Pray for the world economy

পৃথিবীতে ছোট শিশুরা কেন দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে?

 

➫ মূলঃ শায়খ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ

➫ অনুবাদঃ মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনার

 

অনুবাদকের ভূমিকাঃ পৃথিবীতে মানুষের জীবনের দুঃখ-কষ্টের বিষয়টি অনেকেই হয়তো মেনে নিতে পারেন। কিন্তু কারো কারো মনে প্রশ্ন জাগে – নিষ্পাপ শিশুরা কেন দুঃখ-কষ্ট পায়? তারা তো কোনো অপরাধ করেনি। মূলত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার প্রজ্ঞা সম্পর্কে অজ্ঞতার জন্য এ ব্যাপারে অনেক সময় মানুষ সংশয়ে পতিত হয়।  দ্বীনের ইলমের আলোয় মানুষের মনের অজ্ঞতার আঁধার যখন কেটে যায়, সংশয়েরও আর কোনো স্থান থাকে না সেখানে। ঈমানের আলোয় ভরে যায় হৃদয়-ভুবন।

 

ফতোয়া নং ২০৭৮৫: এই পৃথিবীতে ছোট শিশুরা কেন দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে? এর পেছনে প্রজ্ঞা কী?

 

প্রশ্নঃ

আমি আমার একজন সহকর্মীকে ইসলামের দিকে ও আল্লাহর প্রতি ঈমানের দিকে দাওয়াত দেবার চেষ্টা করেছি। সে আমাকে বলেছে যে, আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসের ব্যাপারে তার জন্য মূল বাধা হচ্ছে এই দুর্বোধ্য প্রশ্নটিঃ পৃথিবীতে সম্পূর্ণ নিরাপরাধ ছোট বাচ্চারা কেন দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে? সে বুঝতে পারছে না একজন স্রষ্টা যদি থেকেই থাকেন তাহলে তিনি কী করে এসব হতে দেন।

কিছুটা চিন্তা করে আমি এর একটা উত্তর পেয়েছি। কিন্তু তাকে উত্তর দেবার পূর্বে আমি আপনাদের মন্তব্য জানতে চাই। সেই উত্তরটি আপাতত আপনাদেরকে বলতে চাচ্ছি না কারণ এর দ্বারা আপনাদের চিন্তা (তথা উত্তর) প্রভাবিত হয়ে যেতে পারে।

 

উত্তরঃ

আলহামদুলিল্লাহ্‌।

 

সকলের এটি জেনে রাখা উচিত যে আল্লাহ আল্লাহ তা’আলা মহাপ্রজ্ঞাবান। তাঁর সকল আদেশ-নিষেধ এবং তাঁর সকল নির্ধারণের মাঝে সুগভীর প্রজ্ঞা রয়েছে। তাঁর কিছু বান্দা হয়তো সেসব হিকমত অনুধাবন করতে পারে। অথবা কারো কারো নিকট পরীক্ষা হিসেবে এই হিকমত গুপ্ত থাকে। [1]

 

সাধারণ ক্ষেত্রে তিনি যা নির্ধারণ করেন এর পেছনে তেমনি সাধারণ কোনো কারণ থাকে। যেমন, নবী(ﷺ)কে প্রেরণ করা। আল্লাহ আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁকে বিশ্বজগতের প্রতি রহমত রূপে প্রেরণ করেছেন। অনুরূপভাবে তিনি জিন ও মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন যেন তারা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করে।

 

ইবন তাইমিয়া(র.) বলেছেন,

এর উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি আল্লাহর প্রতিটি কর্মের পেছনেই হিকমত রয়েছে। সাধারণভাবে এই কথাটিই (বিষয়টি বুঝবার জন্য) যথেষ্ট, যদিও আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত জ্ঞান না রেখে থাকি। এ ব্যাপারে আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা আছে ঠিক যেমন তাঁর সত্ত্বার প্রকৃতির ব্যাপারে আমাদের জ্ঞানের স্বল্পতা আছে। এটি প্রমাণিত যে আল্লাহর গুণাবলি নিখুঁত কিন্তু আমরা এগুলোর ধরণ সম্পর্কে জানি না। কাজেই আল্লাহর যে প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের সম্যক ধারণা নেই, আমরা সে বিষয়ে মিথ্যারোপ করবো না। আল্লাহ তা’আলার গুণাবলির যে পূর্ণতা সম্পর্কে আমাদের গভীর জ্ঞান নেই, আমরা তা অস্বীকার করবো না।

