নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) এর ইসরা(إسراء) ও মিরাজ (معراج) নিয়ে প্রশ্ন তোলে নাস্তিক-মুক্তমনা ও খ্রিষ্টান মিশনারিরা। তাদের বক্তব্য হচ্ছে—মুহাম্মাদ (ﷺ) ইসরা ও মিরাজের রাতে মক্কা থেকে জেরুজালেমের আল-আকসা মাসজিদ ভ্রমণ করার দাবি করেছেন। কিন্তু এটি আদৌ সম্ভব নয়, কারণ সেখানে তখন কোনো মাসজিদ বা অন্য কোনো উপাসনালয় ছিল না। তার বহু আগেই, ৭০ খ্রিষ্টাব্দে রোম সম্রাট টাইটাস ইহুদিদের মহামন্দির (Bet HaMikdash (Hebrew)/Temple Mount (English)) গুঁড়িয়ে দেয়। [1] কাজেই ইসরা ও মিরাজের রাতে মহানবী (ﷺ) আকসা মাসজিদে যাবার যে দাবি করেছেন, তা মিথ্যা (নাউযুবিল্লাহ)।
চলুন দেখি, যুক্তি-প্রমাণ ও বিবেকের কষ্টিপাথরে, কার দাবি সত্য।
‘মিরাজ’ শব্দ এসেছে আরবি উরুজুন শব্দ থেকে। উরুজুন অর্থ সিঁড়ি আর মিরাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। যেহেতু সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা হয়, সেজন্য রাসুলের (ﷺ) ঊর্ধ্বগমনকে মিরাজ বলা হয়। ‘ইসরা’ মানে হলো রাতে পরিভ্রমণ করা। পারিভাষিকভাবে এটি হলো রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর মক্কার মাসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ।
এ ব্যাপারে আল্লাহর বাণী:
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا ۚ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
“পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে [মুহাম্মাদ (ﷺ)] এক রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসায় [বাইতুল মুকাদ্দাস] যার চারপাশকে আমি করেছিলাম বরকতময়, তাঁকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।”[2]
প্রথমে আমরা জেনে নিই—ইসলামী পরিভাষায় ‘মাসজিদ’ কী। আরবি ভাষায় ‘মাসজিদ’ শব্দের মানে হচ্ছে ‘সিজদা করার স্থান’। শব্দটি এসেছে ‘সুজুদ’ থেকে, যার মানে হচ্ছে ‘সিজদা করা’। কাজেই মাসজিদকে কোনো বিশাল পিলার দ্বারা তৈরি ইসলামী শিল্পকর্মে ভরপুর স্থাপনা হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। সীমানা দ্বারা ঘেরা যেকোনো ইবাদতের স্থানই মাসজিদ হতে পারে। আবার ছোট দেয়াল কিংবা পাথর দ্বারা তৈরি স্থাপনাও মাসজিদ হতে পারে। ওই এলাকাটিকে তাত্ত্বিকভাবে ‘মাসজিদ’ বা ‘সিজদা করার স্থান’ বলা যেতে পারে।
নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) বলেন—
فُضِّلْتُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ بِسِتٍّ أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَ نُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَ أُحِلَّتْ لِيَ الْغَنَائِمُ وَ جُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ طَهُورً اَو مَسْجِدًا وَ أُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً وَ خُتِمَ بِيَ النَّبِيُّونَ
