অভিযোগঃ
নাস্তিকদের একটি ব্লগে বলা হয়েছেঃ
“ইসলামি বিশ্বাস হচ্ছে, প্রথম মানব আদমের উচ্চতা ছিল ৯০ ফুট বা ৬০ হাত। … ৯০ ফুট কোন মানুষ থাকলে সে কিছুতেই পৃথিবীতে দুই পায়ে ভর করে চলাফেরা করতে পারবে না, ব্যালেন্সও ঠিক রাখতে পারবে না। স্কয়ার কিউব ল অনুসারে, একটি শেইপকে বৃদ্ধি করা হলে এর ভলিউম এবং সার্ফেস এরিয়া চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে যাবে। যার ফলে একজন ৯০ ফুট লম্বা মানুষের ভর হবে অনেক অনেক বেশি, মানুষের হাড় যা বহন করতে পারবে না। একইসাথে, সে হাঁটাচলাও করতে পারবে না। কারণ দুই পায়ে তখন ব্যালেন্স ঠিক থাকবে না।”
জবাবঃ
প্রথমতঃ
বেশ কিছু হাদিসে বলা হয়েছে আল্লাহ তা’আলা আদম(আ.)কে ৬০ হাত উচ্চতাবিশিষ্ট করে সৃষ্টি করেছেন। হাদিসগুলো নিঃসন্দেহে সহীহ। অতএব এটি একটি ইসলামী বিশ্বাস যে আল্লাহ তা’আলা আদম(আ.)কে ৬০ হাত উচ্চতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এই মর্মে একটি হাদিসঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ، طُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، فَلَمَّا خَلَقَهُ قَالَ اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ النَّفَرِ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ جُلُوسٌ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ، فَإِنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ. فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ. فَقَالُوا السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ. فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ آدَمَ، فَلَمْ يَزَلِ الْخَلْقُ يَنْقُصُ بَعْدُ حَتَّى الآنَ ".
অর্থঃ “আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী(ﷺ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আদম (আ.)-কে তাঁর যথাযোগ্য গঠনে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর উচ্চতা ছিল ষাট হাত। তিনি তাঁকে সৃষ্টি করে বললেনঃ তুমি যাও। উপবিষ্ট ফেরেশতাদের এই দলকে সালাম করো এবং তুমি মনোযোগ সহকারে শোনবে তারা তোমার সালামের কী জবাব দেয়? কারণ এটাই হবে তোমার ও তোমার বংশধরের সম্ভাষণ (তাহিয়্যা)। তাই তিনি গিয়ে বললেনঃ ’আসসালামু ’আলাইকুম’। তাঁরা জবাবে বললেনঃ ’আসসালামু ’আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’। তাঁরা বাড়িয়ে বললেনঃ ’ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বাক্যটি। তারপর নবী(ﷺ) আরও বললেনঃ যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা আদম (আঃ)-এর আকৃতি বিশিষ্ট হবে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি ক্রমশঃ কমে আসছে।” [1]
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবন হাজার আসকালানী(র.) উল্লেখ করেছেন,
أَيْ أَنَّ كُلَّ قَرْنٍ يَكُونُ نَشَأْتُهُ فِي الطُّولِ أَقْصَرَ مِنَ الْقَرْنِ الَّذِي قَبْلَهُ، فَانْتَهَى تَنَاقُصُ الطُّولِ إِلَى هَذِهِ الْأُمَّةِ،
অর্থঃ “অর্থাৎ প্রত্যেক প্রজন্মে পূর্বের প্রজন্মের চেয়ে সবাই খাটো হয়ে আসছে। আর এই উচ্চতা কমার প্রক্রিয়া এই উম্মাহ পর্যন্ত বজায় আছে।” [2]
দ্বিতীয়তঃ
আদম(আ.) কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। আল কুরআনে উল্লেখ আছে যে, আল্লাহ তাঁকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর মাঝে রূহ সঞ্চার করেছেন। আদম(আ.) ছাড়া অন্য কোনো জীবকে তিনি এভাবে সৃষ্টি করেননি।
فَاِذَا سَوَّیۡتُهٗ وَ نَفَخۡتُ فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَهٗ سٰجِدِیۡنَ
অর্থঃ “অতঃপর যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো।”
…
قَالَ یٰۤاِبۡلِیۡسُ مَا مَنَعَکَ اَنۡ تَسۡجُدَ لِمَا خَلَقۡتُ بِیَدَیَّ ؕ اَسۡتَکۡبَرۡتَ اَمۡ کُنۡتَ مِنَ الۡعَالِیۡنَ