 

তাঁর গুণাবলির পূর্ণতা – আমরা জানি যে তিনি যে কর্ম সম্পাদন করেন বা তিনি যে আদেশ করেন এ ব্যাপারে তিনি পূর্ণরূপে প্রজ্ঞাবান। কোনো কোনো জায়গায় হয়তো আমরা তাঁর হিকমত বুঝতে পারি না। কিন্তু আল্লাহর মহাপ্রজ্ঞার যে মূল বিষয়টি আমরা জানি তা মোটেও এর দ্বারা নাকচ হয় না। কাজেই আল্লাহর হিকমতের সব দিক সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জ্ঞান নেই বলে তাঁর হিকমতের যে দিকগুলো আমরা জানি, সেগুলোও নাকচ করে ফেলা মোটেই উচিত নয়।

 

গণিতবিদ, চিকিৎসক এবং ব্যাকরণবিদদের প্রতিভা সম্পর্কে জানেন কিন্তু এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন না – এমন কারো পক্ষে গণিতবিদ, চিকিৎসক এবং ব্যাকরণবিদদের কটাক্ষ করা সাজে না। কারণ তিনি তো ভালো করে উপলব্ধিই করতে পারেন না যে গণিতবিদ, চিকিৎসক এবং ব্যাকরণবিদরা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের বক্তব্যগুলো দিচ্ছেন। একজন সাধারণ মানুষ গণিত, চিকিৎসাবিদ্যা কিংবা ব্যাকরণ সম্পর্কে যতোটুকু বুঝতে পারেন, পারেন, আল্লাহ সম্পর্কে অথবা সৃষ্টিকূলের প্রতি তাঁর হিকমত সম্পর্কে মানব জাতি এর চেয়েও অনেক কম জ্ঞান রাখে। কাজেই আল্লাহর হিকমতের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা অনেক বড় অজ্ঞতার পরিচায়ক। যে এমনটি করে সে তো তার থেকেও বড় অজ্ঞ যে গণিতবিদ, চিকিৎসক এবং ব্যাকরণবিদদেরকে কটাক্ষ করে অথচ এই বিষয়গুলো সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই রাখে না।

[মাজমু আল ফাতাওয়া ৬/১২৮]

 

আল্লাহ ছোট শিশুদেরকে যে দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে দিচ্ছেন, নিঃসন্দেহে এর পেছনে অনেক বড় হিকমত রয়েছে। [2] এই হিকমত হয়তো কারো কারো নজরে আসে না। এ কারণেই তারা আল্লাহর এ নির্ধারণের ব্যাপারে অভিযোগ তোলে। এর মাধ্যমে শয়তান তার উপর আধিপত্য বিস্তার করে এবং সত্য ও হেদায়েত থেকে তাকে দূরে রাখে।

 

ছোট শিশুদের দুঃখ-কষ্টের মধ্যে আল্লাহ তা’আলার যে হিকমত রয়েছেঃ

 

১। (শিশুর কান্না) দ্বারা বোঝা যায় যে সে অসুস্থ বা যে কোনো যন্ত্রণার মধ্যে আছে। এমনটি না হলে বোঝা যেতো না যে শিশুটি কোন অসুস্থতায় ভুগছে।

২। শিশু কষ্ট পেয়ে যে কান্না করে, এই কান্না তার শরীরের জন্য উপকার সাধন করে।

৩। শিক্ষা গ্রহণ। শিশুটির পরিবার হয়তো নানা হারাম কাজে লিপ্ত ছিলো অথবা ওয়াজিব দায়িত্ব পালনে অবহেলা করতো। কিন্তু শিশুটির কষ্ট দেখলে তারা হয়তো অতিসত্ত্বর বিভিন্ন হারাম কাজ যেমনঃ সুদ খাওয়া, ব্যাভিচার, সলাত পরিত্যাগ, ধুমপান ইত্যাদি ত্যাগ করে। বিশেষ করে উপরে উল্লেখিত কোনো হারাম কর্ম যদি শিশুটির অসুখের জন্য দায়ী হয়।

