Pray for the world economy

শরিয়া আইনে ধর্ষকের বিচার ও সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ও জবাব

 

সাধারণ ধর্ষণ ও জিনার ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়া আইনে হদ বা নির্ধারিত শাস্তি হচ্ছেঃ অবিবাহিতের ক্ষেত্রে  ১০০ বেত্রাঘাত এবং বিবাহিতের ক্ষেত্রে রজম (পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড)। এই হদ প্রয়োগের জন্য ৪ জন সাক্ষী প্রয়োজন। আর এটি যদি অস্ত্র দ্বারা কোনো নারীকে হুমকি দিয়ে করা হয় অথবা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া বা অপহরণ করা হয়, তাহলে সেটি শরিয়া আইনে 'হিরাবাহ' / ‘হারাবাহ’ এর আওতায় পড়ে। এক্ষেত্রে শাস্তি হচ্ছেঃ সাধারণ মৃত্যুদণ্ড, অথবা শুলে চড়ানো (যার ফলেও মৃত্যু হয়), অথবা বিপরীত দিক থেকে হাত-পা কর্তন অথবা দেশান্তর (বন্দীত্ব)। অপরাধের ভয়াবহতা বিবেচনা করে এই ৪টি থেকে অপরাধীকে যে কোনো শাস্তি দেয়া হয়। ‘হিরাবাহ’ এর ক্ষেত্রে অপরাধী ধর্ষণ করতে সমর্থ হোক বা না হোক - সে হদ শাস্তির উপযুক্ত বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে ২ জন সাক্ষী থাকলেই হদ কার্যকর করা যায়। কোনো নারীকে অপহরণ করা হলেই অপরাধী ‘হিরাবাহ’ এর শাস্তির উপযুক্ত হয়। সেই সাথে ধর্ষণ করলে সে হিরাবাহ + জিনা উভয় অপরাধেই অপরাধী সাব্যস্ত হয়। কেউ যদি নিজে থেকে ধর্ষণের অপরাধ স্বীকার করে, তাহলে আর কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই তার উপর হদ প্রয়োগ করা যায়। [1]

 

আমরা লক্ষ করলাম, ধর্ষণের অপরাধে শরিয়া নির্ধারিত শাস্তি (হদ) প্রয়োগের জন্য সাক্ষী আবশ্যক। সাধারণ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৪ জন অথবা ‘হিরাবাহ’ শ্রেণীর ধর্ষণের অপরাধের ক্ষেত্রে হদ প্রয়োগের জন্য ২ জন সাক্ষী প্রয়োজন। সাক্ষী না থাকলে হদ প্রয়োগ করা যায় না। ইসলামের সমালোচকরা এই জায়গাটিতে কিছু প্রশ্ন তোলেঃ

 

১। কেউ কি লোক দেখিয়ে ধর্ষণ করে? তাহলে ৪ জন সাক্ষী পাওয়া যাবে কী করে?

২। যদি সাক্ষী পাওয়া না যায়, তাহলে কি ধর্ষক বেকসুর খালাস পেয়ে যাবে? ধর্ষকের কোনো শাস্তি হবে না? সাক্ষী ব্যতিত মেডিকেল টেস্ট বা অন্য কোনো প্রমাণের কি কোনো মূল্য শরিয়া আইনে নেই?

৩। তাযির শাস্তি অত্যন্ত লঘু শাস্তি। এই শাস্তি কী করে ধর্ষণের মতো অপরাধের জন্য ন্যায়বিচার হয়?

৪। ধর্ষিতা যদি সাক্ষী জোগাড় করতে না পারে, তাহলে কি উল্টো তাকেই শাস্তি দেয়া হবে?

 

আমরা নাস্তিক-মুক্তমনাদের এসব আপত্তির জবাবে যা বলবোঃ

 

প্রথমতঃ

সাধারণ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৪ জন সাক্ষী লাগে। অর্থাৎ অপহরণ না করে বা অস্ত্র না দেখিয়ে শুধুমাত্র বলপ্রয়োগে ধর্ষণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এভাবে ধর্ষণ হয় না। তবে প্রাচীনকালে এভাবে ধর্ষণ হবার উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন, জামি তিরমিযিতেই একটি হাদিস দেখা যায় যে একজন নারীকে মসজিদে যাবার সময়ে রাস্তার মধ্যেই ধর্ষণ করা হয়েছিলো। তাকে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেয়া হয়নি, অপহরণও করা হয়নি। [2] এই ক্ষেত্রগুলোতে হয় ৪ জন সাক্ষী লাগে, অথবা ধর্ষকের নিজ মুখে স্বীকার করতে হয়। এসব ক্ষেত্রে ৪ জন সাক্ষী পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ হয় অস্ত্রের মুখে বা অপহরণ করে। এক্ষেত্রে তা হিরাবাহ এর আওতায় পড়ে। এক্ষেত্রে ২ জন সাক্ষী যথেষ্ট। কোনো নারীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হলে কিংবা অস্ত্র-শস্ত্র  দিয়ে হুমকি দেয়া হলে এর জন্য ২ জন সাক্ষী পাওয়া অসম্ভব কিছুই না।