অর্থঃ “তিনি বললেন, হে ইবলিস! আমি যাকে আমার দু'হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন?” [3]
ইমাম দারেমী (রহঃ) বলেন: "আল্লাহ্ নিজ হাত দিয়ে স্পর্শ করে আদমকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি ছাড়া অন্য কোন জীবকে তাঁর হস্তদ্বয় দিয়ে সৃষ্টি করেননি। এ কারণে আদম (আঃ) কে বিশেষিত করেছেন, মর্যাদা দিয়েছেন এবং এটাকে উল্লেখ করে আদমকে সম্মানিত করেছেন।" [নাকযুদ দারিম আলাল মির্রিসি, পৃষ্ঠা-৬৪)]
দারেমী, লালাকায়ি ও আজুর্রি এবং অন্যান্য আলেম সহিহ সনদে ইবনে উমর (রাঃ) থেকে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেন: "আল্লাহ্ চারটি জিনিসকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন: আরশ, কলম, আদন (জান্নাত) ও আদম (আঃ)। এরপর অন্য সব সৃষ্টিকে লক্ষ্য করেন বলেন: হও; তখন তারা হয়ে যায়।" [4]
এবং সৃষ্টির পরে আদম(আ.) জান্নাতে বসবাস করতেন, সেখানকার খাবার ভক্ষণ করতেন।
وَ قُلۡنَا یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَ زَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ وَ کُلَا مِنۡهَا رَغَدًا حَیۡثُ شِئۡتُمَا ۪
অর্থঃ "আমি বললাম, ‘হে আদম! তুমি তোমার স্ত্রীসহ জান্নাতে বসবাস কর এবং যথা ও যেথা ইচ্ছা আহার কর," [5]
সংশয়বাদীরা অধিক উচ্চতাবিশিষ্ট মানুষের জন্য ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন হবার বিষয়টি এবং হাড়ের পক্ষে এত দীর্ঘ মানুষের দেহের ভার বহন করা আদৌ সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নও তোলে। তারা Square cube Lawকেও উদ্ধৃত করে। এক্ষেত্রে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের জবাব হচ্ছেঃ যেই ব্যক্তিকে স্বয়ং আল্লাহ নিজ হাতে সৃষ্টি করে রূহ সঞ্চার করেছেন এবং যিনি জান্নাতে বসবাস করে সেখানকার খাদ্য খেয়েছেন - তিনি দৈহিক বা অন্যান্য সকল বিষয়ে হুবহু এখনকার দিনের সাধারণ মানুষের মতো হবেন এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তাঁর দেহের মেকানিজম এখনকার মানুষের থেকে ভিন্ন হতেই পারে। হতে পারে আদম(আ.) এর হৃদপিণ্ড ছিল প্রচণ্ড ক্ষমতাসম্পন্ন, তাঁর হাড়ের গঠন ছিল প্রচণ্ড শক্তিশালী। যার ফলে তাঁর দেহে যথাযথভাবে রক্ত সঞ্চালিত হতে পারতো, তাঁর হাড় দেহের ভার বহন করতে পারতো, এত দীর্ঘ উচ্চতাতেও ভারসাম্য রক্ষা ও জীবনধারণ করতে পারতেন। আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন। যারা আদম(আ.) এর এই উচ্চতার ব্যাপারে অবিশ্বাস করে তারা প্রায়শই বিবর্তন তত্ত্ব উদ্ধৃত করে। বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন প্রাচীন পৃথিবীর বহু বৃহৎ আকারের প্রাণী বিবর্তিত হয়ে বর্তমানে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র আকৃতির প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঘোড়া, টিকটিকি, কচ্ছপ, ফড়িং ইত্যাদি। [6] [7] এমন আরো উদাহরণ দেখানো যায়। [8] কেউ কেউ হয়তো এই বলে আপত্তি করতে পারে যে, ঐসব প্রাণীর তো জীবাশ্ম বা ফসিল (Fossil) পাওয়া গেছে; বৃহৎ আকারের মানুষের তো ফসিল পাওয়া যায়নি! এর উত্তরে আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলবঃ পৃথিবীর ইতিহাসে এই বিশাল প্রাণীজগতের বিপুল পরিমাণের প্রজাতির এক অতি ক্ষুদ্র অংশেরই ফসিল পাওয়া গেছে। সমগ্র প্রাণী প্রজাতির মাত্র ০.১% এরও কম সংখ্যক প্রাণী ফসিলে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে থেকেও ক্ষুদ্র এক অংশের ফসিল বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন। [9] অবশিষ্ট ৯৯.৯% এরও বেশি পরিমাণ প্রজাতি আদৌ জীবাশ্ম বা ফসিলে পরিণত হয়নি! এত নগণ্য পরিমানে প্রাপ্ত ফসিলের উপর ভিত্তি করে কী করে নিশ্চিতভাবে এই দাবি করা যেতে পারে যে এখনকার চেয়ে বৃহৎ আকারের মানবের আদৌ অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে ছিল না?