৪।  আখিরাতের ব্যাপারে চিন্তা নিয়ে আসা। [3] কারণ জান্নাত ব্যতিত কোথাও প্রকৃত সুখ বা শান্তি নেই। সেখানে কোন দুঃখ-যন্ত্রণা নেই। সেখানে আছে শুধু সুস্বাস্থ্য, সুন্দর জীবন ও সুখ। জাহান্নামের ব্যাপারে চিন্তা নিয়ে আসা। কারণ সেটি হচ্ছে চিরকালীন শাস্তি এবং অশেষ যন্ত্রণার স্থায়ী আবাস। কাজেই এই জিনিস স্মরণে এলে যে কেউ এমন কাজ করতে চাবে যা তাকে জান্নাতের কাছে নিয়ে যাবে ও জাহান্নাম থেকে দূরে নিয়ে যাবে।

 

ইবন কাইয়িম জাওযিয়্যাহ(র.) বলেন,

শিশুরা যেন ঘন ঘন কান্না করে, এর মাঝে আল্লাহ তা’আলার হিকমতের দিকটি অনুধাবনের চেষ্টা করুন। এবং কান্নার দ্বারা তাদের যে উপকার হয় সেটিও ভেবে দেখুন। চিকিৎসক এবং প্রকৃতিবিজ্ঞানীরা এর উপকারী  দিকগুলো চিহ্নিত করেছেন যার দ্বারা এর পেছনের হিকমতগুলো অনুধাবন করা যায়। তাঁরা বলেন, শিশুদের মস্তিষ্কে এক ধরণের আর্দ্রতা থাকে, যা তাদের মস্তিষ্কে থেকে গেলে তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়। কান্নার দ্বারা এই আর্দ্রতা বেরিয়ে আসেযার ফলে তাদের মস্তিষ্ককে সবল ও সতেজ হয়। এ ছাড়া চিৎকার ও কান্নার দ্বারা তাদের শ্বাসনালী প্রসারিত ও সবল হয়। তাদের স্নায়ুও এর দ্বারা শক্তিশালী হয়। [4] আমরা শিশুদের থেকে যে চিৎকার ও কান্না শুনে থাকি, অনেক উপায়েই এগুলো তাদের জন্য উপকারী। তাৎক্ষণিক কষ্টের ফলে শিশুর কান্নায় এই পরিমাণ হিকমত থাকে, যা হয়তো কখনো আপনার কল্পনাতেও আসেনি। পৃথিবীর শিশুদের অন্য সব দুঃখ-যন্ত্রণা, এর কারণ এবং শুভ পরিনতির ব্যাপারটিও এমনএর পেছনে অনেক বড় হিকমত লুকিয়ে আছে যা হয়তো অধিকাংশ মানুষের  চোখের আঁড়ালে রয়েছে। আর তারা এই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে আছে।

 [মিফতাহ দার আস সা’আদাহ ২/২২৮]

 

তিনি আরো বলেনঃ

 

এই দুঃখ-যন্ত্রণাগুলো মানুষের বেড়ে ওঠার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা একটা উপাদান। মানুষ কিংবা পশু-পাখি কেউই এ থেকে মুক্ত নয়একজন মানুষের যদি কোনো দুঃখ-যন্ত্রণা না থাকতো, সে তাহলে মানুষই হতে পারতো না ফেরেশতা অথবা অন্য ধরণের কোনো জীবে পরিনত হতো শিশুদের কষ্টগুলো বড়দের কষ্টের চেয়ে কঠিন কিছু নয় কিন্তু বড়রা দুঃখ-কষ্টের সাথে এমনভাবে অভ্যস্ত হয়ে যান যে এগুলো তাদের কাছে আর তেমন বড় কিছু না একটি ছোট শিশুর কষ্টের সাথে একজন বুঝদার বড় মানুষের কষ্টের কী বিশাল তফাৎ!

