প্রশ্নঃ
কারো কাছে যদি ইসলামের ভুল মেসেজ যাওয়ার কারণে যদি সে ইসলাম গ্রহণ না করে বা ভুলটাই গ্রহণ করে, এবং সে অবস্থাতেই মৃত্যুবরণ করে - তবে তার হুকুম কী?
উত্তরঃ
বর্তমান সময়ে এমন ঘটনা ঘটা বিরল একটি ব্যাপার। হয়তো পৃথিবীতে এমন একটি বা দুইটি ঘটনা পাওয়া যেতে পারে। এর বেশি পাওয়া যাওয়া সম্ভব বলে আমার (লেখক) মনে হয় না। কেননা, আজ আমাদের কাছে জ্ঞানার্জন কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন তথ্য জানবার জন্য এতো মাধ্যম এসেছে যে, ইসলামের নাম শোনেনি বা ইসলামের বার্তা পায়নি এমন মানুষ পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আর যদি ইসলামের ব্যাপারে ভুল কিছুও শুনে থাকে, তবুও একটু চেষ্টা করলে ইসলামের সঠিক বার্তা সন্ধান করে নেয়া অসম্ভব কিছু না।
এরপরেও যদি এমন কেউ থাকে যার কাছে –
☛ ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছায়নি
☛ কিংবা তার জন্য ইসলামের সঠিক দাওয়াত জানা সম্ভব ছিল না
☛ হয়তো দাওয়াত একেবারেই পৌছেনি,
☛ অথবা পৌঁছিয়েছিল তবে তা ইসলামের নামে বিকৃত দাওয়াত –
তবে তাদের বিধানের ব্যাপারে ইসলাম ওয়েবে এমন এক প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করা হয়েছে—
أما إن كانوا عاجزين عن البحث ومعرفة الإسلام، فهؤلاء حكمهم حكم من لم تبلغهم دعوة الإسلام.
رابعًا: من بلغتهم دعوة الإسلام مشوهة، ولم يتمكنوا من معرفة حقيقة الدعوة، فهم معذورون كمن قبلهم.
أما إن كانوا متمكنين من البحث والتحري عن الحقيقة، فهم مفرطون بتركهم البحث، فلا يعذرون بذلك.
অর্থঃ “...অতপর যারা ইসলাম জানতে ও অনুসন্ধান করতে অক্ষম, তাদের হুকুম সে ব্যক্তিদের ন্যায় যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি।
চতুর্থতঃ যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত বিকৃতভাবে পৌঁছিয়েছে, এবং যাদের পক্ষে সঠিক দাওয়াত জানা সম্ভব ছিল না, তারা পূর্ববর্তী ব্যক্তিদের ন্যায় মাজুর বা অক্ষম হিসাবে বিবেচিত হবে।
তবে যদি তাদের পক্ষে সঠিক ইসলাম তালাশ করা ও জানা সম্ভব হয় - কিন্তু তারা জানার চেষ্টার ব্যাপারে শিথিলতা প্রদর্শন করে- তাহলে তাঁদেরকে মাজুর বা অক্ষম বলে বিবেচিত করা হবে না।”
[ফাতাওয়া নং : ৬৪০০১৩; https://is.gd/h5Jz1b ]
শায়েখ আতিয়াহ সাকর(হাফি.) এই ব্যাপারে লেখেন,
و علي هذا نقول ان من لم تبلغه الدعوة اصلا او بلغته مشوهة او... ... ... فهو معذور
অর্থঃ এই কথার ভিত্তিতে আমরা বলি, যার কাছে একেবারেই ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি বা বিকৃতিভাবে পৌঁছিয়েছে অথবা … … , তবে সে মাজুর বা অক্ষম হিসাবে বিবেচিত হবে।
[মাওসুয়াতুল আহসানুল কালাম ফিল ফাতাওয়া ও আহকাম-১/১৩৯]
এ প্রসঙ্গে আরো পড়ুনঃ
জান্নাতীদের আমল করা কাউকে কি শুধুমাত্র তাকদিরের প্রভাবে জোর করে জাহান্নামী বানিয়ে দেয়া হয়?
তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
আল্লাহ যদি আগে থেকেই সব কিছু জেনে থাকেন তাহলে কেন মানুষের পরীক্ষা নেন?
যার উপর নূরের আলোকপ্রভা পড়েছে সে সৎপথ পেয়েছে যার উপর পড়েনি সে পথভ্রষ্ট হয়েছে–এই হাদিসের ব্যাখ্যা
যে মেয়েকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয় এবং যে কবর দেয় - উভয় কি জাহান্নামী?