প্রশ্নঃ
একটি হাদিসে বলা হয়েছে আল্লাহর নুর যাদের উপর পড়েছে কেবল তারাই হেদায়েত পাবে আর যাদের উপর পড়বে না তারা পথভ্রষ্ট হবে। এমনটা হয়ে থাকলে মানুষের দোষ কী? সে তো যে কাজই করুক আল্লাহর নুর না পড়ার জন্য সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে!
জবাবঃ
এই সংক্রান্ত একটি হাদিস রয়েছে তিরমিযি গ্রন্থে।
قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ خَلَقَ خَلْقَهُ فِي ظُلْمَةٍ فَأَلْقَى عَلَيْهِمْ مِنْ نُورِهِ فَمَنْ أَصَابَهُ مِنْ ذَلِكَ النُّورِ اهْتَدَى وَمَنْ أَخْطَأَهُ ضَلَّ فَلِذَلِكَ أَقُولُ جَفَّ الْقَلَمُ عَلَى عِلْمِ اللَّهِ "
অর্থঃ “আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ(ﷺ)কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা’আলা অন্ধকারে তার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি এদের উপর তার নূরের আলোকপ্রভা ঢেলে দিয়েছেন। সুতরাং সেই নূরের আলোকপ্রভা যে ব্যক্তির উপর পড়েছে সে সৎপথ পেয়েছে এবং যে ব্যক্তির উপর তা পড়েনি সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এ জন্যেই আমি বলিঃ আল্লাহ তা’আলার ইলম অনুযায়ী কলম (তাকদীরের লিখন) শুকিয়ে গেছে।” [1]
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম বায়হাকী(র.) তাঁর ‘আল ক্বাদা' ওয়াল ক্বাদার’ কিতাবে বলেছেনঃ
بَابُ ذِكْرِ الْبَيَانِ أَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ خَلَقَ خَلْقَهُ فِي ظُلْمَةٍ، ثُمَّ أَلْقَى عَلَيْهِمْ مِنْ نُورِهِ فَمَنْ عَلِمَ اللَّهُ إِيمَانَهُ وَأَمَرَ الْقَلَمَ فَجَرَى بِهِ وَكُتِبَ مِنَ السُّعَدَاءِ، أَصَابَهُ مِنْ ذَلِكَ النُّورِ فَاهْتَدَى، وَمَنْ عَلِمَ اللَّهُ كُفْرَهُ وَأَمَرَ الْقَلَمَ فَجَرَى بِهِ وَكُتِبَ مِنَ الْأَشْقِيَاءِ أَخْطَأَهُ ذَلِكَ النُّورُ فَضَلَّ، قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {أَوَمَنْ كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَنْ مَثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ لَيْسَ بِخَارِجٍ مِنْهَا} وَقَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: {اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ} [البقرة: ٢٥٧] ، وَقَالَ: {أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ} [الجاثية: ٢٣]
অর্থঃ “অধ্যায়ঃ এই বর্ণনার ব্যাপারে আলোচনাঃ "মহান আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টিকূলকে অন্ধকারে সৃষ্টি করেছেন।"
অতঃপর তিনি তাদের উপর তাঁর নুর ঢেলে দিলেন। আল্লাহ তো তার ঈমানের ব্যাপারে (আগে থেকেই) জানেন। তিনি কলমকে নির্দেশ দেন, কলম সে অনুযায়ী অগ্রসর হয় এবং সে সৌভাগ্যবান হিসেবে লিখিত হয়ে যায়। এ নূরের কিছু অংশ যার উপরই পড়েছে, সে হেদায়াত লাভ করেছে।
আর আল্লাহ যার কুফরের ব্যাপারে জানেন, তিনি (সে অনুযায়ী) কলমকে নির্দেশ দেন। সে হতভাগা হিসেবে লিখিত হয়ে যায়। এ নুর যার উপর পড়েনি সে পথভ্রষ্ট হয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেনঃ
أَوَ مَن كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَن مَّثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ لَيْسَ بِخَارِجٍ مِّنْهَا
অর্থঃ "আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে এমন একটি আলো দিয়েছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে, যে অন্ধকারে রয়েছে-সেখান থেকে বের হতে পারছে না? ..." (সুরা আন'আম ১২২)
মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ
অর্থঃ "যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। ..." (সুরা বাকারাহ ২৫৭)
তিনি আরো বলেনঃ
أَفَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ وَأَضَلَّهُ اللَّهُ عَلَى عِلْمٍ
অর্থঃ "তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে তার খেয়াল-খুশীকে নিজের উপাস্য করে নিয়েছে? আল্লাহ জেনেশুনেই ওকে বিভ্রান্ত করেছেন..." (সুরা জাছিয়াহ ২৩) [2]
ইমাম বায়হাকী(র.) এর এই আলোচনা থেকে বোঝা গেলো আল্লাহ তা’আলা তাঁর ইলমের জন্য পূর্ব থেকেই জানেন কে ঈমান আনবেন আর কে আনবে না। আল্লাহ তা’আলা সর্বজ্ঞানী, সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং কর্মের দিক থেকে স্বাধীন। সেভাবেই আল্লাহর কলম থেকে লিপিবদ্ধ হয় এবং আল্লাহর নুর বান্দাদের উপর পতিত হয়। বিষয়টা এমন না যে মানুষের কর্মের কোনো প্রভাবই নেই এবং ভালো মানুষকে জোর করে পথভ্রষ্ট করে জাহান্নামী বানানো হয়! মানুষের ব্যাপারে পূর্বলিখন বা তাকদিরের প্রভাব যেমন সত্য তেমনি মানুষের কর্মের প্রভাবও সত্য। তাকদিরের প্রভাব অস্বীকার করা কাদারিয়া আকিদা এবং মানুষের কর্মের প্রভাব অস্বীকার করা জাবারিয়া আকিদা। আহলুস সুন্নাহর আকিদা হচ্ছে কুরআন-সুন্নাহর আকিদা। যেখানে মানুষের কর্ম এবং পূর্বলিখন উভয়ের প্রভাবেরই উল্লেখ আছে। ইসলামের শত্রুরা অনেক সময়ে জাবারিয়া ধরণের আকিদার দ্বারা মুসলিমদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। অথচ তা ভ্রান্ত আকিদা। মানুষের কর্মের প্রভাবের ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহর অনেক স্থানে উল্লেখ আছে। সেসব স্থানে উল্লেখ আছে মানুষকে তার ভালো কাজের বদৌলতে জান্নাতে দাখিল করা হয় আর খারাপ কাজের জন্য জাহান্নামে দেয়া হয়।
মানুষ তার কর্মের কারণে কিভাবে পুরষ্কারের যোগ্য হয় এই ব্যাপারে আল কুরআনে বলা হয়েছে—
“ তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা আমল করে তাদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান।” [3]
“ আর পুরুষ কিংবা নারীর মধ্য থেকে যে সৎকাজ করবে এমতাবস্থায় যে, সে মু’মিন(বিশ্বাসী), তাহলে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি খেজুর বিচির আবরণ পরিমাণ জুলুমও করা হবে না।” [4]
“তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে, কখনও তা শেষ হবে না। যারা ধৈর্য ধরে, আমি তাদেরকে প্রাপ্য প্রতিদান দেব তাদের উত্তম কর্মের প্রতিদানস্বরূপ যা তারা করত। যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং যে ঈমানদার— সে পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত।” [5]
“যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্ববাসীর উপর প্রাচুর্যশীল। আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজগুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব।” [6]
“ নিশ্চয়ই যারা বলে, আমাদের প্রভু আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না। তারাই জান্নাতের অধিকারী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল। ” [7]
“ এটা তোমাদের প্রতিদান। তোমাদের প্রচেষ্টা স্বীকৃতি লাভ করেছে।” [8]
পক্ষান্তরে, মানুষ তার কর্মের জন্য পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হবে।