তৃতীয়তঃ
এই সংক্রান্ত হাদিসের ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের মাঝে প্রচলিত একাধিক ব্যাখ্যার মধ্যে একটি হচ্ছে – আদম(আ.) এর ৬০ হাত দৈর্ঘ্য ছিল জান্নাতে। যখন তিনি পৃথিবীতে নেমে আসেন তখন তাঁর উচ্চতা কমে যায় এবং তিনি অপেক্ষাকৃত খর্বকায় হয়ে যান (বর্তমান সময়ের মানুষের মতো)। এবং এরপর থেকে মানব জাতির উচ্চতা একই রূপ কম আকৃতির হয়ে আসছে। মানব জাতি আবার জান্নাতে ফিরে গেলে তারা আদি পিতা আদম(আ.) এর উচ্চতায় (৬০ হাত) ফিরে যাবে। যে কারো ৬০ হাত উচ্চতার বিষয়টি জান্নাতের জন্য খাস।
এই ব্যাখ্যা অনুসারে আদম(আ.) এর পৃথিবীতে অবতরণের পরের উচ্চতা এবং বর্তমান সময়ের মানুষের উচ্চতা একই রকমের।
মুহাদ্দিসদের এই ব্যাখ্যার কারণ হল সহীহ বুখারীর একটি হাদিস এবং আরবি ভাষায় একই শব্দ বা বাক্য থেকে একাধিক অর্থের সম্ভাবনা। হাদিসটি নিম্নরূপঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ عَلَى أَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، لاَ يَبُولُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ وَلاَ يَتْفِلُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ، أَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ، وَرَشْحُهُمُ الْمِسْكُ، وَمَجَامِرُهُمُ الأَلُوَّةُ الأَنْجُوجُ عُودُ الطِّيبِ، وَأَزْوَاجُهُمُ الْحُورُ الْعِينُ، عَلَى خَلْقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ، سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ ".
অর্থঃ “আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন, সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল হবে পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল। তারপর যে দল তাদের অনুগামী হবে তাদের মুখমণ্ডল হবে আকাশের সর্বাদিক দীপ্তমান উজ্জ্বল তারকার মত। তারা না করবে পেশাব আর না করবে পায়খানা। তাদের থুথু ফেলার প্রয়োজন হবে না এবং তাদের নাক হতে শ্লেম্মাও বের হবে না। তাদের চিরুনি হবে স্বর্ণের তৈরি। তাদের ঘাম হবে মিস্কের ন্যায় সুগন্ধপূর্ণ। তাদের ধনুচি হবে সুগন্ধযুক্ত চন্দন কাঠের। বড় চক্ষু বিশিষ্ট হুরগণ হবেন তাদের স্ত্রী। তাদের সকলের দেহের গঠন হবে একই। তারা সবাই তাদের আদি-পিতা আদম (আলাইহিস সালাম) এর আকৃতিতে হবেন। উচ্চতায় তাদের দেহের দৈর্ঘ্য হবে ষাট হাত বিশিষ্ট।” [10]
অধিকাংশ অনুবাদে হাদিসটি এই ধরণের বাক্যসমূহের দ্বারাই অর্থ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি হাদিসটির শেষ বাক্যটি লক্ষ করি, তাহলে দেখব সেখানে উল্লেখ আছে “سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ”। এখানে প্রায় সকল অনুবাদেই ‘السَّمَاءِ’ কথাটিকে হয় ‘উচ্চতা’ হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে [11] অথবা একে জান্নাতবাসীদের ক্ষেত্রে ধরে নিয়ে অর্থ করা হয়েছেঃ “আসমানের দিকে উচ্চতায় হবেন ৬০ হাত দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট”। [12] [যেগুলো নিঃসন্দেহে সঠিক অনুবাদ]। কিন্তু এই শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্ব, আসমান ইত্যাদি। কোনো কোনো মুহাদ্দিস একে আদম(আ.) এর ক্ষেত্রে ধরে নিয়ে এই হাদিস থেকে এরূপ অর্থ নিয়েছেন —
“তারা সবাই তাদের আদি পিতা আদম(আ.) এর আকৃতিতে হবেন। আসমানে/ঊর্ধ্বে যিনি ছিলেন ষাট হাত (উচ্চতাবিশিষ্ট)।”
[عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ، سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ ]
এরূপ অর্থ নেয়া হলে এই হাদিসের ব্যাখ্যা ভিন্ন হয়। আদম(আ.) ‘ঊর্ধ্বে’ বলতে জান্নাতে বসবাস করতেন। ইমাম কুরতুবী(র.) উল্লেখ করেছেন,
و(قوله: ستون ذراعا في السماء) أي: في الارتفاع، وكل ما علاك فهو سماء، ويعني بذلك: أن الله تعالى أعاد أهل الجنة إلى خلقة أصلهم الذي هو آدم، وعلى صفته وطوله الذي خلقه الله عليه في الجنة، وكان طوله فيها ستين ذراعا في الارتفاع، من ذراع نفسه، والله أعلم.
