নাস্তিক প্রশ্নঃ যুলকারনাইন সূর্যের অস্তাগমন(অর্থাৎ সর্বপশ্চিম) স্থলে পৌঁছান যেখানে সূর্য এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যায় (Quran 18:86), এরপর তিনি অন্য এক পথ ধরেন এবং সূর্যের উদয় (অর্থাৎ সর্বপূর্ব) স্থলে পৌঁছান যা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হয় যারা সূর্যের কাছাকাছি হওয়ায় তাপ থেকে কোন আঁড়াল পায় না (Quran 18:89-90) ! এর থেকেই কি বোঝা যায় না যে পৃথিবী সমতল, যার দুই সর্বশেষ প্রান্ত আছে?
উত্তরঃ আল কুরআনে বলা হয়েছেঃ
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ وَوَجَدَ عِندَهَا قَوْمًا ۗ قُلْنَا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِمَّا أَن تُعَذِّبَ وَإِمَّا أَن تَتَّخِذَ فِيهِمْ حُسْنًا
অর্থঃ অবশেষে সে যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌঁছালো; তখন সে সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখল এবং সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারো অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারো। [1]
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
অর্থঃ অবশেষে সে যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌঁছালো, তখন সে একে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখল, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্মরক্ষার কোন আঁড়াল আমি সৃষ্টি করিনি। [2]
পৃথিবী গোল নাকি সমতল এ ব্যাপারে কুরআন কী বলে?
আল কুরআনে আল্লাহ তা’আলা ৭ আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন ( কুরআন ৬৭ : ৩, ৭১ : ১৫) এ সংক্রান্ত আয়াতগুলোর আলোচনায় আল বিকাঈ(র.) তাঁর ‘নাযমুদ দুরার ফি তানাসুবুল আয়াত ওয়াস সুয়ার’ (তাফসির বিকাঈ)-এ বলেছেন,
“আয়াতে আসমানসমূহকে যথাযথ স্তর হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এক স্তরের উপর আরেক স্তর -যা নির্দেশ করে যে এগুলো প্রতিসম। এটা কেবল তখনই সম্ভব হতে পারে যদি পৃথিবী গোলাকার হয় এবং ১ম আসমান পৃথিবীকে ঠিক সেভাবে বেষ্টন করে রাখে যেভাবে ডিমের খোসা ডিমকে সব দিক থেকে বেষ্টন করে রাখে। একইভাবে ২য় আসমানও ১ম আসমানকে বেষ্টন করে রাখে। এভাবেই চলতে থাকে যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহর আরশ সব কিছুকে বেষ্টন করে। এর মধ্যে আরশের সবচেয়ে নিকটে হচ্ছে কুরসী যা আরশের তুলনায় মরুভুমির মধ্যে একটি আংটির মতো। কাজেই যা কিছু কুরসীর নিচে আছে, সেগুলো আর কী রকমেরই বা হতে পারে? প্রতিটি আসমান একে অন্যের উপরে সমান অনুপাতে আছে। এটি জ্যোতির্বিদদের দ্বারাও প্রতিষ্ঠিত তথ্য। এবং শরিয়তের কোনো তথ্য এর সাথে সাংঘর্ষিক বলে প্রমাণিত নয় বরং নস (কুরআন-সুন্নাহর পাঠাংশ) দ্বারা এর সত্যতারই ইঙ্গিত পাওয়া যায়।” [3]
আল কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহর প্রাচীন আলিমদের ইজমা বা ঐক্যমত ছিল যেঃ পৃথিবী গোল।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়া(র.) বর্ণনা করেছেনঃ আবুল হুসাইন ইবনুল মুনাদি(র.) {ইমাম আহমাদ(র.) এর ছাত্রের ছাত্র } বলেছেন,
وكذلك أجمعوا على أن الأرض بجميع حركاتها من البر والبحر مثل الكرة . قال : ويدل عليه أن الشمس والقمر والكواكب لا يوجد طلوعها وغروبها على جميع من في نواحي الأرض في وقت واحد ، بل على المشرق قبل المغرب
অর্থঃ “...একইভাবে তাঁরা (আলেমগণ) একবাক্যে একমত হয়েছেন যে, ভুপৃষ্ঠ এবং সমুদ্র ধারণকারী পৃথিবী একটি গোলকের ন্যায়। তিনি বলেন, এর ইঙ্গিত তো পাওয়া যায় এই ব্যাপারটি থেকে - সূর্য, চন্দ্র এবং তারকারা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে একই সাথে উদয় ও অস্ত যায় না। বরং এটি (উদয়-অস্ত) পশ্চিম দিকের চেয়ে পূর্বদিকে আগে ঘটে।” [4]
