Pray for the world economy

আল কুরআনে উল্লেখিত ভ্রূণতত্ত্বের ১ম ধাপের ব্যাখ্যা কী?

নাস্তিক প্রশ্নঃ মুসলিমরা দাবি করে কুরআনের আয়াত 23:12-14 দ্বারা মানুষের এম্ব্রাইয়োলজি (অর্থাৎ ভ্রূণতত্ত্ব) ব্যাখ্যা করা যায়, যদিও ভ্রূণতত্ত্বের প্রথম ধাপ (১.ধুলা বা কাদা মাটি থেকে তৈরি) এর কোন ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই। এটা কি জোরপূর্বক কুরআনকে বিজ্ঞানময় করার অপচেষ্টা নয়?

 

উত্তরঃ কুরআন মাজিদে বলা হয়েছেঃ

 

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।

অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি।

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে ‘আলাক’{জমাট রক্ত/ঝুলে থাকা বস্তু/জোঁক আকৃতির বস্তু}রূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর ‘আলাককে মাংসপিণ্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিণ্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।” [1]

 

নাস্তিক-মুক্তমনাগণ প্রশ্ন তুলেছেন যে—সুরা মু’মিনুন ২৩:১২-১৪ আয়াতে ভ্রূণতত্ত্বের যে বিবরণ দেয়া আছে, তার প্রথম ধাপের ব্যাখ্যা নাকি মুসলিমদের জানা নেই। আরেকটি অপব্যাখ্যা; নিজ থেকে মুসলিমদের নামে কিছু একটা বানিয়ে বলে সেটাকেই আবার প্রশ্নবিদ্ধ করার আরেকটি উদাহরণ এটি। মুসলিমদের নিকট অবশ্যই সুরা মু’মিনুন ২৩:১২-১৪ আয়াতে উল্লেখিত প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের ব্যাখ্যা আছে। যে কোন মুসলিমকে জিজ্ঞেস করলেই এটা বলে দিতে পারবে, তাফসির দেখারও প্রয়োজনও নেই। এমনই সহজ ব্যাখ্যা এটি। কোন মুসলিম কখনোই এটা বলে না যে উল্লেখিত আয়াতসমূহের প্রথম ধাপ অর্থাৎ মাটির সারাংশ থেকে মানুষ সৃষ্টি ভ্রূণতত্ত্বের কোন ধাপ। এখানে ‘মানুষ’ বলতে প্রথম মানুষ আদম(আ)কে বোঝানো হয়েছে, তাঁকে সৃষ্টি করবার প্রক্রিয়া বর্ণণা করা হয়েছে, এরপর তাঁর বংশধরদের সৃষ্টির  প্রক্রিয়া আলোচিত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতের তাফসিরে ইমাম ইবন কাসির(র) একটি হাদিস উল্লেখ করেছেনঃ

 

আবু মুসা(রা) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী(ﷺ) বলেছেনঃ “আল্লাহ আদম(আ)কে এক মুষ্টি মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন যা তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন যমিন হতে গ্রহণ করেছিলেন। ...” [2]

 

এবং আল্লাহ ভালো জানেন।

 

বাস্তব কথা হচ্ছেঃ আল কুরআনে উল্লেখিত ভ্রূণতত্ত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের তথ্যের সাথে মোটেও সাংঘর্ষিক নয় বরং তা বৈজ্ঞানিক মিরাকল। কুরআনে উল্লেখিত ভ্রূণতত্ত্বের বিস্তারিত বিবরণ দেখুন এখানে। 

 

 

তথ্যসূত্রঃ

[1]  আল কুরআন, মু’মিনুন ২৩:১২-১৪

[2]  আহমাদ ৪/৪০০, আবু দাউদ ৫/৬৭, তিরমিযি ৮/২৯০; ইমাম তিরমিযি(র) এর মতে হাসান-সহীহ