 

দ্বিতীয়তঃ

এরপরেও যদি ধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যুনতম সাক্ষী পাওয়া না যায় কিন্তু অন্যান্য কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কি শরিয়া আইনে ধর্ষকেরা বেকসুর খালাস পেয়ে যায়? এর উত্তরে তাফসির জালালাঈনে বলা হয়েছেঃ

 

“হুদুদের [‘হদ’ এর বহুবচন] শাস্তি সাধারণত কঠোর। এগুলো প্রয়োগ করার আইনও নির্মম। অর্থাৎ কোনো অবস্থাতেই তা পরিবর্তন ও লঘু করা যায় না এবং কেউ ক্ষমা করারও অধিকারী নয়। কিন্তু সাথে সাথে সামগ্রিক ব্যাপারে সমতা বিধানের উদ্দেশ্যে অপরাধ এবং অপরাধ প্রমাণের শর্তাবলিও অত্যন্ত কঠোর করা হয়েছে। নির্ধারিত শর্তাবলির মধ্য থেকে যদি কোনো একটি শর্তও অনুপস্থিত থাকে, তবে হদ অপ্রযোজ্য হয়ে যায়। অর্থাৎ অপরাধ প্রমাণে সামান্যতম সন্দেহ পাওয়া  গেলেও হদ প্রয়োগ করা যায় না। ... এক্ষেত্রে বুঝে নেওয়া উচিত যে, কোনো সন্দেহ অথবা কোনো শর্তের অনুপস্থিতির কারণে হদ অপ্রযোজ্য হয়ে পড়ার অর্থ এই নয় যে, অপরাধী অবাধ ছাড়পত্র পেয়ে যাবে, যার ফলে তার অপরাধ প্রবণতা আরো বেড়ে যাবে; বরং বিচারক অবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে তাকে দণ্ডগত [তাযির] শাস্তি দেবেন। শরিয়তের দণ্ডগত শাস্তিসমূহ সাধারণত দৈহিক ও শারীরিক। এগুলো দৃষ্টান্তমূলক হওয়ার কারণে অপরাধ দমনে খুবই কার্যকর। ধরুন, ব্যভিচার প্রমাণে মাত্র তিন জন সাক্ষী পাওয়া গেল এবং তারা সবাই নির্ভরযোগ্য ও মিথ্যার সন্দেহ থেকে মুক্ত। কিন্তু আইনানুযায়ী চতুর্থ সাক্ষী না থাকার কারণে হদ জারি করা যাবে না। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, অপরাধী অবধি ছুটি অথবা বেসুর খালাস পেয়ে যাবে, বরং বিচারক তাকে অন্য কোনো উপযুক্ত দণ্ড প্রদান করবেন, যা বেত্রাঘাতের আকারে হবে।[3]

 

 

আমরা দেখলাম যে শরিয়ায় নির্ধারিত সাক্ষী না পাওয়া গেলেও ইসলামী আদালতে ধর্ষণের অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায় না। ডিএনএ টেস্ট বা অন্য কোনো আধুনিক পদ্ধতিতে ধর্ষককে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করা গেলে হদ প্রয়োগ করা না গেলেও উপযুক্ত তাযির বা দণ্ডগত শাস্তি প্রয়োগ করা যায়। ইসলামিক ফিকহ কাউন্সিল অব মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের বক্তব্য অনুযায়ী অপরাধী চিহ্নিতকরণে ডিএনএ টেস্ট নাজায়েজ কিছু নয়। এর উপর ভিত্তি করে তাযির শাস্তি প্রয়োগ করা যায়। [4] সাক্ষী পাওয়া না গেলে শায়খ আসিম আল হাকিম (হাফি.) ফরেনসিক টেস্ট বা অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করে ধর্ষককে শণাক্ত করবার কথা উল্লেখ করেছেন। [4.5]

 

 

তৃতীয়তঃ

তাযির শাস্তি সম্পর্কে ইসলামবিরোধীরা নানা রকমের মন্তব্য করে। তাদের অনেককে বলতে দেখা যায় এটা নাকি খুব লঘু শাস্তি বা নামমাত্র শাস্তি যার দ্বারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয় না! আমরা এখন যাচাই করে দেখবো তাদের দাবি কতোটুকু সঠিক।

 

তাযির শাস্তির প্রকৃতি সম্পর্কে ইমাম নববী(র.) এর মিনহাজুত ত্বালিবীন গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে,

 