 

দুঃখ-যন্ত্রনাগুলো মানুষ অথবা অন্য কোনো সৃষ্ট জীবের প্রকৃতির অংশ। একজন মানুষকে যদি এভাবে সৃষ্টি না করা হতো, সে অন্য ধরণের এক জীবে পরিণত হতো। আপনি কি মনে করেন শুধু শিশুরাই ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঠাণ্ডা অথবা ক্লান্তিতে কষ্ট পায়,  আর বড়দের এগুলো দ্বারা পরীক্ষা নেয়া হয় না? মানুষ, পশু সবাইকে এভাবেই সৃষ্টি করা হয়েছে যে অসুস্থতা ছাড়াও অন্যান্য কষ্ট, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঠাণ্ডা, উত্তাপ এই সব কিছুকে অনুভব করবে

 

তাদের বক্তব্যঃ কেউ যদি এমন প্রশ্ন করে – আল্লাহ সবাইকে কেন এভাবেই সৃষ্টি করলেন? কেন তিনি এমন সৃষ্টিজগত তৈরি করলেন না যেখানে দুঃখ-যন্ত্রণা নেই?

 

এই প্রশ্নটির মাঝেই ত্রুটি আছে কারণ আল্লাহ তা’আলা এ পরীক্ষার জগতে সবাইকে সৃষ্টি করেছেন দুর্বল উপাদান দিয়ে [5] কাজেই সবাই অসুখ-বিসুখ ও নানা যন্ত্রণা ভোগ করে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এমন উপায়ে যে সে বিভিন্ন রকমের দুঃখ-যন্ত্রণা থেকে সুরক্ষিত নয় ...

 

পৃথিবীর জীবনে সুখ আর দুঃখ যে এভাবে পাশাপাশি থাকে – এটিই আখিরাতের অস্তিত্বের পক্ষে একটি প্রমাণ আল্লাহ স্বীয় হিকমতে দুই ধরণের নিবাসকে মানুষের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন। একটি নিবাস হচ্ছে পরিপূর্ণ আনন্দের নিবাস, যেখানে কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। অন্য নিবাসটি দুঃখ-যন্ত্রণায় ভরা যেখানে কোনো সুখ-শান্তি নেই। এদের প্রথমটি জান্নাত, অন্যটি জাহান্নাম।

[মিফতাহ দার আস সা’আদাহ ২/২৩০, ২৩১]

 

এবং আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন।

 

মূল ফতোয়ার লিঙ্কঃ

 আরবিঃ  https://islamqa.info/ar/20785/

 ইংরেজিঃ  https://islamqa.info/en/20785/

 

আরো পড়ুনঃ

"আল্লাহ্‌ যদি সকল প্রাণীর রিযিকের দায়িত্ব গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে আফ্রিকার লাখ লাখ মানুষকে অনাহারে রাখার পেছনে যুক্তি কি?"

 

"মানবজাতির দুঃখ-যন্ত্রণার বিষয়টির ব্যাখ্যাঃ আল্লাহ কেন এগুলোতে বাধা দেন না?"

 

 

অনুবাদকের টিকা

[1] “…কিন্তু তোমরা যা অপছন্দ কর হতে পারে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালবাস হতে পারে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ্‌ জানেন তোমরা জান না।”

[আল কুরআন, বাকারাহ ২ : ২১৬]

[2] ‘‘যে ব্যক্তির তিনটি নাবালক সন্তান মারা যাবে, তারা সে ব্যক্তির জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে নিরাপদ দূর্গে পরিণত হবে। (একথা শুনে) আবু যর(রা.) বললেন: আমার দু’টি সন্তান মারা গেছে? রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেন: দু’টি সন্তান মারা গেলেও তাই হবে। (উপস্থিত জনগণের মধ্য থেকে) উবাই ইবনে কা‘ব(রা.) বললেনঃ আমার একটি সন্তান মারা গেছে? রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেন: একটি সন্তান মারা গেলেও তাই হবে, তবে এ সুযোগ কেবল তারাই পাবে যারা সন্তান মারা যাওয়ার প্রাক্কালে ধৈর্য ধারণ করেছে’’।