“পূর্ববর্তী অন্যান্য নবীদের ওপর ছয়টি বিষয়ে আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। আমাকে দেয়া হয়েছে অল্প শব্দে অনেক বেশি অর্থবোধক কথা বলার যোগ্যতা, আমি অনেক দূর থেকে শত্রুবাহিনীর মধ্যে ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে বিজয়প্রাপ্ত হই। গনিমত তথা পরাজিত শত্রুবাহিনীর ফেলে যাওয়া সম্পদ আমার জন্যে বৈধ করা হয়েছে। আমার জন্য সমগ্র পৃথিবীকে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম এবং মাসজিদ বানানো হয়েছে। সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য আমাকে নবী বানানো হয়েছে এবং আমার মাধ্যমেই নবী আগমনের ধারাকে সমাপ্ত করা হয়েছে।”[3]
মাসজিদুল হারাম; মক্কা, সৌদি আরব
হাদিস থেকে জানা গেলো যে, সমগ্র পৃথিবীই মসজিদের অন্তর্গত। শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালিহ আল উসাইমিন (র) তার মাসজিদ ও নামাযঘর সংক্রান্ত এক ফতোয়ায় বলেছেন, “সাধারণ অর্থ অনুযায়ী সমগ্র পৃথিবীই হচ্ছে মাসজিদ কারণ নবী (ﷺ) বলেছেন, “আমার জন্য সমগ্র পৃথিবীকে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম এবং মাসজিদ বানানো হয়েছে।” সুনির্দিষ্ট অর্থে, মাসজিদ হচ্ছে একটি স্থান যেটিকে স্থায়ীভাবে সালাতের (নামাযের) জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং স্থায়ীভাবে বণ্টন করা হয়েছে, হোক সেটি পাথর, কাদা বা সিমেন্টে বানানো অথবা তা দ্বারা না বানানো। ...”[4]
অতএব, মসজিদের জন্য স্থান হচ্ছে মুখ্য বিষয়। ছাদবিশিষ্ট ইমারত থাকুক বা না থাকুক, সেটি মুখ্য নয়। মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুল আকসা এগুলো স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকে স্থিরীকৃত স্থায়ী ইবাদতের জায়গা।
সূত্র : https://goo.gl/431nZ2
আবু যার গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সর্বপ্রথম কোন মাসজিদ নির্মিত হয়েছে? তিনি বলেন: মাসজিদুল হারাম। রাবি বলেন, আমি আবার বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেন: তারপর মাসজিদুল আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, উভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত বছরের? তিনি বলেন: চল্লিশ বছরের। এখন তোমার জন্য সমগ্র পৃথিবীই মাসজিদ। অতএব যেখানেই তোমার সালাতের ওয়াক্ত হয়, সেখানেই তুমি সালাত আদায় করতে পারো।[5]
হাদিস ও কুরআনে ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক নির্মিত হবার পূর্বে মাসজিদুল হারামের স্থানটিকেও ‘আল্লাহর ঘর’ বলে গণ্য করা হয়েছে। যদিও সেখানে তখন কোনো ইমারত ছিল না, ছাদবিশিষ্ট ঘর ছিল না। ইবরাহিম (আ.) কা‘বা ঘর নির্মাণের বহু পূর্বেই সেই স্থানটিকে আল্লাহর সম্মানিত ঘর বলে অভিহিত করা হয়েছে সুরা ইবরাহিমের ৩৭ নং আয়াতে।
“... তারপর (আল্লাহর হুকুমে) ইবরাহিম (আ.) হাযেরা (আ.) এবং তাঁর শিশু ছেলে ইসমাঈল (আ.)-কে সাথে নিয়ে বের হলেন, এ অবস্থায় যে, হাযেরা (আ.) শিশুকে দুধ পান করাতেন। অবশেষে যেখানে কা‘বা ঘর অবস্থিত, ইবরাহিম (আ.) তাঁদের উভয়কে সেখানে নিয়ে এসে মসজিদের উঁচু অংশে যমযম কূপের ওপর অবস্থিত একটি বিরাট গাছের নিচে তাদের রাখলেন। তখন মক্কায় না ছিল কোন মানুষ, না ছিল কোনোরূপ পানির ব্যবস্থা। পরে তিনি তাদের সেখানেই রেখে গেলেন। আর এছাড়া তিনি তাদের কাছে রেখে গেলেন একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর এবং একটি মশকে কিছু পরিমাণ পানি।
