নাস্তিক প্রশ্নঃ কুরআনের উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনে কেন এমন ভুল থাকবে (কুরআন ৪:১১-১২)? একজন সৃষ্টিকর্তার পক্ষে কি মানুষের মত কোনরূপ ভুল হওয়া আদৌ সম্ভব? স্ত্রীঃ ১/৮=৩/২৪ ; কন্যাঃ ২/৩ = ১৬/২৪ ; পিতাঃ ১/৬ = ৪/২৪; মাতাঃ ১/৬ = ৪/২৪
মোট=২৭/২৪ = ১.১২৫ (যা ১ এর চেয়েও বেশি)
উত্তরঃ সুরা নিসার ৩টি আয়াতে (৪:১১, ৪:১২ ও ৪:১৭৬) মৃতের সম্পত্তি বণ্টনের নীতি বর্ণিত হয়েছে।
يُوصِيكُمُ ٱللَّهُ فِىٓ أَوۡلَـٰدِڪُمۡۖ لِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَيَيۡنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَآءً۬ فَوۡقَ ٱثۡنَتَيۡنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَۖ وَإِن كَانَتۡ وَٲحِدَةً۬ فَلَهَا ٱلنِّصۡفُۚ وَلِأَبَوَيۡهِ لِكُلِّ وَٲحِدٍ۬ مِّنۡہُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُ ۥ وَلَدٌ۬ۚ فَإِن لَّمۡ يَكُن لَّهُ ۥ وَلَدٌ۬ وَوَرِثَهُ ۥۤ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُ ۥۤ إِخۡوَةٌ۬ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ۬ يُوصِى بِہَآ أَوۡ دَيۡنٍۗ ءَابَآؤُكُمۡ وَأَبۡنَآؤُكُمۡ لَا تَدۡرُونَ أَيُّهُمۡ أَقۡرَبُ لَكُمۡ نَفۡعً۬اۚ فَرِيضَةً۬ مِّنَ ٱللَّهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمً۬ا (١١) ۞ وَلَڪُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَكَ أَزۡوَٲجُڪُمۡ إِن لَّمۡ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌ۬ۚ فَإِن ڪَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ۬ فَلَڪُمُ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَڪۡنَۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ۬ يُوصِينَ بِهَآ أَوۡ دَيۡنٍ۬ۚ وَلَهُنَّ ٱلرُّبُعُ مِمَّا تَرَكۡتُمۡ إِن لَّمۡ يَڪُن لَّكُمۡ وَلَدٌ۬ۚ فَإِن ڪَانَ لَڪُمۡ وَلَدٌ۬ فَلَهُنَّ ٱلثُّمُنُ مِمَّا تَرَڪۡتُمۚ مِّنۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ۬ تُوصُونَ بِهَآ أَوۡ دَيۡنٍ۬ۗ وَإِن كَانَ رَجُلٌ۬ يُورَثُ ڪَلَـٰلَةً أَوِ ٱمۡرَأَةٌ۬ وَلَهُ ۥۤ أَخٌ أَوۡ أُخۡتٌ۬ فَلِكُلِّ وَٲحِدٍ۬ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُۚ فَإِن ڪَانُوٓاْ أَڪۡثَرَ مِن ذَٲلِكَ فَهُمۡ شُرَڪَآءُ فِى ٱلثُّلُثِۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِيَّةٍ۬ يُوصَىٰ بِہَآ أَوۡ دَيۡنٍ غَيۡرَ مُضَآرٍّ۬ۚ وَصِيَّةً۬ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ۬ (١٢)
অর্থঃ “আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক ছেলের জন্য দুই মেয়ের অংশের সমপরিমাণ। তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়, তাহলে তাদের জন্য হবে, যা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ; আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক। আর তার মাতা পিতা উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ সে যা রেখে গেছে তা থেকে, যদি তার সন্তান থাকে। আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিস হয় তার মাতা পিতা তখন তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ। আর যদি তার ভাই-বোন থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। অসিয়ত পালনের পর, যা দ্বারা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের মাতা পিতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আর তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তারা