[তিরমিযী,  জানাইয অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: যার এক সন্তান মারা গেছে তার কী ছাওয়াব রয়েছে?, ৩/৩৬৬]

https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=151&section=2214

নবী(ﷺ) বলেন, “সেই সত্তার শপথ; যার হাতে আমার প্রাণ আছে! গভচ্যুত (মৃত) শিশু তার নাভির নাড়ী ধরে নিজের মাতাকে বেহেস্তের দিকে টেনে নিয়ে যাবে---যদি ঐ মা (তার গর্ভপাত হওয়ার সময়) ঐ সওয়াবের আশা রাখে তবে।” (সহীহ ইবনে মাজাহ ১৩০৫নং)।

অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী, সে তার পিতা-মাতার কাপড় ধরে জান্নাতে নিয়ে যাবে। ( সিঃ সহীহাহ ৪৩২নং)

তিনি আরো বলেছেন, “যে মহিলার তিনটি শিশু মারা যাবে, সেই মহিলার জন্য ঐ শিশুরা জাহান্নাম থেকে পর্দা স্বরূপ হবে।” এক মহিলা বলল, আর দুটি মারা গেলে?” তিনি বললেন, “দুটি মারা গেলেও। (তারা তার মায়ের জন্য জাহান্নাম থেকে পর্দা হবে।)” (বুখারী ১০১ নং, মুসলিম ২৬৩৩ নং)

বলাই বাহুল্য যে, যে অপরের জন্য জাহান্নামের পর্দা হবে, সে কি জাহান্নামে যাবে? বরং উভয়েই জান্নাতে যাবে। আর এ কথা স্পষ্টভাবে একাধিক হাদীসেও এসেছে যে, মুমিনদের শিশু-সন্তানরাও জান্নাতে যাবে। (দ্রঃ ফাতহুল বারী ৩/২৪৫)।

https://hadithbd.com/books/link/?id=12187

[3] বাস্তব জীবনে এমন উদাহরণ অনেক দেখা যায় যে শিশু সন্তানের রোগ-ভোগ অথবা মৃত্যুতে অনেক বাবা-মা পাপের পথ পরিত্যাগ করে দ্বীনের পথে এসেছেন। যেমনঃ পাকিস্তানের প্রখ্যাত ক্রিকেটার সাইদ আনোয়ার শিশুকন্যার মৃত্যুর পরে নানা হারাম কর্ম ত্যাগ করে ধার্মিক জীবন-যাপন শুরু করেন। ধর্মপ্রচারে নিজেকে জড়িত করেন।

"মেয়ের মৃত্যুতে পাল্টে যায় সাঈদের জীবন, ক্রিকেট ছেড়ে হয়ে উঠেন ধর্মপ্রচারক" (যুগান্তর, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯)

https://is.gd/22XCec

Saeed Anwar: ‘It Is All From Allah’ (Arab News 16-01-2003)

https://www.arabnews.com/node/227544

[4] ইবন কাইয়িম(র.) তাঁর সময়কার চিকিৎসকদের ধারণাগুলো এখানে উল্লেখ করেছেন। এর সকল তথ্য হয়তো আধুনিককালের চিকিৎসকদের ধারণার সঙ্গে নাও মিলতে পারে। তবে শিশুদের কান্নার গুরুত্বের ব্যাপারটি সব সময়ের জন্যই সত্য। আধুনিককালেও চিকিৎসকগণ শিশুর কান্নাকে তার যোগাযোগের জন্য এবং বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেন।

■"Crying : importance for psychosocial development in children _ Encyclopedia on Early Childhood Development"

http://www.child-encyclopedia.com/crying-behaviour/according-experts/crying-behaviour-and-its-importance-psychosocial-development

■"5 reasons why crying is actually good for your baby! _ TheHealthSite.com"

https://www.thehealthsite.com/pregnancy/5-reasons-why-crying-is-actually-good-for-your-baby-d114-114062/

■ "Why Do Babies Cry & Whether It Is Good or Bad"

https://parenting.firstcry.com/articles/is-crying-good-for-babies/

■"New study says that it’s okay to let babies cry at night - Harvard Health Blog - Harvard Health Publishing"

https://www.health.harvard.edu/blog/new-study-says-okay-let-babies-cry-night-201605319774

[5] "...আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলরূপে।" [আল কুরআন, নিসা ৪ : ২৮]