“বস্তুতঃ যারা মিথ্যা জেনেছে আমার আয়াতসমূকে এবং আখিরাতের সাক্ষাতকে, তাদের যাবতীয় কাজকর্ম ধ্বংস হয়ে গেছে। তেমন বদলাই সে পাবে যেমন আমল করত।” [9]
“ পার্থিব জীবনে সামান্যই লাভ, অতঃপর আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন আমি তাদেরকে আস্বাদন করাব কঠিন আযাব-তাদেরই কৃত কুফরীর বদলাতে।” [10]
“ যেদিন আমি পর্বতসমূহকে পরিচালনা করব এবং তুমি পৃথিবীকে দেখবে একটি উম্মুক্ত প্রান্তর এবং আমি মানুষকে একত্রিত করব অতঃপর তাদের কাউকে ছাড়ব না। তারা তোমার প্রভুর [আল্লাহ] সামনে পেশ হবে সারিবদ্ধ ভাবে এবং বলা হবেঃ তোমরা আমার কাছে এসে গেছ; যেমন তোমাদেরকে প্রথম বার সৃষ্টি করেছিলাম। না, তোমরা তো বলতে যে, আমি তোমাদের জন্যে কোন প্রতিশ্রুত সময় নির্দিষ্ট করব না। আর আমলনামা সামনে রাখা হবে। তাতে যা আছে; তার কারণে তুমি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবে। তারা বলবেঃ “হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা। এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয়নি-সবই এতে রয়েছে!” তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। তোমার প্রভু কারও প্রতি জুলুম করবেন না।” [11]
“হে অপরাধীরা! আজ তোমরা আলাদা হয়ে যাও। হে আদম সন্তান! আমি কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি যে, শয়তানের দাসত্ব করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? এবং আমার দাসত্ব কর। এটাই সরল পথ। শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বোঝোনি? এই সে জাহান্নাম, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হতো। তোমাদের কুফরের কারণে আজ এতে প্রবেশ কর।” [12]
মানুষের কর্মের ভূমিকা সম্পর্কে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়া(র.) বলেছেনঃ
“মানুষ প্রকৃতই কর্ম করে, এবং আল্লাহ তাদের কর্মের স্রষ্টা। কোনো ব্যক্তি মু’মিন অথবা কাফির হতে পারে, পূন্যবান কিংবা পাপী হতে পারে, সলাত আদায় ও সিয়াম পালন করতে পারে –মানুষের তার কর্মের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং তার নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি রয়েছে। এবং আল্লাহ তার এ নিয়ন্ত্রণ ও ইচ্ছাশক্তির স্রষ্টা। যেরূপ আল্লাহ বলেছেন—“[এটা] তার জন্যে, যে তোমাদের মধ্যে সরল পথে চলতে চায়। তোমরা ইচ্ছা করবে না, যদি জগতসমূহের প্রভু আল্লাহ ইচ্ছা না করেন।” (সুরা তাকওয়ির ৮১:২৮-২৯) [13]
এ বিষয়ে শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উসাইমিন(র.) বলেছেনঃ
“...মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি আছে যেমন মানুষের খাওয়া ও পান করার ক্ষমতা আছে। যেমনঃ ফজরের সলাতের সময় মানুষ (ওযু করতে) পানির দিকে যায় নিজ ইচ্ছায়, যখন ঘুম আসে, তখন মানুষ বিছানায় যায় নিজ ইচ্ছায়। ...এভাবে প্রতিটি কর্মের ব্যাপারেই মানুষের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি আছে। যদি তা না হত, তাহলে পাপীকে শাস্তি দেয়া অন্যায্য হত। মানুষকে এমন কিছুর জন্য কিভাবে শাস্তি দেয়া যেতে পারে যার উপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই? যদি তা না হত, তাহলে কিভাবে পূণ্যবানকে পুরষ্কার দেয়া যেতে পারে, যেখানে ঐ কর্মের উপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না? ...কাজেই মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি আছে তবে সে আল্লাহর নির্ধারণকৃত তাকদিরের বাইরে কোনো কাজ করে না কারণ তার কর্মের উপর আল্লাহর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু আল্লাহ মানুষকে বাধ্য করেন না। মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি আছে এবং এ অনুযায়ী মানুষ কাজ করে।