“যেসব অপরাধের শাস্তির ক্ষেত্রে  হদ প্রয়োগ করা যায় না, এবং যেগুলোর কাফফারা নেই, সেসব ক্ষেত্রে (ইসলামী) আদালত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে বন্দী করে রাখা, কশাঘাত, চপেটাঘাত অথবা কঠোর তিরস্কার করে শাস্তি দেবেএই শাস্তির প্রকৃতি ও কঠোরতা শাসক, তার সহকারী অথবা কাজির এখতিয়ারে।” [5]

 

কেউ কেউ এখানে দাবি করে হাদিসে নাকি ১০ বেত্রাঘাতের চেয়ে বেশি তাযির শাস্তি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তারা এই হাদিসটি দেখায়ঃ

 

عَنْ أَبِي بُرْدَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ لاَ يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلاَّ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ ‏"‏‏.

অর্থঃ আবু বুরদা(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী()বলতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদ সমুহের কোনো হদ ব্যতিত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না। [6]

 

 এ প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল(র.) থেকে একটি মত আছে যে ১০ বেত্রাঘাতের বেশি বেত্রাঘাত তাযির হিসাবে করা যাবে না। কিন্তু এর বিপরীতে অন্য ৩ ইমাম থেকে অভিমত আছে যে তাযির শাস্তি হিসাবে এর থেকেও বেশি বেত্রাঘাত করা যাবে। এমনকি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল(র.) থেকেও তাযির হিসাবে ১০ বেত্রাঘাতের বেশি বেত্রাঘাতের আরেকটি অভিমত পাওয়া যায়। তাঁরা কি এই ক্ষেত্রে উপরের হাদিসের বিপক্ষে গিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)? মোটেও না। আলোচ্য হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবন হাজার আসকালানী(র.) তাঁর সুবিখ্যাত শারহ গ্রন্থ ফাতহুল বারীতে উল্লেখ করেছেন,

 

أن المراد بالحدود هنا الحقوق التي هي أوامر الله ونواهيه ، وهي المراد بقوله : ومن يتعد حدود الله فأولئك هم الظالمون ، وفي أخرى : فقد ظلم نفسه ، وقال : تلك حدود الله فلا تقربوها ، وقال : ومن يعص الله ورسوله ويتعد حدوده يدخله نارا ، قال : فلا يزاد على العشر في التأديبات التي لا تتعلق بمعصية كتأديب الأب ولده الصغير

“...এখানে "হুদুদ" শব্দ দ্বারা  উদ্যেশ্য হলো আল্লাহর ঐ সমস্ত হক যা আদেশ ও নিষেধের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন [আল্লাহর] এই বাণীর উদ্যেশ্যঃ “আর যে আল্লাহর সীমারেখাসমূহ (হুদুদ) লঙ্ঘন করে, বস্তুত তারাই যালিম। (বাকারাহ ২২৯)” এবং এই বাণীতেওঃ “যে আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমারেখাসমূহ (হুদুদ) অতিক্রম করে সে অবশ্যই তার নিজের ওপর যুলম করে (সুরা তালাক্ব ১)”। এবং এই বাণীতেওঃ “এগুলো আল্লাহর সীমারেখা (হুদুদ) কাজেই এগুলোর নিকটবর্তী হয়ে না (সুরা বাকারাহ ১৮৭)”এবং এই বাণীতেওঃ “আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা (হুদুদ)  লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন (সুরা নিসা ১৪)”।

এবং তিনি বলেন, দশের বেশি বেত্রাঘাত করা যাবে না ঐ সমস্ত শাস্তিদানের ক্ষেত্রে যা গুনাহের সাথে সম্পৃক্ত না। যেমন পিতা তার ছোট শিশুকে শিক্ষাদানের উদ্যেশ্যে শাস্তি দেয়া।” [7]

 

অর্থাৎ এ থেকে বোঝা গেলো আলোচ্য হাদিসে “حُدُودِ اللَّهِ” (হুদুদিল্লাহ) দ্বারা আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের সীমা লঙ্ঘনের অপরাধ অর্থাৎ অনেক বড় ধরণের অপরাধ ব্যতিত অন্য অপরাধে ১০ বেত্রাঘাতের বেশি শাস্তি দিতে নিষেধ করা হচ্ছে। ‘হদ’ (শাব্দিক অর্থ সীমারেখা, বহুবচন হুদুদ) শব্দ দ্বারা শরিয়া আইনে নির্ধারিত শাস্তিকে যেমন বোঝানো হয়, তেমনি আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত আদেশ-নিষেধের সীমারেখাকেও বোঝানো হয় (হুদুদিল্লাহ)। আলোচ্য হাদিসের উদ্যেশ্য হচ্ছে এই ২য়টি। আল কুরআনের অনেকগুলো আয়াতের সাহায্যে ফাতহুল বারীতে আলোচ্য হাদিসের এই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর দ্বারা এটা বোঝানো হয়নি যে শরিয়া নির্ধারিত কিছু অপরাধের হদ শাস্তি বাদে ১০ বেত্রাঘাতের বেশি তাযির দেয়া যাবে না। উম্মাহর অধিকাংশ উলামার ব্যাখ্যা এটিই, এটিই ছিলো সাহাবীদের বুঝ। ফাতহুল বারীতে এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বিস্তারিত আলোচনায় এটি উল্লেখ করা হয়েছে যে এ হাদিসের দ্বারা তাযির শাস্তির সীমা ১০ বেত্রাঘাতের বেশি দেয়া নিষিদ্ধ হয় না। [8]

