই শুভঙ্করের ফাঁকি ব্যবহার করে প্রতি বছর মহররম মাস আসলেই শিয়াদেরকে দেখা যায় হাদিস শাস্ত্র নিয়ে কটু কথা বলতে। তাদের দাবি – সুন্নীরা নাকি ষড়যন্ত্র করে আহলে বাইতের কথা বাদ দিয়ে সুন্নাহর কথা ঢুকিয়েছে (নাউযুবিল্লাহ)। নাস্তিক-মুক্তমনা আর খ্রিষ্টান মিশনারীদেরকেও দেখা যায় শিয়াদের পালে হাওয়া দিয়ে হাদিস শাস্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে। যা হোক, এখানে শুভঙ্করের ফাঁকিটা বের করা যাক।

 

এখানে ৩টা হাদিসেরই ‘মাতান’ (মূল অর্থ) এ মিল আছে, ৩টা হাদিসেই কমনভাবে আল্লাহর কিতাব বা আল কুরআনের কথা বলা আছে। এই মিলকে কাজে লাগিয়েই ইসলামের শত্রুরা সরলপ্রাণ মুসলিমদেরকে বোঝাতে চায় যে, ৩টা হাদিসই একই ঘটনার ব্যাপারে এবং এগুলোতে পরস্পরবিরোধী তথ্য আছে। কিন্তু আসলেই কি হাদিসগুলো একই ঘটনার ব্যাপারে? এটি জানতে আমাদেরকে চলে যেতে হবে নবী(ﷺ) এর বিদায় হজের ঘটনায়।

 

এখন যে ঘটনাগুলো বর্ণনা করা হবে, তাতে কিছু তারিখ উল্লেখ থাকবে। পড়বার সময় তারিখগুলো ভালো করে খেয়াল করুন। তাহলে ইসলামের শত্রুদের শুভঙ্করের ফাঁকি ধরা সহজ হবে।

 

নবী(ﷺ) ১০ম হিজরী সনে যিলকদ মাসের ৪ দিন অবশিষ্ট থাকতে বিদায় হজের উদ্যেশ্যে মদীনা থেকে মক্কার দিকে যাত্রা করেন। দিনটি ছিল শনিবার। [1] আবার হজের সকল কার্যাবলী শেষ করে মক্কা থেকে মদীনার উদ্যেশ্যে রওনা দেন ১৪ই যিলহজ বুধবার। [2] মাঝের এই দিনগুলোতে দিনে বেশ কয়েক বার জনতার উদ্যেশ্যে ভাষণ দেন বলে সহীহ সূত্রে বর্ণিত আছে। [3]

 

যিলহজ মাসের ৮ তারিখ অর্থাৎ তারবিয়ার দিন নবী(ﷺ)  মিনায় গমন করেন এবং পরদিন সকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে গেলে দিনে বাত্বনে ওয়াদিতে গমন করেন। সেখানে জনতার উদ্যেশ্যে একটি ভাষণ প্রদান করেন। [4] সেই ভাষণে অর্থাৎ ৯ই জিলহজ আরাফার ময়দানে তিনি যা বলেছিলেন তার মধ্যে একটি কথা ছিল –

 

‏َوَقَدْ تَرَكْتُ فِيْكُمْ مَا لَنْ تَضِلِّوْا بَعْدَهُ إِنْ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ، كِتَابُ اللهِ

অর্থঃ “আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি যা শক্ত করে ধরে রাখলে তোমরা কখনোও পথহারা হবে না এবং তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (কুরআন)।” [5]

 

হজের মূল কার্যক্রম ও ঈদুল আযহা শেষ হয়ে যাবার পরে আইয়ামে তাশরিকের দিনগুলোতেও নবী(ﷺ) কিছু ভাষণ দিয়েছিলেন। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার(রা.) বলেন, আইয়ামে তাশরিকের মধ্যবর্তী (বা ২য়) দিনে অর্থাৎ ১২ই যিলহজ তারিখে মিনায় সুরা নাসর নাযিল হয়। অতঃপর তিনি ক্বাছওয়া (القَصْواء) উটনীতে সওয়ার হয়ে জামরায়ে আক্বাবায় গমন করেন। অতঃপর কংকর নিক্ষেপ শেষে ফিরে এসে জনগণের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রসিদ্ধ ভাষণটি প্রদান করেন।” [6]