এরপর ইবরাহিম (আ.) ফিরে চললেন। তখন ইসমাঈল (আ.)-এর মা পিছু পিছু ছুটে আসলেন এবং বলতে লাগলেন, “হে ইবরাহিম! আপনি কোথায় চলে যাচ্ছেন? আমাদের এমন এক ময়দানে রেখে যাচ্ছেন, যেখানে না আছে কোনো সাহায্যকারী আর না আছে (পানাহারের) ব্যবস্থা।” তিনি এ কথা তাঁকে বার বার বললেন। কিন্তু ইবরাহিম (আ.) তাঁর দিকে তাকালেন না। তখন হাযেরা (আ.) তাঁকে বললেন, “এ (নির্বাসনের) আদেশ কি আপনাকে আল্লাহ দিয়েছেন?” তিনি বললেন, “হাঁ।” হাযেরা (আ.) বললেন, “তাহলে আল্লাহ আমাদের ধ্বংস করবেন না। তারপর তিনি ফিরে আসলেন।”
আর ইবরাহিম (আ.)-ও সামনে চললেন। চলতে চলতে যখন তিনি গিরিপথের বাঁকে পৌঁছলেন, যেখানে স্ত্রী ও সন্তান তাঁকে আর দেখতে পাচ্ছেন না, তখন কা‘বা ঘরের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন। তারপর তিনি দু’হাত তুলে এ দু‘আ করলেন, আর বললেন, ‘‘হে আমার প্রতিপালক! আমি আমার পরিবারের কতককে আপনার সম্মানিত ঘরের নিকট এক অনুর্বর উপত্যকায় .........যাতে আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।”[6]
ওই সময় আল্লাহর ঘরের স্থানটি জমিন থেকে টিলার ন্যায় উঁচু ছিল। বন্যা আসার ফলে তার ডানে বামে ভাঙ্গন ধরেছিল। এরপর হাযেরা (আ.) এভাবেই দিন যাপন করছিলেন...
...যখন তিনি তাঁর পিতাকে দেখতে পেলেন, তিনি দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলেন। এরপর একজন বাপ-বেটার সঙ্গে, একজন বেটা-বাপের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে যেরূপ করে থাকে, তারা উভয়ে তা-ই করলেন। এরপর ইবরাহিম (আ.) বললেন, “হে ইসমাঈল, আল্লাহ আমাকে একটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেন।” ইসমাঈল (আ.) বললেন, “আপনার প্রভু আপনাকে যা আদেশ করেছেন, তা করুন।” ইবরাহিম (আ.) বললেন, “আল্লাহ আমাকে এখানে একটি ঘর বানাতে নির্দেশ দিয়েছেন।” এই বলে তিনি উঁচু টিলাটির দিকে ইশারা করলেন। এর চারপাশে ঘেরাও দিয়ে তখনই তাঁরা উভয়ে কা‘বা ঘরের দেয়াল উঠাতে লেগে গেলেন।...”[7]
সব থেকে বড় কথা, যে আয়াতে (বনী ইসরাইল ১৭:১) মুহাম্মাদ (ﷺ) এর ইসরার কথা বলা আছে ও মাসজিদুল আকসার কথা এসেছে, ওই একই আয়াতে মাসজিদুল হারামের কথাও এসেছে।
“... যিনি নিজ বান্দাকে [মুহাম্মাদ (ﷺ)] এক রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসায় ...” [বনী ইসরাইল ১৭:১] এই আয়াতে মাসজিদুল হারামকে ‘মাসজিদ’ বলা হয়েছে অথচ এটিও তখন ছিল একটি খালি জায়গা, মাসজিদুল আকসার মতোই! সেখানে কা‘বাঘর ছিল বটে, কিন্তু এর চারদিকে কোনো ছাদবিশিষ্ট ‘মাসজিদ’ ছিল না, বরং খালি জায়গা ছিল। সে সময়ে কা‘বার খুব নিকটে মানুষজনের ঘরবাড়ি ছিল। মানুষজন কা‘বার চারদিকে ওই খালি জায়গাতেই ইবাদত করতো এবং ওই খালি জায়গাকেই উক্ত আয়াতে ‘মাসজিদ’ বলা হয়েছে।
যেসব ছিদ্রান্বেষী ওই আয়াত দেখিয়ে বলতে চায় “খালি জায়গাকে কীভাবে আল-আকসা মাসজিদ বলা যেতে পারে?”, তাদের এই তথ্যটি জেনে রাখা উচিত যে, মাসজিদুল হারামও “খালি জায়গা” ছিল এবং সিজদার ওই পবিত্র স্থানকেও আল্লাহ ‘মাসজিদ’ বলে অভিহিত করেছেন। ওই আয়াত থেকেই তাদের ভ্রান্ত দাবি খণ্ডন হয়ে যায়।