অর্থঃ “এবং তাঁর বাণী [ستون ذراعا في السماء {আসমানে/ঊর্ধ্বে ৬০ হাত}] এখানে ‘আস-সামা’ (আসমান) এর অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্ব। (আরবি ভাষা অনুযায়ী) আপনার উপরে বিদ্যমান প্রতিটি বিষয়ই ‘সামা’ । এর দ্বারা বোঝানো হচ্ছেঃ আল্লাহ তা’আলা জান্নাতবাসীদেরকে তাঁদের মূল সৃষ্টিগত অবস্থায় ফিরিয়ে দেবেন আর তা হচ্ছে আদম(আ.) [এর দৈহিক গঠন]। আর তাঁর [আদম(আ.)] যেই গুণ ও উচ্চতা যোগে আল্লাহ তাঁকে জান্নাতে সৃষ্টি করেছিলেন, সে অবস্থায় [জান্নাতবাসীদেরকে] ফিরিয়ে দেবেন। আর ঊর্ধ্বে [জান্নাতে] তাঁর উচ্চতা ছিল ৬০ হাত; তাঁর নিজের হাতের হিসেবে। এবং আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন।” [13]
আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি(র.) তাঁর সুবিখ্যাত সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘ফাইদ্বুল বারী’তে উল্লেখ করেছেন,
قوله: (سُتُّونَ ذِرَاعًا في السَّمَاءِ)، أي في الطول، ويُحْتَمَلُ أن يكونَ مرادُ الحديث أنه كان قدر طولهم هذا في الجنة، فإذا نَزَلُوا عادوا إلى القصر. فإن الأحكامَ تَتَفَاوت بتفاوُت البلدان، والأوطان. كما أن يومًا عند ربك كألف سنةٍ مما تَعُدُّون، فهو يومٌ في العالم العلويِّ، وألف سنةٍ في العالم السفليِّ، هكذا يُمْكِنُ أن تكونَ قاماتهم تلك في الجنة، فإذا دَخَلُوها عادوا إلى أصل قامتهم.