আবু মুহাম্মাদ ইবন হাজম(র.) বলেছেনঃ
وهذا حين نأخذ إن شاء الله تعالى في ذكر بعض ما اعترضوا به ، وذلك أنهم قالوا : إن البراهين قد صحت بأن الأرض كروية ، والعامة تقول غير ذلك ، وجوابنا وبالله تعالى التوفيق : أن أحداً من أئمة المسلمين المستحقين لاسم الإمامة بالعلم رضي الله عنهم لم ينكروا تكوير الأرض ، ولا يحفظ لأحد منهم في دفعه كلمة ، بل البراهين من القرآن والسنة قد جاءت بتكويرها ... "
অর্থঃ (পৃথিবী গোল এ কথার) বিরুদ্ধে যেসব যুক্তি দেয়া হয় আমরা এর কয়েকটির ব্যাপারে আলোচনা করব।
তাঁরা বলেন, পৃথিবী গোল এ ব্যাপারে ভালো প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু আম জনতা এর বিপরীত কথা বলে। আল্লাহর তাওফিকে এ ব্যাপারে আমাদের জবাবঃ মুসলিম উম্মাহর কোনো ইমাম অথবা ইলমের দ্বারা যারা ইমাম অভিধা লাভের যোগ্য (আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হোন) – তাদের কেউই এ কথা অস্বীকার করেননি যে পৃথিবী গোল। তাঁদের থেকেই কথা অস্বীকার করে কোনো বর্ণনা পাওয়া যায়নি। বরং কুরআন ও সুন্নাহ থেকে প্রমাণিত হয় যে এটি (পৃথিবী) গোল। [5]
শায়খ ইবন উসাঈমিন(র.) তাঁর ফাতাওয়া নুরুন ‘আলাদ দারব গ্রন্থে বলেছেন,
পৃথিবী গোল। এই কথার ভিত্তি হচ্ছে কুরআন, বাস্তবতা এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী।
কুরআনের প্রমাণ হচ্ছে এই আয়াতটি, যেখানে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন,
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ ۖ يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ ۖ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُّسَمًّى ۗ أَلَا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ
অর্থঃ তিনি [আল্লাহ] যথাযথভাবে আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তিনি রাতকে দিনের উপর এবং দিনকে রাতের উপর জড়িয়ে দিয়েছেন এবং নিয়ন্ত্রণাধীন করেছেন সূর্য ও চাঁদকে। প্রত্যেকে এক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চলছে। জেনে রাখ, তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল। [6]
এখানে يُكَوِّرُ শব্দটির মানে হল জড়িয়ে দেয়া (বা পেচিয়ে দেয়া) যেভাবে পাগড়ি পেচানো হয়। এটি সবাই জানে যে পৃথিবীতে রাত ও দিন একে অন্যের অনুসরণ করে। এর মানে দাঁড়ায় – পৃথিবী গোল; কেননা কোনো কিছুকে যদি অন্য কিছুর উপর পেচিয়ে দেয়া হয় এবং সেই জিনিসটি যদি পৃথিবীকে ঘিরে পেচানো থাকে, তাহলে পৃথিবীকে অবশ্যই গোল হতে হবে। [7]
এ সংক্রান্ত ফতোয়ায় শায়খ বিন বাজ(র.) বলেছেন,
“আহলুল ইলমদের (আলেমগণ) মতে পৃথিবী গোল। কেননা ইবন হাজম(র.) এবং আলেমদের আরো একটি দল এ ব্যাপারে আহলুল ইলমদের থেকে এটি (পৃথিবী) গোল বলে ইজমা বর্ণনা করেছেন। এর মানে হচ্ছে এর পুরো অংশ এমনভাবে একত্রিত আছে যে সমস্ত গ্রহটিকে একটি গোলকের মতো দেখায়। কিন্তু আমাদের প্রতি দয়াস্বরূপ আল্লাহ এর উপরিভাগকে আমাদের জন্য বিস্তৃত করেছেন, সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন এবং জীব-জন্তু ও সমুদ্র সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেছেনঃ
وَإِلَى الْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ
অর্থঃ আর পৃথিবীর দিকে, কীভাবে তা বিস্তৃত করা হয়েছে? [8]
সুতরাং একে আমাদের কাছে জন্য সমতল বলে মনে হয় যাতে এর উপর মানুষ বাস করতে পারে এবং স্বাচ্ছন্দের সাথে থাকতে পারে। এটি গোল তা এর এই সমতল হওয়ার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ কোনো গোল জিনিসের আকৃতি যদি খুব বৃহৎ হয়, তাহলে এর পৃষ্ঠ অনেক প্রসারিত হয়ে যায় (এবং সমতল বলে মনে হয়)। [9]