যে স্থানে সুলাইমান (আ.) এর মাসজিদ [ইহুদিদের পরিভাষায়: বাইত হা মিকদাশ, খ্রিষ্টানদের পরিভাষায়: মহামন্দির বা Temple Mount] ছিল এবং নবী-রাসুলদের অনুসারী ইহুদিরা উপাসনার জন্য জড়ো হতো, সেই এক সীমানার মধ্যেই বর্তমান আল-আকসা মাসজিদ স্থাপন করা হয়েছে। আর হুবহু সেই জায়গাটির ওপর স্থাপন করা হয়েছে সোনালি গম্বুজের ‘কুব্বাতুস সাখরা’ (Dome of Rock) মাসজিদটি।
কুব্বাতুস সাখরা মাসজিদ স্থাপন করা হয়েছে বনী ইসরাইলের কিবলাহ পাথরের ওপর। আর সীমানাদেয়াল দ্বারা ঘেরা পুরো এলাকাটিই মুসলিমদের কাছে বাইতুল মুকাদ্দাস/বাইতুল মাকদিস/আল-আকসা/হারাম আশ-শারিফ। মক্কার মাসজিদুল হারাম যেমন একটি নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে অবস্থিত, একই ভাবে আল আকসাও একটি নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে অবস্থিত। এই এলাকার মধ্যে সব জায়গাই ‘মাসজিদ’ বলে বিবেচিত হয়
মাসজিদ আল-আকসা (বাইতুল মুকাদ্দাস); জেরুজালেম, ফিলিস্তিন
আগেই বলা হয়েছে যে—‘মাসজিদ’ মূলত সিজদা করবার স্থান। ‘মাসজিদ’ হবার জন্য কোনো ইমারত থাকা জরুরি নয়। আল-আকসায় সে সময়ে কোনো ইমারত না থাকলেও সীমানাসহ জায়গাটি চিহ্নিত ছিল। মুহাম্মাদ (ﷺ) ইসরার রাতে জেরুজালেমের সে স্থানে গিয়েছিলেন। কাজেই তিনি সেদিন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসায় গিয়েছেন—এ দাবির মধ্যে তাত্ত্বিকভাবে কোনোই ভুল নেই বা মিথ্যা নেই। এমনকি কুরআন ও হাদিসের পরিভাষার সাথেও তা কোনোক্রমেই সাংঘর্ষিক নয়। বিরোধীরা এরপরেও দাবি করতে চায়—মুহাম্মাদ (ﷺ) আল আকসায় গমন বলতে শুধু ওই স্থানটিতে যাওয়া বোঝাননি বরং তিনি ইমারতবিশিষ্ট একটি মাসজিদের কথাই বলেছেন। এর স্বপক্ষে তারা নিম্নোক্ত দলিলগুলো ব্যবহার করে—
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “আমি হাজরে আসওয়াদের কাছে ছিলাম। এ সময় কুরাইশরা আমাকে আমার মিরাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করতে শুরু করে। তারা আমাকে বাইতুল মুকাদ্দাসের এমন সব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগলো, যা আমি ভালোভাবে দেখিনি। ফলে আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লাম।” রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “তারপর আল্লাহ তা‘আলা আমার সম্মুখে বাইতুল মুকাদ্দাসকে উদ্ভাসিত করে দিলেন এবং আমি তা দেখছিলাম। তারা আমাকে যে প্রশ্ন করছিল, তার জবাব দিতে লাগলাম। ...”[8]
“আমি হিজরে দাঁড়ালাম, বাইতুল মাকদিস দেখতে পেলাম এবং এর নিদর্শনগুলো বর্ণনা করলাম। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জানতে চাইলো, ওই মাসজিদে কতগুলো দরজা আছে? আমি (আগে) সেগুলো গুণিনি। কাজেই আমি এর দিকে তাকালাম এবং এক এক করে গুণলাম এবং এগুলোর তথ্য তাদের দিলাম।”[9]