অর্থঃ “তাঁর বাণী [سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ {আসমানে/ঊর্ধ্বে ৬০ হাত}] এর দ্বারা উচ্চতা বোঝানো হচ্ছে। সম্ভাবনা আছে এই হাদিসের অর্থ হচ্ছে এটা ছিল জান্নাতে তাঁদের উচ্চতা। আর যখন তাঁরা [পৃথিবীতে] নেমে আসলেন তখন তাঁদের উচ্চতা কমে গেল। বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলভেদে (কখনো কখনো) আইনের ভিন্নতা হয়; ঠিক যেমন “তোমার প্রতিপালকের একদিন তোমাদের গণনার হাজার বছরের সমান।” [সুরা হজ ২২ : ৪৭] উপরের জগতে যা এক দিন, নিম্নের জগতে তা হাজার বছর। অনুরূপভাবে জান্নাতে তাদের উচ্চতা হবে। তারা যখন সেখানে প্রবেশ করবে, তারা তাদের আসল [৬০ হাত] দৈহিক উচ্চতায় ফিরে যাবে।” [14]
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এবং বহু শাস্ত্রের পণ্ডিত মুহাম্মাদ আমিন আল হারারী(র.) তাঁর সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘কাওকাব আল ওয়াহাজ’ এ আলোচ্য হাদিসের ব্যাপারে অনুরূপ ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন যে - আদম(আ.) এর ৬০ হাত উচ্চতা ছিল জান্নাতে; পৃথিবীতে নেমে আসার পর তাঁর উচ্চতা কমে যায়। [15]
যেসব মুহাদ্দিস এই ব্যাখ্যা নিয়েছেন, তাঁরা হাদিসের “فَلَمْ يَزَلِ الْخَلْقُ يَنْقُصُ بَعْدُ حَتَّى الآنَ” এই কথাটিরও ভিন্ন আরেকটি অর্থ নিয়েছেন। অধিকাংশ অনুবাদেই এর অর্থ করা হয়েছেঃ “তারপর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি ক্রমশঃ কমে আসছে।” এটি নিঃসন্দেহে সঠিক একটি অনুবাদ। তবে ২য় ব্যাখ্যা যারা নিয়েছেন সেই মুহাদ্দিসরা এর অর্থ এরূপ করেছেনঃ “তারপর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি কম হওয়া থামছে না।” অর্থাৎ এরপর থেকে মানবজাতির উচ্চতা পৃথিবীতে অবতরণের পর আদম(আ.) এর উচ্চতার ন্যায় কম হয়ে আসছে। এটি আলোচ্য বাক্যের সম্ভাব্য আরেকটি অর্থ। আর জান্নাত থেকে অবতরণের পর আদম(আ.) এর উচ্চতা কমে যাবার ব্যাখ্যাটি হাদিসের এই অর্থ থেকেই এসেছে।
এ প্রসঙ্গে বর্তমান সময়ের শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন মুফতি তাকি উসমানী(হাফি.) তাঁর সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম’ এ উল্লেখ করেছেন,
المراد أن الجسم الإنسان لم يزل ناقصاً بعده. ويؤخذ هذا مما قدمناه عن شيخ مشايخنا الكشميري رحمه الله أن ستين ذراعاً إنما كانت مقدار قامة آدم عليه السلام في الجنّة، فلما نزل عنها عاد إلى القصر، ولم يزل أبناؤه يولدون بقرب من هذه القامة إلى يومنا الآن، وإنما يرجعون إلى أصل قامتهم حينما يعودون إلى الجنّة. فقوله عليه السلام: "لم يزل ينقص": معناه: أنه لم يزل يولد ناقصاً، والله سبحانه وتعالى أعلم
অর্থঃ "এর মানে হচ্ছে মানবদেহ এর পর থেকে ক্রমশ অসম্পূর্ণ (উচ্চতাবিশিষ্ট) হয়ে আসছে (অর্থাৎ কম উচ্চতা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে)। আর এই ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হচ্ছে আমাদের শিক্ষকদের শিক্ষক [আনোয়ার শাহ] কাশ্মিরি রহিমাহুল্লাহ থেকে। আদম(আ.) এর ৬০ হাত উচ্চতা ছিল জান্নাতে। যখন তিনি সেখান থেকে নেমে এলেন, তখন তিনি (জান্নাতে প্রাপ্ত উচ্চতার তুলনায়) খর্বকায় হয়ে গেলেন। তারপর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর বংশধরদের উচ্চতা একই রকমের হয়ে আসছে। আর তারা তাদের আসল উচ্চতায় ফিরে যাবে যখন তারা জান্নাতে ফিরে যাবে। কাজেই নবী(ﷺ) এর এই বাণী “لم يزل ينقص ” [তারপর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি কম হওয়া থামছে না] এর মানে হলঃ এর পর থেকে সে ক্রমশ অসম্পূর্ণ (উচ্চতাবিশিষ্ট) হয়ে জন্ম নিচ্ছে। এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাই সর্বোত্তম জানেন।" [16]