 

তাযির শাস্তি সম্পর্কে ইমাম ইবনু কুদামাহ(র.) বলেছেন,

 

“ইমাম আহমাদ(র.) থেকে তাযির শাস্তির সীমা সম্পর্কে একাধিক অভিমত পাওয়া যায়। তাঁর থেকে বর্ণিত আছে, এটি ১০ বেত্রাঘাতের চেয়ে বেশি হবে না। ইমাম আহমাদ(র.) থেকে বিভিন্ন প্রসঙ্গে এই বর্ণনাটি পাওয়া যায়। এটি ইসহাক(র.) এরও অভিমত। এর দলিল হচ্ছে এই হাদিসঃ আবু বুরদা(রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী(ﷺ)বলতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদ সমুহের কোনো হদ ব্যতিত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না। ইমাম আহমাদ(র.) থেকে ২য় আরেকটি বর্ণনা পাওয়া যায় আর তা হলো, (তাযিরের বেত্রাঘাত) ন্যুনতম হদ এর মাত্রা পর্যন্ত পৌঁছাবে না। এটি ইমাম আবু হানিফা(র.) ও ইমাম শাফিঈ(র.) এরও অভিমত। এর উপর ভিত্তি করে এটি ৪০ বেত্রাঘাতের ঊর্ধ্বে হবে না। কারণ এটি মদ পানকারী ব্যক্তি অথবা কাউকে জিনার অপবাদ দানকারী ব্যক্তির হদ শাস্তি। এটি ইমাম আবু হানিফা(র.) এর অভিমত। যদি মদ পানকারী ব্যক্তির হদ শাস্তি ৪০ বেত্রাঘাত হয়, তাহলে দাসের জন্য তাযির হবে ২০ বেত্রাঘাত এর কম এবং স্বাধীন ব্যক্তির জন্য ৪০ বেত্রাঘাতের কম। শাফিঈ মাযহাবে এই অভিমত গ্রহণ করা হয়েছে। একজন দাসকে ১৯ বেত্রাঘাতের বেশি শাস্তি দেয়া যাবে না এবং একজন স্বাধীন ব্যক্তিকে ৩৯ বেত্রাঘাতের বেশি শাস্তি দেয়া  যাবে না। ইমাম মালিক(র.) বলেছেন, বিচারক যদি বিবেচনা করেন, তাহলে হদের চেয়েও তাযির শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করা জায়েজ।

 

এর উপর ভিত্তি করে কিছু আলেম তাযির শাস্তি হিসেবে ৩০০ বেত্রাঘাত নির্ধারণ করেছেন। শাসক (বিচারক) চাইলে এই বেত্রাঘাত একবারেই দেয়া যাবে। আর যদি কল্যাণ বিবেচনা করা হয়, তাহলে বিরতি দিয়েও এই বেত্রাঘাত করা যাবে। [9]

 

আমরা দেখলাম যে তাযির এর শাস্তির ক্ষেত্রে বহু সংখ্যক বেত্রাঘাত হতে পারে। তাযিরের ফলেও একজন ধর্ষক কঠিন শাস্তি লাভ করতে পারে। অপরাধের ভয়াবহতা অনুসারে ইসলামী কাজি তাকে জেলে বন্দী করে রাখা কিংবা অনেক সংখ্যায় বেত্রাঘাত করতে পারে। এভাবে ইসলাম সর্বত্র ন্যায়বিচার কায়েম করেছে। ইসলামী শরিয়া আইনে অপরাধীর কোনো নিস্তার নেই।

 

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে – হদ শাস্তির চেয়ে তাযির শাস্তি বৃদ্ধি করার দলিল কী?