সূর্যের “পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যাওয়া”
যুল কারনাইন সূর্যকে পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখেছিলেন এ থেকে অনেকে দাবি করেন – “এটা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল কেননা সূর্য কখনো জলাশয়ে অস্ত যায় না। এবং পৃথিবী সমতল।”
কিন্তু তাদের এ দাবি মোটেও সঠিক নয়। তাদের দাবি সঠিক হতো যদি কুরআন বলতো যে সূর্য আসলেই পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যায়। কিন্তু কুরআন তা বলছে না, কুরআন শুধু এটাই বলছে যে –যুল কারনাইন সূর্যকে পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখেছেন। যুল কারনাইন কী দেখেছেন কুরআন এখানে সেটি বলছে। আর কুরআনে পৃথিবীকে সমতল বলা হয়েছে কিনা তা আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি।
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَغْرِبَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَغْرُبُ فِي عَيْنٍ حَمِئَةٍ
অর্থঃ অবশেষে সে যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌঁছালো; তখন সে সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখল [10]
এখানে حَمِئَةٍ শব্দের অর্থ কালো জলাভূমি অথবা কাদা। অর্থাৎ তিনি সূর্যকে তার দৃশ্যে মহাসাগরে ডুবতে দেখলেন। সাধারণত যখন কেউ সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে সূর্য অস্ত যাওয়া প্রত্যক্ষ করবে, তখনই তার এটা মনে হবে, অথচ সূর্য কখনো তার কক্ষপথ ত্যাগ করেনি। [ইবন কাসির]
এখানে সে জলাশয়কে বোঝানো হয়েছে যার নিচে কালো রঙের কাদা থাকে। ফলে পানির রঙও কালো দেখায়।এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া উচিত তা হল, কুরআন এ কথা বলেনি যে সূর্য কালো জলাশয়ে ডোবে। বরং এখানে যুল কারনাইনের অনুভূতিই শুধু ব্যক্ত করা হয়েছে। [11]
[ এ ব্যাপারে আরো পড়ুনঃ "সূর্য ঘোরে নাকি পৃথিবী ঘোরে? ইসলাম কী বলে?" আর্টিকেলের শেষাংশ ]
অভিযোগকারীরা আরো বলেছেন –“যুল কারনাইন সূর্যের উদয় (অর্থাৎ সর্বপূর্ব) স্থলে পৌঁছান যা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হয় যারা সূর্যের কাছাকাছি হওয়ায় তাপ থেকে কোন আঁড়াল পায় না।“
আল্লাহ বলেছেনঃ
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ مَطْلِعَ الشَّمْسِ وَجَدَهَا تَطْلُعُ عَلَىٰ قَوْمٍ لَّمْ نَجْعَل لَّهُم مِّن دُونِهَا سِتْرًا
অর্থঃ “অবশেষে সে যখন সূর্যের উদয়াচলে পৌঁছালো, তখন সে একে এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদয় হতে দেখল, যাদের জন্যে সূর্যতাপ থেকে আত্মরক্ষার কোন আঁড়াল আমি সৃষ্টি করিনি।” [12]
আলোচ্য আয়াতে – “যারা সূর্যের কাছাকাছি হওয়ায় তাপ থেকে কোন আঁড়াল পায় না” মোটেও এমন কথা বলা হয়নি। “সূর্যের কাছাকাছি হওয়ায়” কথাটি অভিযোগকারীরা নিজ থেকে যোগ করেছেন যাতে কুরআনের এই আয়াতটি থেকে বৈজ্ঞানিক ভুল(!) বের করা যায়। সত্যিই মানুষের কর্ম-প্রচেষ্টা বড় বিচিত্র প্রকৃতির। নিজেদেরকে “মুক্তমনা” দাবি করা কিছু মানুষ যখন একটি ধর্মকে ভুল প্রমাণ করার জন্য সে ধর্মের ধর্মগ্রন্থ নিয়ে মিথ্যাচার করে, নিজেদের কথা প্রবেশ করিয়ে বৈজ্ঞানিক ভুল(!) বের করার বৃথা চেষ্টা করে, তখন বিবেকবান মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে –এ কেমন ‘মুক্তমনা’ ?? অসৎ পন্থায় নিজেদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়াকে কি কোনক্রমেই মুক্ত মন-মানসিকতা বলা যায়? ‘মুক্তমনা’র মানে কি এখন এই দাঁড়িয়েছে-“মুক্তভাবে মিথ্যাচার করা”?