এটি আলোচ্য হাদিসের ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের মাঝে প্রচলিত আরেকটি ব্যাখ্যা। আর এই ব্যাখ্যা নেয়া হলে আদম(আ.) এর উচ্চতার ব্যাপারে নাস্তিক-মুক্তমনারা যেসব বৈজ্ঞানিক ভুলের অভিযোগ করে সেগুলো আর প্রাসঙ্গিক থাকে না।
কিছু প্রচলিত ভুল দাবি এবং ভ্রান্ত বিশ্বাসঃ
১। আদম(আ.) এর পায়ের ছাপের দাবিঃ
শ্রীলঙ্কার একটি পাহাড়কে আদমের(আ.) পাহাড় (Adam’s Peak) বলে অভিহীত করা হয় এবং এখানকার একটি বিশাল পায়ের ছাপের মতো জিনিসকে আদম(আ.) এর পায়ের ছাপ বলে দাবি করা হয়। কিন্তু কুরআন এবং সুন্নাহতে এই স্থান এবং পায়ের ছাপসংক্রান্ত দাবির কোনো ভিত্তি নেই। [17]
কেউ কেউ শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মাঝে সংযোগকারী সমুদ্রের মধ্যকার এক স্থলভাগকে ‘আদম সেতু’ (Adam’s Bridge) বলে অভিহীত করেন [হিন্দুরা যাকে রাম সেতু বলে]। তাদের দাবি হচ্ছে আদম(আ.) নাকি জান্নাত থেকে শ্রীলঙ্কার এই পাহাড়ে অবতরণ করেন এবং এই বিশেষ সেতুর মাধ্যমে অন্যত্র গমন করেন। অথচ আদম(আ.) পৃথিবীর কোন অংশে অবতরণ করেছিলেন এই মর্মে কুরআন বা সহীহ হাদিস থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু অভিমত আছে, কিন্তু একটাও বিশুদ্ধ নয়। [18] কাজেই আদম সেতুর এই দাবির কোনো ভিত্তি নেই। অনেক সময় আদম(আ.) ৫০০০/৬০০০/৭০০০ বছর আগে পৃথিবীতে অবতরণ করেছেন মর্মে দাবি করা হয়। কোনো কোনো উলামা ইস্রাঈলী রেওয়ায়েতের আলোকে এসব অভিমত উল্লেখ করলেও কুরআন বা সহীহ হাদিস দ্বারা এগুলো প্রমাণিত নয়। পৃথিবীর বয়স, আদম(আ.) এর পৃথিবীতে আগমনকাল এসব ব্যাপারে কোনো বিশুদ্ধ বর্ণনা নেই। [19] [20] [21] [22]
২। আদমের(আ.) বিশাল আকৃতির কবরঃ
কখনো কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশাল আকৃতির কিছু কবরের মতো জিনিসের ছবি শেয়ার দিয়ে অনেকে দাবি করে এটা নাকি আদমের(আ.) বিশাল কবর!
অথচ এহেন দাবির কোনো ভিত্তি নেই। রাসুলুল্লাহ(ﷺ)-এর কবর ব্যতিত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া(র.) বলেন, “রাসুল(ﷺ)-এর কবর ব্যতিত কোন নবীর কবরের অবস্থানের ব্যাপারে পৃথিবীর মানুষ একমত নয়।” (মাজমু ফাতাওয়া ২৭/১১৬)।
শায়খ বিন বায(র.) বলেন, “নবী(ﷺ)-এর কবর ব্যতিত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত।...আর যে ব্যক্তি দাবী করবে যে, এটি অমুকের কবর, এটির অমুকের কবর তাহলে সে মিথ্যা বলবে। এর কোনো সত্যতা এবং বিশুদ্ধতা নেই।” (মাজমু ফাতাওয়া বিন বায ১/১৬০) [23]
৩। আদমের(আ.) বিশাল আকৃতির জামাঃ
অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশাল আকারের জামার ছবি শেয়ার দিয়ে দাবি করা হয় তা নাকি আদি মানব আদম(আ.) এর জামা! [মাঝে মাঝে একে ইব্রাহিম(আ.) এর জামা বলেও প্রচার করা হয়।] এই দাবি যে ভুয়া তা বোঝার জন্য খুব বেশি দলিলেরও প্রয়োজন নেই। হাজার হাজার বছর আগের একজন মানুষের জামা কি এত সুন্দর নতুনের মতো থাকে বা আধুনিক যুগের পোশাকের মতো হয়? এতকাল আগের মানুষের জামা সংরক্ষিত থাকা মূলত অসম্ভব একটি ব্যাপার [যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন]।
মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গরে অবস্থিত ইসলামিক আর্ট সেন্টার ‘Yayasan Restu’ তে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি প্রদর্শনীতে দেখানোর জন্য হাদিসে উল্লেখিত জান্নাতে আদম(আ.) এর উচ্চতার বর্ণনা অনুসরণ করে রেপ্লিকা (নকল) জুব্বা তৈরি করা হয়েছিল। [24] সেই ছবি শেয়ার দিয়ে কিছু লোক দাবি করে এটা নাকি দুনিয়ায় আদম(আ.) এর পরিধান করা বস্ত্র!