 

এর উত্তর হচ্ছেঃ

 

ইমাম আবু হানিফা(র.) এর ছাত্র এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল(র.) এর উস্তায ইমাম আবু ইউসুফ(র.) বলেছেনঃ

 

“এ (তাযির) শাস্তির পরিমাণ ৭৫টি বেত্রাঘাত। এর মূল ভিত্তি হচ্ছে নবী() এর বাণীঃ

من بلغ حدا في غير حد فهو من المعتدين

হদের ক্ষেত্র ছাড়া যে ব্যক্তি হদের পরিমাণে উপনিত হয় সে সীমালঙ্ঘনকারী। [বায়হাকী, জাইলাঈ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৫৪]  [10]

 

__ __ __ __ __ __ __ __

 

 

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল(র.) থেকে বর্ণিত আছে, উমার(রা.) এর আমলে হদ এর চেয়েও তাযির শাস্তি বৃদ্ধি করার ঘটনা ঘটেছিলো। তিনি একজন মদপানকারী ব্যক্তিকে ৮০ বেত্রাঘাত করেছিলেন। নবী () এবং আবু বকর(রা.) মদ পানকারীদেরকে ৪০ বার বেত্রাঘাত করতেন, তিনি এর সাথে ৪০ বার বেত্রঘাত যোগ করে (তাযির) শাস্তি প্রদান করেছিলেন। এ ছাড়া একজন ব্যক্তি রমযান মাসে দিনের বেলায় মদপান করেছিলো। তাঁকে আলী(রা.) এর নিকট আনা হলে তিনি তাকে নির্ধারিত শাস্তি হিসাবে [উমার(রা.) এর সুন্নাহ অনুসারে] ৮০ বেত্রাঘাত করেছিলেন এবং রমযানের রোযা ভাঙার জন্য অতিরিক্ত আরো ২০ বেত্রাঘাত করেছিলেন [11] খুলাফায়ে রাশিদীনের আরেকজন খলিফা উসমান(রা.) থেকেও বর্ণনা পাওয়া যায় তিনি এই তাযির প্রয়োগের ক্ষেত্রে নবী(ﷺ), আবু বকর(রা.) এবং উমার(রা.) সকলের আমলকেই সুন্নাহ হিসাবে বিবেচনা করেছেন। [12]

 

প্রয়োজনের ক্ষেত্রে হদ এর তুলনায় অধিক পরিমাণে তাযির শাস্তি প্রয়োগের ব্যাপারে খুলাফায়ে রাশিদীনের থেকেই একাধিক দলিল পাওয়া যাচ্ছে। সাহাবীরা নবী(ﷺ) এর হাদিস থেকে এটি বোঝেননি যে তাযির শাস্তির সীমা ১০ বেত্রাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। বৃদ্ধিকৃত তাযির একবারে প্রয়োগ না করে বিরতি দিয়ে প্রয়োগ করার ব্যাপারেও দলিল পাওয়া যায়। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া(র.) এ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন,

 

“আবু বকর(রা.) ও উমার(রা.) একজন নারী ও পুরুষকে একসাথে বিছানায় পাবার পরে ১০০ বেত্রঘাত এবং পরে আবার ১০০ বেত্রাঘাত করেছেন। যে ব্যক্তি উমার(রা.) এর সীলমোহর জাল করে অবৈধভাবে বাইতুল মাল থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছিলো, তাকেও তিনি [উমার(রা.)] ১০০ বেত্রাঘাত করেছিলেন। এরপর ২য় দিন তিনি তাকে ১০০ বেত্রাঘাত এবং ৩য় দিনে আরো ১০০ বেত্রাঘাত করেছিলেন। [13]

 

সুন্নাতে সাহাবা বা সাহাবী(রা.)গণের আদর্শ অনুসরণের ব্যাপারে রাসুল(ﷺ) বলেছেন—

 

‘’আমি আল্লাহকে ভয় করার জন্য তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি। আর (জেনে রাখো) তোমাদের ওপর যদি কোনো হাবশী(আবিসিনিয় নিগ্রো) গোলামকেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, তবু তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করে চলবে। আর তোমাদের কেউ জীবিত থাকলে সে বহু মতভেদ দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নাত এবং সঠিক নির্দেশনাপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত অনুসরণ করাই হবে তোমাদের অবশ্য কর্তব্য। এ সুন্নাতকে খুব দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবে এবং সমস্ত অবৈধ বিষয়কে এড়িয়ে চলবে। কেননা, প্রতিটি ‘বিদআত’ (দ্বীনী বিষয়ে নব উদ্ভাবন) হচ্ছে ভ্রষ্টতা।” [14]

 

শরিয়তের দলিল হিসাবে সুন্নাতে সাহাবা বা সাহাবী(রা.)গণের আদর্শ অনুসরণের ব্যাপারে আরো বিস্তারিত প্রমাণের জন্য খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(র.) এর ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকিদা’ বইয়ের ৫৮-৬২ পৃষ্ঠা এবং ‘এহইয়াউস সুনান’ বইয়ের ১০২-১০৭ পৃষ্ঠা দেখা যেতে পারে।

 

তাযির শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে কিনা এ সম্পর্কে শায়খ ড. আব্দুল কারীম যাইদানের العقوبة في الشريعة الإسلامية (ইসলামী শরী‘আতে শাস্তির বিধান) গ্রন্থে 'তা‘যীর হিসেবে হত্যা করা' অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