ইমাম ইবন কাসির(র) আলোচ্য আয়াতের তাফসিরে বলেনঃ যুল কারনাইন পশ্চিম থেকে ফিরে এসে পূর্ব দিকে চলতে শুরু করেন। সেখানকার অধিবাসীরা ঘরবাড়ী তৈরি করত না, সেখানে কোন গাছপালা ছিল না, রোদের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাবার জন্য সেখানে কিছু বিদ্যমান ছিল না।
এ আয়াত সম্পর্কে কাতাদাহ(র) এর উক্তি এই যেঃ সেখানে কিছুই উৎপন্ন হত না। সূর্য উদিত হবার সময়ে তারা সুড়ঙ্গে চলে যেত, সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়ার পর তারা তাদের জীবিকার অন্বেষনে দূরবর্তী ক্ষেত-খামারে ছড়িয়ে পড়ত। (তাবারী ১৮/১০০) [13]
এ ছাড়া ইসলামবিরোধীরা একটি হাদিস দেখিয়ে দাবি করতে চায় রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন সূর্য গরম পানির জলাশয়ে অস্ত যায়। ---
আবু যর (রা.) হতে বর্ণিতঃ একদা আমি সূর্যাস্তের সময় আল্লাহর নবীর পেছনে বসে গাধার পিঠে করে যাচ্ছিলাম। তখন আল্লাহর নবী জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি জানো সূর্য কোথায় অস্ত যায়?” আমি বললাম, ‘আল্লাহ এবং তাঁর নবীই ভালো জানেন।” তখন তিনি বললেন, “এটি অস্ত যায় গরম পানির জলাশয়ে।” [14]
কিন্তু হাদিসটি অত্যন্ত দুর্বল এবং দলিলযোগ্য নয়। এমন দুর্বল হাদিস দেখিয়ে কোনমতেই বলার উপায় নেই যে এটি রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর বক্তব্য। [15]
মোট কথা আলোচ্য আয়াত থেকে প্রাচীন তাফসিরকারকরাও [যেমন ইবন কাসির (র.)] এমনটি বোঝেননি যে সূর্য পঙ্কিল জলাশয়ের মধ্যে অস্ত যায়, যুল কারনাইন সূর্যের কাছাকাছি গিয়েছিলেন কিংবা পৃথিবী সমতল। আল কুরআন এবং নির্ভরযোগ্য সনদের হাদিসের আলোকে প্রাচীনকাল থেকেই মুসলিম উম্মাহর ইজমা (ঐক্যমত) এটাই যে -- পৃথিবী গোল।
আরো পড়ুনঃ "কুরআন কি পৃথিবীকে সমতল বলছে?"
তথ্যসূত্রঃ
[1]. আল কুরআন, কাহফ ১৮:৮৬
[2]. আল কুরআন, কাহফ ১৮:৯০
[3]. “Size of each heaven compared to one above it - Islam web - English”
[4]. মাজমু আল ফাতাওয়া ২৫/১৯৫
[5]. আল ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া’ ওয়ান নিহাল ২/৭৮
[6]. আল কুরআন, যুমার ৩৯ : ৫
[7]. "Consensus that the Earth is round" - islamQA (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)
https://islamqa.info/en/118698
[8]. আল কুরআন, গাশিয়াহ ৮৮ : ২০
[9]. শায়খ বিন বাজ(র.) এর ফতোয়ার ওয়েবসাইট থেকেঃ
“كروية الأرض”
https://binbaz.org.sa/fatwas/5966/كروية-الارض
অথবা
https://web.archive.org/web/20180915150849/https://binbaz.org.sa/old/37708
[10]. আল কুরআন, কাহফ ১৮ : ৮৬
[11]. সূত্রঃ কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির), ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, ২য় খণ্ড, সুরা কাহফের ৮৬নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ১৫৮৬
[12]. আল কুরআন, কাহফ ১৮ : ৯০
[13]. সূত্রঃ তাফসির ইবন কাসির(হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, মার্চ ২০১৪ সংস্করণ), ৫ম খণ্ড, সুরা কাহফের ৯০নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ১২১-১২২
[14]. সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩৯৯১
[15]. "The correct way to describe the sun is that it “prostrates beneath the Throne” and not that it “sets in a spring of warm water” - islamQA (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)