৪। পৃথিবীতে অবতরণের পর আকাশ সমান আদমের(আ.) উচ্চতা কমে ৬০ হাত হওয়াঃ
মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকের একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, আদম(আ.) পৃথিবীর ভারতবর্ষে অবতরণ করেন। তিনি এত লম্বা ছিলেন যে তাঁর মাথা ছিল আকাশে আর পা ছিল মাটিতে। ফেরেশতারা তাঁকে দেখে ভয় পেতেন। এরপর তাঁকে খাটো করে ৬০ হাত উচ্চতায় নিয়ে আসা হয়। [25] কিন্তু মুহাদ্দিসদের মতে এই বর্ণনা মুরসাল। আর এর মধ্যে নাকারাহ আছে কেননা সহীহ হাদিসের বক্তব্য হচ্ছে আদম(আ.)কে সৃষ্টিই করা হয়েছে ৬০ হাত দৈর্ঘ্যে [আকাশ সমান দৈর্ঘ্য থেকে কমে ৬০ হাত হয়ে যাওয়া এর সাথে সাংঘর্ষিক]। কাজেই এই হাদিস সহীহ নয় এবং তা ইসলামী আকিদার দলিল হতে পারে না। তারিখ তাবারীসহ বিভিন্ন স্থানে এমন আরো কিছু বর্ণনা রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে পৃথিবীতে অবতরণের পর আদম(আ.) আকাশ সমান উচ্চতার ছিলেন। কিন্তু এর একটিও সহীহ নয়। [26]
৫। বিশাল আকৃতির মানব কঙ্কালের ছবিঃ
সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশাল আকারের মানব কঙ্কালের ছবি শেয়ার করে কাউকে কাউকে নানা জিনিস দাবি করতে দেখা যায়। কেউ কেউ দাবি করে এগুলো আদম(আ.) এর সময়কার বা প্রাচীন পৃথিবীর বিশাল আকৃতির মানুষের কঙ্কাল। অনেক সময় কোনো কোনো পত্রিকাও উপযুক্ত যাচাই বাছাই না করে এমন সংবাদ ছাপে।
সত্যি সত্যি যদি এমন কঙ্কাল পাওয়া যেতো তবে তা শেয়ার করা দোষের কিছু ছিল না। কিন্তু পৃথিবীর বড় বড় সংবাদমাধ্যমগুলো যেমনঃ রয়টার্স, এপি, এএফপি ইত্যাদির যাচাই অনুসারে এই দাবিগুলো মূলত ভুয়া দাবি। বাস্তবে এমন বিশাল আকারের মানব কঙ্কাল পাওয়া যায়নি। হয় ছবির মাঝে কারসাজি করে নয়তো অন্য কোনো বৃহৎ প্রাণীর কঙ্কালকে মানুষের কঙ্কাল বলে চালিয়ে দিয়ে এইসব দাবি করা হয়েছে। [27] [28] [29] [30]
কখনো কখনো মুসলিম দাঈরাও সরল মনে উপযুক্ত যাচাই বাছাই না করে এসব জিনিস শেয়ার করে থাকেন। মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত সর্বোচ্চ সততার পরিচয় দেয়া এবং উপযুক্ত যাচাই বাছাই না করে কোনো কিছু শেয়ার না করা। ইসলামী দাওয়াহর জন্য কুরআন, সহীহ হাদিস এবং শ্রেষ্ঠ উলামায়ে কিরামের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণগুলো প্রচারই যথেষ্ট।
আরো পড়ুনঃ
আদম(আ.) ও নুহ(আ.) এর এত দীর্ঘ সময়ব্যপি জীবন যাপন কি অসম্ভব কিছু?
তথ্যসূত্রঃ
[1] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৬২২৭
[2] ফাতহুল বারী- ইবন হাজার আসকালানী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩৬৭
[3] আল কুরআন, ছোয়াদ ৩৮ : ৭২, ৭৫
[4] বিস্তারিত দেখুনঃ "আল্লাহ্ চারটি জিনিসকে তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন" - Islamqa (শায়খ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ)
https://islamqa.info/bn/89966/
অথবা https://archive.is/wip/9ZBZ5 (আর্কাইভকৃত)
[5] আল কুরআন, বাকারাহ ২ : ৩৫
[6] “Over millennia, some animal species and populations have grown smaller, not larger, according to the fossil record. Ice Age horses that occupied Alaska in the distant past, some anole lizards living on Caribbean islands, many types of turtles, and even dragonflies all shrunk through time, research suggests.”