যদি নিজের ইচ্ছার বাইরে মানুষ কোনো কাজ করে ফেলে, তবে এ জন্য তাকে দায়ী করা হয় না। আল্লাহ গুহাবাসীদের(আসহাবে কাহফ) ব্যাপারে বলেছেনঃ “তুমি মনে করবে তারা জাগ্রত, অথচ তারা নিদ্রিত। আমি [আল্লাহ] তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাই ডান দিকে ও বাম দিকে। ...” (সুরা কাহফ ১৮:১৮)
এখানে তাদের পার্শ্ব পরিবর্তন করার কর্মটি আল্লাহর দিকে ন্যস্ত করা হয়েছে কারণ তারা ছিল ঘুমন্ত এবং তাদের নিজেদের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আল্লাহর রাসুল(ﷺ) বলেছেন, “যদি কেউ ভুলক্রমে খায় ও পান করে তবে সে যেন তার সিয়াম(রোজা) পূর্ণ করে নেয়, কেননা আল্লাহ তা‘আলাই তাকে এ পানাহার করিয়েছেন।” [বুখারী : ১৯৩৩; মুসলিম : ১১৫৫] এখানে খাওয়া ও পান করার কর্মগুলো আল্লাহর দিকে ন্যস্ত করা হয়েছে কারণ মানুষ রোজা অবস্থায় ভুলবশত এ কাজগুলো করে ফেলে। সে নিজে থেকে খেয়ে বা পান করে নিজের রোজা নষ্ট করবার সিদ্ধান্ত নেয়নি।” [14]
ইসলামী আকিদা অনুসারে তাকদিরের প্রভাব সত্য এবং মানুষের কর্মের প্রভাবও সত্য। অতএব কেউ যদি অভিযোগ আনে ইসলামে মানুষের কর্মের কোনো প্রভাব নেই শুধুমাত্র পূর্বনির্ধারণের জন্যই মানুষ পুরষ্কার বা শাস্তির যোগ্য হয় – তার এই দাবি সম্পূর্ণ ভুল।
এ প্রসঙ্গে আরো পড়ুনঃ
জান্নাতীদের আমল করা কাউকে কি শুধুমাত্র তাকদিরের প্রভাবে জোর করে জাহান্নামী বানিয়ে দেয়া হয়?
কেউ যদি ইসলামের ভুল বার্তা পেয়ে মুসলিম না হয়েই মারা যায় তবে তার কী হবে?
তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
আল্লাহ যদি আগে থেকেই সব কিছু জেনে থাকেন তাহলে কেন মানুষের পরীক্ষা নেন?
যে মেয়েকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয় এবং যে কবর দেয় - উভয় কি জাহান্নামী?
তথ্যসূত্রঃ
[1] সুনান আত তিরমিজী, হাদিস নং : ২৬৪২ (সহীহ)
[2] ‘আল ক্বাদা' ওয়াল ক্বাদার’ – বায়হাকী, পৃষ্ঠা ১৩৬
https://shamela.ws/book/13053/49
অথবা আর্কাইভকৃতঃ https://archive.is/t9fsm
আরো দেখুনঃ https://islamqa.info/ar/160145/
[3] আল কুরআন, সুরা আলি ইমরান ৩ : ১৩৬
[4] আল কুরআন, সুরা নিসা ৪ : ১২৪
[5] আল কুরআন, সুরা নাহল ১৬ : ৯৬-৯৭
[6] আল কুরআন, সুরা আনকাবুত ২৯ : ৬-৭
[7] আল কুরআন, সুরা আহকাফ ৪৬ : ১৩-১৪
[8] আল কুরআন, সুরা দাহর (ইনসান) ৭৬ : ২২
[9] আল কুরআন, সুরা আ’রাফ ৭ : ১৪৭
[10] আল কুরআন, সুরা ইউনুস ১০ : ৭০
[11] আল কুরআন, সুরা কাহফ ১৮ : ৪৭-৪৯
[12] আল কুরআন, সুরা ইয়াসিন ৩৬ : ৫৯-৬৪
[13] আল ওয়াসিত্বিয়া মা’আ শারহ হাররাস, পৃষ্ঠা ৬৫;
“Is man’s fate pre-destined or does he have freedom of will?” (islamQA - Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)
[14] ‘Are we Forced or do we have a Free Will’ by Shaykh Muhammad Ibn Salih Al Uthaymeen; page 54-55
https://islamhouse.com/en/books/373557/
মূল আরবির জন্য দেখুনঃ শারহ হাদিস জিব্রীল [শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উসাইমিন(র.)]