যা রেখে গেছে তা থেকে তোমাদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ। তারা যে অসিয়ত করে গেছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর স্ত্রীদের জন্য তোমরা যা রেখে গিয়েছ তা থেকে চার ভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য আট ভাগের এক ভাগ, তোমরা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে। তোমরা যে অসিয়ত করেছ তা পালন অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি মা বাবা এবং সন্তান-সন্ততি নাই এমন কোন পুরুষ বা মহিলা মারা যায় এবং তার থাকে এক ভাই অথবা এক বোন, তখন তাদের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের একভাগ। আর যদি তারা এর থেকে অধিক হয় তবে তারা সবাই তিন ভাগের এক ভাগের মধ্যে সমঅংশীদার হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। কারো কোন ক্ষতি না করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে অসিয়তস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।” [1]
سۡتَفۡتُونَكَ قُلِ ٱللَّهُ يُفۡتِيڪُمۡ فِى ٱلۡكَلَـٰلَةِۚ إِنِ ٱمۡرُؤٌاْ هَلَكَ لَيۡسَ لَهُ ۥ وَلَدٌ۬ وَلَهُ ۥۤ أُخۡتٌ۬ فَلَهَا نِصۡفُ مَا تَرَكَۚ وَهُوَ يَرِثُهَآ إِن لَّمۡ يَكُن لَّهَا وَلَدٌ۬ۚ فَإِن كَانَتَا ٱثۡنَتَيۡنِ فَلَهُمَا ٱلثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَۚ وَإِن كَانُوٓاْ إِخۡوَةً۬ رِّجَالاً۬ وَنِسَآءً۬ فَلِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَيَيۡنِۗ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَڪُمۡ أَن تَضِلُّواْۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىۡءٍ عَلِيمُۢ (١٧٦)
অর্থঃ “তারা তোমার নিকট ব্যবস্থা প্রার্থনা করছে, তুমি বলঃ আল্লাহ তোমাদেরকে পিতা-পুত্রহীন সম্বন্ধে ব্যবস্থা দান করেছেন। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায় এবং তার ভগ্নী থাকে তাহলে সে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে অর্ধাংশ পাবে; এবং যদি কোন নারীর সন্তান না থাকে তাহলে তার ভাইই তদীয় উত্তরাধিকারী হবে; কিন্তু যদি দুই ভগ্নী থাকে তাহলে তাদের উভয়ের জন্য পরিত্যক্ত বিষয়ের দুই তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই ভগ্নী-পুরুষ ও নারীগণ থাকে তাহলে পুরুষ দুই নারীর তুল্য অংশ পাবে; আল্লাহ তোমাদের জন্য বর্ণনা করছেন যেন তোমরা বিভ্রান্ত না হও, এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী।” [2]
আল কুরআন ব্যাখ্যার ব্যাপারে প্রসিদ্ধ সাহাবী হচ্ছেন আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস(রা.)। তাঁর ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বলেন -
“হে আল্লাহ, তাঁকে [ইবন আব্বাস(রা.)] কিতাবের (কুরআনের) জ্ঞান দান করুন।“ [3]
ইবন আব্বাস(রা.) এ আয়াতের ব্যাপারে বলেনঃ “...আমি তাদের অংশ কমিয়ে দেব যাদের দাবি কিছুটা দুর্বল। এই ধরণের অংশীদার হচ্ছে কন্যাগণ ও ভগ্নিগণ।” [4]
অর্থাৎ, ইবন আব্বাস(রা.) এর মতে কুরআনে উল্লেখিত ওয়ারিসদের সম্পত্তির ভগ্নাংশগুলোর যোগফল পাশাপাশি যোগ করে ১ হওয়া জরুরী নয়। কুরআনে যেভাবে ভগ্নাংশ দেয়া আছে, ঠিক সেভাবেই বণ্টন করে দেয়া হবে। যাদের দাবি কিছুটা কম [5], যেমনঃ কন্যাগণ ও ভগ্নিগণ – তাদেরকে অবশিষ্টাংশ দেয়া হবে। ফলে কোন আপাত অসঙ্গতি থাকছে না। নিশ্চয়ই আল কুরআন সকল অসঙ্গতির ঊর্ধ্বে।