 

"...হত্যার দ্বারা তা‘যীর শাস্তি দেওয়া বৈধ কিনা? ইমাম মালিক (রহ) এর মতে বৈধ। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ.-এর একদল অনুসারী ও ইমাম শাফে‘ঈ (রহ) নীতিগতভাবে এ মত সমর্থন করেন। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরস্পরের মধ্যে মতভেদও আছে। ..... তা‘যীর শাস্তি হিসেবে অপরাধীকে হত্যা করা যদি অত্যাবশ্যক হয় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে হত্যা করা ব্যতীত অন্য কোনো উপায় না থাকে, এমতাবস্থায় বিশুদ্ধ বিবেচনা মতে হত্যা করা বৈধ। সুন্নতে নববী থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

«من أتاكم وأمركم جميع على رجل واحد يريد أن يشق عصاكم أو يفرق جماعتكم فاقتلوه»

“কেউ যদি তোমাদের একক নেতৃত্বে ফাটল ধরাতে বা দলের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে তৎপর হয়, তবে তাকে হত্যা কর।” [14.1]

 

এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, যার ফিৎনা-ফাসাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে নিষ্কৃতি লাভের জন্য তাকে হত্যা করা ব্যতীত অন্য কোনো পথ না থাকে তাকে হত্যা করা বৈধ। অপর এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় যার মদ্যপান করার অভ্যাস কোনো ক্রমেই বন্ধ করা যায় না। জবাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

«من لم ينته عنها فاقتلوه»

“যে ব্যক্তি এহেন কাজ থেকে বিরত না হয় তাকে হত্যা কর।” [14.2]

... " [14.3]

 

এ থেকে বোঝা গেলো ইসলামী শরিয়া আইনে ক্ষেত্রবিশেষে বিচারক কর্তৃক তাযিরের ক্ষেত্রেও মৃত্যুদণ্ড দেবার অবকাশ রয়েছে।

 

আমরা দেখেছি ইসলামবিরোধীরা শরিয়া আইনে হদ শাস্তির বিধানকে “নৃশংস” বলে অভিযোগ করে। আবার তাযিরের বিধানকে তারা “অতিমাত্রায় লঘু” বলে অভিযোগ তোলে। অথচ আমরা দেখলাম তাদের এহেন দাবি মোটেও সঠিক নয়। ইসলামে যেটাই থাকুক সেটাই যেন তাদের সমালোচনার লক্ষ্যস্থল!

 

চতুর্থতঃ

 

আল কুরআনে বলা হয়েছে,

 

وَ الَّذِیۡنَ یَرۡمُوۡنَ الۡمُحۡصَنٰتِ ثُمَّ لَمۡ یَاۡتُوۡا بِاَرۡبَعَۃِ شُہَدَآءَ فَاجۡلِدُوۡہُمۡ ثَمٰنِیۡنَ جَلۡدَۃً وَّ لَا تَقۡبَلُوۡا لَہُمۡ شَہَادَۃً اَبَدًا ۚ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡفٰسِقُوۡنَ

অর্থঃ যারা সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশি বার কশাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না; এরাই তো সত্যত্যাগী। [15]

 

এই আয়াত থেকে ইসলামী শরিয়া আইন এসেছেঃ কোনো নারী বা পুরুষ অন্য কোনো সচ্চরিত্র নারী বা পুরুষের বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ এনে প্রমাণস্বরূপ সাক্ষী দেখাতে না পারলে তাকে ৮০ বার বেত্রাঘাত করা হবে। [16] এই আইন অনুযায়ী কোনো নারী যদি একজন সচ্চরিত্র পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা অপবাদ দেয়, সে শাস্তির যোগ্য হবে। এই আইনের উদ্যেশ্য নির্দোষ ব্যক্তির সম্মান রক্ষা করা, কেউ যাতে নিরাপরাধ ব্যক্তির মানহানীর জন্য সহজে মিথ্যা অভিযোগ আনতে না পারে, এটি নিশ্চিত করা। এর উদ্যেশ্য এটা নয় যে কোনো নির্দোষ নারীকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেয়া হবে। আর বিষয়টি এমনও না যে একজন নারী ধর্ষণের অভিযোগ করে প্রমাণ করতে না পারলেই তার শাস্তি হবে। আয়াতের মাঝেই “সতী সাধ্বীর প্রতি অপবাদ” এর কথা উল্লেখ আছে। আল খারাশী(র.) এর মতে, এক্ষেত্রে একজন নারী অভিযুক্ত হতে পারেন যদি তিনি কোনো ন্যায়পরায়ন ও ধার্মিক ব্যক্তির ব্যাপারে অভিযোগ এনে প্রমাণ করতে না পারেন। কোনো চরিত্রহীন ব্যক্তির ব্যাপারে ধর্ষণের অভিযোগ আনার পরে সেটি প্রমাণ করতে না পারলেও সেই নারী হদ শাস্তি পাবেন না। [17] আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি যে শরিয়া আইনে কিভাবে যথাসম্ভব সাক্ষী ও অন্যান্য প্রমাণাদী যাচাই করা হয়, ধর্ষককে চিহ্নিত করে হদ শাস্তি নাহলে তাযির শাস্তি দেয়া হয়। প্রকৃতই কেউ যদি ধর্ষণের ন্যায় জঘন্য অপরাধ করে থাকে, তাকে যাচাই ও শাস্তি প্রদানের জন্য ইসলামী শরিয়ার অবস্থান সুস্পষ্ট। নির্দোষ নারীকে হয়রানী করা বা শাস্তি দেয়া শরিয়তের মাকসাদ নয়। এ বিষয়টির ব্যাপারে জোর দিয়ে শায়খ আসিম আল হাকিম (হাফি.) বলেছেন,