১২ যিলহজ তারিখের এই ভাষণে নবী(ﷺ) যেসব কথা বলেছিলেন, তার মধ্যে ছিল –

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ فَلَنْ تَضِلُّوا أَبَدًا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ-

অর্থঃ  '‘হে জনগণ! আমি তোমাদের নিকট এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা মজবুতভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও তাঁর নবীর সুন্নাহ[7]

 

হজের সকল বিধি-বিধান পালন করার পর ১৪ই যিলহজ বুধবার মসজিদুল হারামে ফজরের সলাত আদায়ের পর রাসুল(ﷺ) তাঁর সাহাবীগণকে নিয়ে মদীনা অভিমুখে রওনা হয়ে যান। [8] পথে রাবেগের নিকটবর্তী খুম কুয়ার নিকট পোঁছালে বুরাইদা আসলামী(রা.) রাসুল(ﷺ)-এর নিকটে আলী(রা.) এর ব্যাপারে গনিমত বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু কথা বলেন।   এর প্রেক্ষিতে রাসুল(ﷺ) সাহাবীদের সামনে কিছু বক্তব্য পেশ করেন। এই বক্তব্যের মধ্যকার কিছু অংশ ছিল –

 

قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّىاللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فِينَا خَطِيبًا، بِمَاءٍ يُدْعَى خُمًّا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَوَعَظَ وَذَكَّرَ، ثُمَّ قَالَ


: " أَمَّا بَعْدُ، أَلَا أَيُّهَا النَّاسُ فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ يُوشِكُ أَنْ يَأْتِيَ رَسُولُ رَبِّي فَأُجِيبَ، وَأَنَا تَارِكٌ فِيكُمْ ثَقَلَيْنِ: أَوَّلُهُمَا كِتَابُ اللهِ فِيهِ الْهُدَى وَالنُّورُ فَخُذُوا بِكِتَابِ اللهِ، وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ " فَحَثَّعَلَى كِتَابِ اللهِ وَرَغَّبَ فِيهِ، ثُمَّ قَالَ: «وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُاللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي»

অর্থঃ  রাসুলুল্লাহ(ﷺ) একদিন মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি ‘খুম’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে বক্তৃতা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়ায-নাসিহত করলেন। অতঃপর বললেনঃ শোনো হে লোক সকল! আমি তো কেবল একজন মানুষ, অতি সত্ত্বরই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত দূত (মৃত্যুর ফেরেশতা) আসবেন, আর আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবো। আমি তোমাদের নিকট ২টি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব (কুরআন)। এতে পথনির্দেশ এবং আলোকবর্তিকা আছে। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করো, একে শক্ত করে আঁকড়ে রাখো। তারপর তিনি কুরআনের প্রতি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। এরপর বলেন, আর [অন্যটি হলো] আমার আহলে বাইত (পরিবারের লোক)। আর আমি আহলে বাইতের (অধিকারের) বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আহলে বাইতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। …” [9]

 

আহলে বাইতদের ব্যাপারে আরো কিছু হাদিসের বর্ণনা রয়েছে। সুন্নী ইমামগণ নির্দ্বিধায় এই হাদিসগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন। তবে এর একটিও সহীহ নয়। সেই হাদিসগুলোর সনদের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে এই লিঙ্কের প্রবন্ধটিতে। সহীহ নয় বলে এই হাদিসগুলো থেকে দলিল নেয়া যাবে না।

 

উপরে এ সংক্রান্ত সহীহ হাদিসগুলো বর্ণনা করা হল। ঘটনাগুলো সংঘটিত হবার তারিখও উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল(ﷺ) শুধুমাত্র আল কুরআন রেখে যাবার কথা বলেছেন যিলহজ মাসের ৯ তারিখের ভাষণে, সেখানে তিনি কুরআনের বিধান অনুসরণ করতে বলেছেন। ১২ যিলহজ তারিখের ভাষণে নবী(ﷺ) কুরআন ও সুন্নাহ এই ২টি জিনিসের কথা বলেছেন এবং এই ২টি জিনিসকে অনুসরণ করতে বলেছেন। হজের সকল কার্যাবলি শেষ করে ১৪ই যিলহজ মদীনার উদ্যেশ্যে রওনা হয়েছেন এবং পথে খুম নামক স্থানে বক্তৃতায় কুরআন ও আহলে বাইত রেখে যাবার কথা বলেছেন; কুরআন অনুসরণ করতে বলেছেন এবং আহলে বাইতের অধিকারের ব্যাপারে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