অনুরূপ একটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন প্রখ্যাত দাঈ ড. জাকির নায়েক। তাঁর মতে, যেসব ওয়ারিসগণ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত, তাদেরকে আগে সম্পদ প্রদান করা হবে। যাদের দাবি কম, তাদেরকে পরে দেয়া হবে। পাটিগণিতের নিয়মে সরল অংক করার সময়ে প্রথমে ব্রাকেট অফ করতে হয়, এরপর ভাগের হিসাব, এরপর গুণের হিসাব, এরপর যোগের হিসাব এবং সর্বশেষে বিয়োগের হিসাব করতে হয়। একইভাবে ইসলামের সম্পত্তি বণ্টন আইনেও প্রথমে স্বামী-স্ত্রীর, এরপরে বাবা-মায়ের অংশের হিসাব করতে হবে। এরপর যা বাকি থাকবে তা সন্তানরা পাবে। এভাবে হিসাব করা হলে কখনোই যোগফল ১ এর বেশি হবে না। ড. জাকির নায়েকের আলোচনা দেখুন এখান থেকে--
তবে বণ্টন পদ্ধতির সুবিধার জন্য সাহাবীগণ একটি বিশেষ পদ্ধতির উপরে একমত হয়েছিলেন। খলিফা থাকাকালীন সময়ে উমার(রা.) সাহাবায়ে কিরাম(রা.) এর নিকট এটি উত্থাপন করলে তাঁরা একটি পদ্ধতির উপর ইজমাবদ্ধ বা একমত হন। ইসলামী শরিয়তে এই পদ্ধতিটি ‘আওল’ নামে পরিচিত। [6] একটি বিবরণে রয়েছে যে, পদ্ধতিটি এসেছিল আলী(রা.) এর কাছ থেকে। তিনি মিম্বরে থাকা অবস্থায় এই পদ্ধতিটি দিয়েছেন বলে একে বলা হয় ‘মাসআলা মিম্বরিয়্যা।’ [7] নিম্নে পদ্ধতিটি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
আল কুরআনের ৩ টি আয়াতে (নিসা ৪:১১, ৪:১২ ও ৪:১৭৬) কতিপয় আত্মীয়কে সম্পত্তির নির্দিষ্ট অংশ (যেমনঃ ১/৩, ২/৩, ১/৬, ১/২, ১/৪ ) প্রদানের নির্দেশ আছে। এই ওয়ারিসদের নামকরণ করা হয়েছে ‘যাবিল ফুরূদ’ বা ‘নির্ধারিত অংশীদারগণ’। কোন কোন সময় এই শ্রেণীর আত্মীয়দেরকে তাদের নির্ধারিত অংশ দিতে গেলে মূল সম্পত্তি অপেক্ষা তাদের প্রাপ্য অংশ বেশি হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, কোন ব্যক্তি ২ কন্যা, পিতা, মাতা ও এক স্ত্রী রেখে মারা গেল। এখানে সুরা নিসার বিধান অনুযায়ী মোট সম্পত্তির ২/৩ অংশ ২ কন্যার, ১/৬ অংশ পিতার, ১/৬ অংশ মাতার এবং ১/৮ অংশ স্ত্রীর পাবার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে ২ কন্যার ২/৩ অংশ ও পিতা-মাতার (১/৬ + ১/৬ = ১/৩ ) অংশ দিলেই সমস্ত সম্পত্তি নিঃশেষ হয়ে যায়, স্ত্রীর জন্য কিছু অবশিষ্ট থাকে না। অংশীদারদের অর্থাৎ ২ কন্যা, পিতা, মাতা ও স্ত্রীর প্রাপ্য অংশের সমষ্টি ২/৩ + ১/৬ + ১/৬ + ১/৮ = (১৬+৪+৪+৩)/( ২৪) = ২৭/২৪ অংশ। এই জটিলতার সমাধাণের জন্য ‘আওল’ পদ্ধতি অনুযায়ী হরকে লবের সমান অর্থাৎ ২৭ ধরে হিসাব করা হয়, ফলে সম্পত্তি সকলকে বণ্টন করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে ২ কন্যা, পিতা, মাতা ও স্ত্রীর অংশ হবে যথাক্রমে ১৬/২৭, ৪/২৭, ৪/২৭, ৩/২৭। এর সমষ্টি হবে ২৭/২৭ = ১। এই হিসাব পদ্ধতির মাধ্যমে সকল ওয়ারিসই সমানুপাতিকভাবে সম্পদের অংশ লাভ করে। বণ্টনরীতি approximate (যথাযথপ্রায়)ভাবে কুরআনের বিধানের সমান থাকে।
‘আওল’ পদ্ধতির একটি উদাহরণ এখানে দেখানো হয়েছে। এ রকম আরো অনেকগুলো ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে যেসব ক্ষেত্রে এভাবে হিসাব করার প্রয়োজন হয়। আগ্রহীদের জন্য সেই ক্ষেত্রগুলো এখানে উল্লেখ করা হলঃ
উৎসঃ 'ইসলামী বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড' (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), পৃষ্ঠা ৯৪-৯৬ [8]
যে সমস্ত খ্রিষ্টান মিশনারীরা আওল পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাদের ধর্মগ্রন্থে কি সম্পদ বণ্টনের ব্যাপারে এমন ইনসাফভিত্তিক কোন বিধান আছে?
তর্কপ্রিয় ইসলামবিরোধীরা আরেকটি প্রশ্ন তুলতে পারে, আর তা হচ্ছেঃ পদ্ধতিটি এসেছে সাহাবীদের কাছ থেকে, মুসলিমরা “কুরআন বাদ দিয়ে”(!) কেন সাহাবীদের পদ্ধতি গ্রহণ করবে?