“...যদি ৪ জন সাক্ষী পাওয়া না যায় তাহলে কাজি অবশ্যই অন্য পন্থায় প্রমাণের অনুসন্ধান করবেন যেমন ফরেনসিক টেস্ট অথবা অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করে, যার দ্বারা ঐ নারীকে কে আক্রমণ (ধর্ষণ) করেছে তা প্রমাণ করতে সহায়ক হবে (অভিযোগকারী) নারীকে বন্দী করা যৌক্তিক নয় এবং ন্যায়বিচার নয় কারণ তাকেই তো আক্রমণ করা হয়েছে।”   [18]

 

ইসলামী শরিয়ায় যেভাবে ধর্ষণের ব্যাপারে প্রমাণাদী যাচাই করা হয়, এরপরে একজন নিরাপরাধ অভিযোগকারী নারীর দোষী সাব্যস্ত হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নাস্তিক-মুক্তমনাদের অবস্থা এরূপ যে ইসলামের যে কোনো দিককেই যে কোনো উপায়ে তারা সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করবে। নিরাপরাধ ব্যক্তির মানহানী রোধে শরিয়তে এমন আইন না থাকলে এদেরকেই হয়তো দেখা যেতো প্রশ্ন তুলতে যে ইসলামী শরিয়ায় কেন মিথ্যা অপবাদ বা মানহানী রোধে আইন নেই!

 

রাসুল(ﷺ) এর বিশেষজ্ঞ সাহাবীগণ হাদিসের উপর আমল করে ধর্ষকদের শাস্তি দিতেন। তাঁদের মতে, যে নারীকে জোরপুর্বক জিনায় বাধ্য করা হয়েছে (ধর্ষিতা) সে হদমুক্ত (জিনার শাস্তিমুক্ত)। [19]  এমনকি ধর্ষণের সম্মুখীন কোনো নারী যদি আত্মরক্ষার জন্য ধর্ষণে উদ্যত ব্যক্তিকে হত্যাও করে ফেলে – সে জন্য ঐ নারীকে কোনোরূপ শাস্তি দেয়া হবে না। ইমাম ইবনুল কুদামাহ হাম্বলী(র.) এর আল মুগনী গ্রন্থে এসেছে-- "যে নারীকে কোন পুরুষ ভোগ করতে উদ্যত হয়েছে ইমাম আহমাদ(র.) এমন নারীর ব্যাপারে বলেনঃ

 

"আত্মরক্ষা করতে গিয়ে সে নারী যদি তাকে মেরে ফেলে... ইমাম আহমাদ(র.) বলেনঃ যদি সে নারী জানতে পারেন যে, এ ব্যক্তি তাকে উপভোগ করতে চাচ্ছে এবং আত্মরক্ষার্থে তিনি তাকে মেরে ফেলেন তাহলে সে নারীর উপর কোন দায় আসবে না। ..." [আল মুগনী ৮/৩৩১] [20]

 

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, ধর্ষণ বিচারে ইসলামী শরিয়া আইনে যে প্রমাণাদী যাচাইয়ের উপায় ও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে তা ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। উপরন্তু ইসলামের নৈতিক শিক্ষা ধর্ষণের কারণগুলোকেই গোড়া থেকে ধ্বংস করে দেয়। পৃথিবীতে আজ ইসলামী ব্যবস্থা কায়েম নেই, বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, যৌন হয়রানীসহ নানা অপরাধ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক স্থানেই বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। আমরা নাস্তিক-মুক্তমনাদেরকে আহ্বান জানাবো শুধু সমালোচনার জন্য সমালোচনা না করে প্রকৃতই ইসলাম কী বিধান দিয়েছে তা অধ্যায়ন ও অনুধাবন করতে।

 

 

তথ্যসূত্রঃ

[1] What is the difference between the ruling on rape and the ruling on fornication or adultery? Can rape be proven by modern methods? – islamqa(Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)

https://islamqa.info/en/158282/

অথবা https://archive.is/wip/DXvSX (আর্কাইভকৃত)