 

আমরা দেখলাম যে এগুলো আসলে ১ ঘটনা নয় বরং ৩টি পৃথক পৃথক ঘটনা। প্রত্যেকটিই সহীহ সূত্রে প্রমাণিত। ১ম ২টি ঘটনায় তিনি কুরআন এবং সুন্নাহ অনুসরণ করতে বলেছেন, ৩য় ঘটনায় কুরআনের বিধানকে অনুসরণ করতে বলেছেন এবং আহলে বাইতের অধিকারের ব্যাপারে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। অনুসরণ করবার জন্য তিনি মোট ২টি জিনিস রেখে গেছেন আর তা হল কুরআন এবং সুন্নাহ। ১ম ঘটনায় তিনি অনুসরণীয় ১টি জিনিসের (কুরআন) কথা উল্লেখ করেছেন, ২য় ঘটনায় উভয়টির (কুরআন ও সুন্নাহ) কথাই উল্লেখ করেছেন। ৩য় ঘটনায় তিনি পুনরায় কুরআনের কথা উল্লেখ করেছেন এবং আহলে বাইতের অধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ৩টি পৃথক ঘটনায় রাসুল(ﷺ) এই কথাগুলো বলেছেন। এগুলো মোটেও একই ঘটনার ৩টি আলাদা ভার্সন নয়। সুন্নীরা মোটেও ষড়যন্ত্র করে কোনো কিছু বাদ দেয়নি, এই সকল হাদিস সুন্নী ইমামদের সংকলিত হাদিস গ্রন্থেই আছে। এবং এগুলোর মধ্যে কোনো পরস্পরবিরোধিতা নেই। অতএব যারা পরস্পরবিরোধিতা(!) ও ‘ষড়যন্ত্রের’(!) ভুয়া অভিযোগ তুলে হাদিসের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল, তাদের প্রচেষ্টা ব্যার্থ হল।

 

“তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।[10]

 

“…রাসুল [মুহাম্মাদ()] তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাকো। [11]

 

 

তথ্যসূত্রঃ

[1]. ■ ‘ফাতহুল বারী’ – ইবন হাজার আসকালানী(র.), ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১০৪;

‘আর রাহিকুল মাখতুম’- শফিউর রহমান মুবারকপুরী(র.) [তাওহীদ পাবলিকেশন্স], পৃষ্ঠা ৫২১

[2]. ■ ‘যাদুল মাআদ’- ইবনুল কাইয়িম জাওযিয়্যাহ(র.) ২/২৭৫

‘সীরাতুর রাসূল(ছাঃ)’-মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ৭২৫

[3].  ‘সীরাতুর রাসূল(ছাঃ)’ -মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ৭০২-৭২৫ দ্রষ্টব্য; ভাষণগুলো এখানে পাওয়া যাবে।

[4]. ‘আর রাহিকুল মাখতুম’- শফিউর রহমান মুবারকপুরী(র.) [তাওহীদ পাবলিকেশন্স], পৃষ্ঠা ৫২২

[5]. সহীহ মুসলিম, নবীর(ﷺ) হজ অধ্যায়, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯৭

[6]. ■ বায়হাকি ৫/১৫২, হা/৯৪৬৪; আবু দাঊদ হা/১৯৫২ ‘মানাসিক’ অধ্যায় ৭১ অনুচ্ছেদ; আলবানী, সনদ সহীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ হা/১৯৫২-এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

‘সীরাতুর রাসূল(ছাঃ)’-মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ৭২২

[7]. ■ হাকিম হা/৩১৮,সহীহ

‘সীরাতুর রাসূল(ছাঃ)’-মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ৭২৩-৭২৪

[8]. ■ যাদুল মা‘আদ ২/২৭৫

‘সীরাতুর রাসূল(ছাঃ)’-মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, পৃষ্ঠা ৭২৫

[9]. সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ২৪০৮

[10]. আল কুরআন, আহযাব ৩৩ : ২১

[11]. আল কুরআন, হাশর ৫৯ : ৭