এর উত্তর হচ্ছেঃ সাহাবীদের থেকে পদ্ধতি গ্রহণ করা মোটেও কুরআনবিরোধী কাজ নয়। বরং কুরআন থেকেই এর হুকুম পাওয়া যায়। সাহাবীদের ইজমা বা ঐক্যমত ইসলামী শরিয়তের দলিল। কুরআনের বহু আয়াতে সাহাবীদের ঈমান ও আদর্শের প্রশংসা করা হয়েছে। [9] কুরআনের নির্দেশ হচ্ছে রাসুল(ﷺ) এর সুন্নাহ অনুসরণ। [10] আবার রাসুল(ﷺ) এর সুন্নাহ থেকেই আমরা সাহাবাগণের সুন্নাহ অনুসরণের নির্দেশ পাই।
সুন্নাতে সাহাবা বা সাহাবী(রা.)গণের আদর্শ অনুসরণের ব্যাপারে রাসুল(ﷺ) বলেছেন—
‘’আমি আল্লাহকে ভয় করার জন্য তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি। আর (জেনে রাখ) তোমাদের ওপর যদি কোনো হাবশী(আবিসিনিয় নিগ্রো) গোলামকেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, তবু তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করে চলবে। আর তোমাদের কেউ জীবিত থাকলে সে বহু মতভেদ দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নাত এবং সঠিক নির্দেশনাপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত অনুসরণ করাই হবে তোমাদের অবশ্য কর্তব্য। এ সুন্নাতকে খুব দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবে এবং সমস্ত অবৈধ বিষয়কে এড়িয়ে চলবে। কেননা, প্রতিটি ‘বিদআত’ (দ্বীনী বিষয়ে নব উদ্ভাবন) হচ্ছে ভ্রষ্টতা।” [11]
ইমাম আবু হানিফা(র.) বলেছেনঃ “আমি কুরআনের উপর নির্ভর করি। কুরআনে যা পাই না, তার জন্য সুন্নাতে রাসুল(ﷺ) এর উপর নির্ভর করি। যদি কোন বিষয়ে কুরান ও সুন্নাতে রাসুল(ﷺ) এ না পাই, তাহলে আমি সাহাবীদের মতামত ও শিক্ষার উপর নির্ভর করি, তাঁদের মতামত ও শিক্ষার বাইরে যাই না।” [12]
কাজেই আল কুরআনের হুকুম অনুসরণ করেই সকল আপাত সমস্যার সমাধাণ হল।
এবং আল্লাহ ভালো জানেন।
তথ্যসূত্রঃ
[1] আল কুরআন, নিসা ৪:১১-১২
[2] আল কুরআন, নিসা ৪:১৭৬
[3] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৩৪৮৫
[4] সাইয়িদ শারীফ জুরজানী, আশ শারিফিয়্যা, পৃষ্ঠা ৫৫
[5] মেয়েরা পিতা-স্বামীর উভয়ের থেকেই সম্পদ লাভ করে
[6] “Objection from an atheist to the ‘awl process in cases of inheritance” –islamQA (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)
https://islamqa.info/en/131556
[7] “ইসলামী বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড” (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), পৃষ্ঠা ৯৪
[8] আওলের ক্ষেত্রগুলো খুব সহজে হিসাব করা যেতে পারে এই অনলাইন ‘উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর’গুলোর দ্বারাঃ-
“Islamic Inheritance Calculator”
“উত্তরাধিকার । সহজেই সম্পত্তির হিসাব” (এটুআই, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)
[9] দেখুনঃ সুরা আলি ইমরান ৩:১০১.১১০,১৭২-১৭৪; সুরা আনফাল ৮:৬২,৭৪; সুরা তাওবা ৯:৮৮-৮৯,১০০,১১৭; সুরা ফাতহ ৪৮:১৮-১৯,২৬,২৯; সুরা হুজুরাত ৪৯:৭; সুরা হাদিদ ৫৭:১০; সুরা হাশর ৫৯:৮-১০
[10] দেখুনঃ সুরা আলি ইমরান ৩:৩১; সুরা আহযাব ৩৩:২১; সুরা হাশর ৫৯:৭
[11] আবু দাউদ ও তিরমিযী; রিয়াদুস সলিহীন; বই ১, হাদিস নং : ১৫৭
[12] ■ ‘আল ইন্তেকা’- ইবন আব্দুল বারর, পৃষ্ঠা ১৪২, ১৪৩
■ শরিয়তের দলিল হিসাবে সুন্নাতে সাহাবা বা সাহাবী(রা.)গণের আদর্শ অনুসরণের ব্যাপারে আরো বিস্তারিত প্রমাণের জন্য খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(র) এর ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকিদা’ বইয়ের ৫৮-৬২ পৃষ্ঠা এবং ‘এহইয়াউস সুনান’ বইয়ের ১০২-১০৭ পৃষ্ঠা দেখা যেতে পারে