[2] দেখুনঃ জামি তিরমিযি, হাদিস নং : ১৪৫৭ [হাসান (দারুস সালাম)]

https://sunnah.com/tirmidhi/17/37

[3] তাফসির জালালাঈন, ২য় খণ্ড, সুরা মায়িদাহর ৩৩ নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ১১৬

[4]  What is the difference between the ruling on rape and the ruling on fornication or adultery? Can rape be proven by modern methods? – islamqa(Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)

https://islamqa.info/en/158282/

অথবা https://archive.is/wip/DXvSX (আর্কাইভকৃত)

[4.5] Assim Al-Hakeem Dot Net Fatawa

https://is.gd/mFhGOr

[5] মিনহাজুত ত্বালিবীন - ইমাম নববী(র.), পৃষ্ঠা ৪৫২

https://archive.org/stream/minhaj_al-talibin_english#page/n469/mode/2up

[6] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৬৩৮৪

[7] ফাতহুল বারী- ইবন হাজার আসকালানী, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ১৮৫

[8] আগ্রহীরা এখান থেকে ফাতহুল বারীর বিস্তারিত আলোচনা পড়ে নিতে পারেন। এখানে বিষয়টি দলিলসহ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

https://islamweb.net/ar/library/index.php?page=bookcontents&ID=12542&bk_no=52&flag=1

[9] “Judge may waive disciplinary punishment” (Islam Web)

https://www.islamweb.net/en/fatwa/366016/

অথবা https://archive.is/wip/pcya8 (আর্কাইভকৃত)

[10] আল হিদায়া – আল মারগিনানী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৯২

ইংরেজি অনুবাদঃ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৪২

https://archive.org/stream/Hedaya_201703/Hedaya#page/n475/mode/2up

ইমাম আবু ইউসুফ(র.) এর বক্তব্যের মূল আরবি ইবারতঃ https://islamweb.net/ar/library/index.php?page=bookcontents&flag=1&bk_no=9&ID=1917

অথবা https://archive.is/wip/s4s9y (আর্কাইভকৃত)

[11] “Going beyond the Limit of Prescribed Corporal Punishment as a Form of Ta‘Zeer?” (Islam Web)

https://www.islamweb.net/en/fatwa/12066/

অথবা https://archive.is/wip/mc2WG (আর্কাইভকৃত)

[12] দেখুনঃ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হুদুদ, নং ১৭০৭

আরো দেখুন, সুনান আবু দাউদ, কিতাবুল হুদুদ, নং ৪৪৮১

[13] “Judge may waive disciplinary punishment” (Islam Web)

https://www.islamweb.net/en/fatwa/366016/

অথবা https://archive.is/wip/pcya8 (আর্কাইভকৃত)

[14] আবু দাউদ ও তিরমিযী; রিয়াদুস সলিহীন :: বই ১ :: হাদিস ১৫৭

[14.1] মুসলিম ১৮৫২, ইরওয়া ২৪৫২, সহীহ আল জামি‘ ৫৯৪৬

https://www.hadithbd.com/hadith/email/?id=69005

[14.2] ص185 - كتاب صحيح فقه السنة وأدلته وتوضيح مذاهب الأئمة - من صور التعزير - المكتبة الشاملة الحديثة

https://al-maktaba.org/book/33062/1714#p5

অথবা https://archive.is/wip/yqf0E (আর্কাইভকৃত)

[14.3] 'ইসলামী শরী‘আতে শাস্তির বিধান' - ড. আব্দুল কারীম যাইদান, পৃষ্ঠা ৭৬-৭৭

https://islamhouse.com/bn/books/890739/

[15] আল কুরআন, নুর ২৪ : ৪

[16] দেখুনঃ তাফসির আহসানুল বায়ান, সুরা নুরের ৪ নং আয়াতের তাফসির

https://www.hadithbd.com/quran/link/?id=2795

[17] "Failing to produce four witnesses in accusation of rape" (Islam Web)

https://www.islamweb.net/en/fatwa/323002/

অথবা https://archive.is/wip/iUODS (আর্কাইভকৃত)

[18] Assim Al-Hakeem Dot Net Fatawa

https://www.assimalhakeem.net/in-pakistan-if-a-woman-cannot-produce-four-male-witnesses-present-at-the-time-of-her-rape-she-be-imprisoned-based-on-hudood-ordinance-and-shariah-law/

অথবা https://archive.is/wip/SvMO5 (আর্কাইভকৃত)

[19] দারসে তিরমিযি – মুফতি তাকি উসমানী, ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮৬

[20] "ধর্ষকের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করা কি ওয়াজিব?" – islamqa (শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ)

https://islamqa.info/bn/4017

অথবা https://archive.is/wip/kN7Vr (আর্কাইভকৃত)