সূত্রঃ https://www.popsci.com/environment/evolutionary-theory-shrinking-animals/
অথবা https://archive.is/wip/Ylov1 (আর্কাইভকৃত)
[7] “Why animals shrink explained with new evolution theory” - University of Reading
অত্থবা https://archive.is/wip/UjegS (আর্কাইভকৃত)
[8] “Earth’s mammals have shrunk dramatically, and humans are to blame” - The Washington Post
অথবা https://archive.is/xSSkn (আর্কাইভকৃত)
[9] “Fossilisation is so unlikely that scientists estimate that less one-tenth of 1% of all the animal species that have ever lived have become fossils. Far fewer of them have been found.”
সূত্রঃ https://www.bbc.com/future/article/20180215-how-does-fossilisation-happen
অথবা https://archive.is/C9Exc (আর্কাইভকৃত)
[10] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৩০৯২
[11] উপরে উল্লেখিত সহীহ বুখারীর ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর অনুবাদ
[12] আধুনিক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত সহীহ বুখারীর অনুবাদ দ্রষ্টব্য; খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৩২
[13] আল মুফহিম লিমা আশকালা মিন তালখিছ কিতাব মুসলিম – আবুল আব্বাস কুরতুবী, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ১৮২
https://shamela.ws/book/132524/4180
অথবা https://archive.is/wip/D4Cc6 (আর্কাইভকৃত)
[14] ফাইদ্বুল বারী – আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৩৪২-৩৪৩
https://shamela.ws/book/98124/2025
https://shamela.ws/book/98124/2026
অথবা আর্কাইভকৃত –
[15] কিতাব কাওকাব আল ওয়াহাজ শারহ সহীহ মুসলিম বিন আল হাজ্জাজ – মুহাম্মাদ আমিন আল হারারি, খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ৫১১
https://shamela.ws/book/18268/11372
অথবা https://archive.is/wip/QzFsO (আর্কাইভকৃত)
[16] তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম - মুফতি তাকি উসমানী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৫৮
https://ia800903.us.archive.org/5/items/waq79831/12_79842.pdf
[17] "Not true that footprint of Aadam is in Sri Lanka" (Islamweb)
https://www.islamweb.net/en/fatwa/359701/
অথবা https://archive.is/wip/HtljI (আর্কাইভকৃত)
[18] "Where Did Prophet Adam Land on Earth?" - Islamqa (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)
https://islamqa.info/en/141280/
অথবা https://archive.is/9gWBT (আর্কাইভকৃত)
[19] https://islamqa.org/?p=9735
অথবা https://archive.is/wip/VXxA2 (আর্কাইভকৃত)
[20] https://at-tahreek.com/article_details/10686
অথবা https://archive.is/wip/AV36r (আর্কাইভকৃত)
[21] https://islamqa.info/en/20907/
অথবা https://archive.is/1CaPH (আর্কাইভকৃত)
[22] https://islamqa.info/en/145806/
অথবা https://archive.is/tFjNT (আর্কাইভকৃত)
[23] সূত্রঃ https://at-tahreek.com/article_details/4421
অথবা https://archive.is/wc9ji (আর্কাইভকৃত)
[24] সূত্রঃ https://rumorscanner.com/fact-check/replika-jubah-nabi-adam-as/24439
অথবা https://archive.is/wip/5S4lW (আর্কাইভকৃত)
[25] মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং : ৯০৯৬
https://shamela.ws/book/13174/9807
অথবা https://archive.is/wip/8VKYJ (আর্কাইভকৃত)
[26] কিতাব সহীহ ওয়া দ্বইফ তারিখ আত তাবারী – মুহাম্মাদ বিন ত্বাহির আল বারযানজি, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৭৬-৭৮
https://shamela.ws/book/145435/1941
https://shamela.ws/book/145435/1942
https://shamela.ws/book/145435/1943
অথবা (আর্কাইভকৃত) –
[27] https://factcheck.afp.com/doc.afp.com.347V8VC
অথবা https://archive.is/wip/QCtzt (আর্কাইভকৃত)
[28] https://www.reuters.com/article/idUSKCN2AV20P/
অথবা https://archive.is/wip/RdVIb (আর্কাইভকৃত)