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “আমার জন্য বুরাক পাঠানো হলো। বুরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু। যতোদূর দৃষ্টি যায়, এক এক পদক্ষেপে সে ততোদূর চলে।” রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “আমি এতে আরোহণ করলাম এবং বাইতুল মাকদিস পর্যন্ত এসে পৌঁছলাম। তারপর অন্যান্য নবীগণ তাঁদের বাহনগুলো যে রজ্জুতে বাঁধতেন, আমি সে রজ্জুতে আমার বাহনটিও বাঁধলাম। তারপর মাসজিদে প্রবেশ করলাম ও দুই রাকাত নামায আদায় করে বের হলাম। ...” [10]
এই বর্ণনাগুলোয় দেখা যায় যে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলছেন, তাঁর সামনে বাইতুল মুকাদ্দাসকে উদ্ভাসিত করা হয়েছিল, তিনি মাসজিদে প্রবেশ করেছেন ও তা থেকে বের হয়েছেন, তিনি মসজিদের কিছু দ্বারের কথা বলছেন। এ থেকে নাস্তিক ও খ্রিষ্টান মিশনারিরা দাবি করে যে—তিনি ইমারতসহ একটি মসজিদের কথাই বলেছেন। কেননা তিনি যদি খালি স্থানের কথা বলতেন, তাহলে তাঁর সামনে কী উদ্ভাসিত করা হলো? খালি স্থান হলে তো দ্বার বা দরজা থাকার কথা না, খালি স্থানে কী করে তিনি প্রবেশ করলেন ও বের হলেন? কাজেই তিনি একটি ইমারতবিশিষ্ট মাসজিদের কথাই বলতে চেয়েছেন, যা একটি অসত্য কথা [নাউযুবিল্লাহ]। এর খণ্ডনে আমরা যা বলবো—
প্রথম কথা: উদ্ভাসিত হওয়ার জন্য ইমারত থাকা জরুরি নয়। যেকোনো স্থানই কারও সামনে উদ্ভাসিত হয়ে বা ফুটে উঠতে পারে।
দ্বিতীয় কথা: পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, মাসজিদুল হারাম যেমন একটা নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে গঠিত, বাইতুল মুকাদ্দাসও তেমনই একটি নির্দিষ্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। সেই এলাকাটি সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা ছিল। সেই এলাকাতে ঢোকা ও বের হওয়া মাসজিদে ঢোকা ও বের হওয়া হিসাবে বলা হয়েছে।
তৃতীয় কথা: বিবরণের মধ্যে দ্বার বা দরজার কথাও বলা আছে। বাইতুল মুকাদ্দাস এলাকাটি সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল এবং তাতে কিছু প্রবেশদ্বার ছিল। এখানে এই প্রবেশদ্বারের কথাই বলা হয়েছে।
নাস্তিক ও খ্রিষ্টান মিশনারিরা এবার হয়তো বলতে পারেন, ওই যুগে এলাকাটি সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা ছিল এবং তাতে প্রবেশদ্বার ছিল, তার প্রমাণ কী? মুহাম্মাদ (ﷺ) এর দাবির কোনো সাক্ষী আছে? আর মুহাম্মাদ (ﷺ) যে ওই প্রবেশদ্বার দিয়েই ঢুকেছেন তার প্রমাণ কী? কোনো ঐতিহাসিক বিবরণ কি আছে?
মুহাম্মাদ (ﷺ) যখন ইসরা ও মিরাজে গিয়েছেন, তখন সেখানে কেউ না থাকলেও এর কয়েক বছর পর খলিফা উমার (রা.) যখন জেরুজালেমে যান, তখন কিন্তু সেখানে অনেক লোক ছিল। খলিফা উমার (রা.) কর্তৃক বাইতুল মুকাদ্দাসে ঢোকার বিবরণের মধ্যেও এটা উল্লেখ আছে যে—তিনি একটি দরজা দিয়ে সেখানে প্রবেশ করেছিলেন। এবং এটা ছিল সেই দ্বার, যে দ্বার দিয়ে মুহাম্মাদ (ﷺ) ইসরার রাতে সেখানে প্রবেশ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সেখানে মাসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। উমার (রা.) এর বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশের সময় সেখানে অনেক মানুষ ছিল, অনেক সাক্ষী ছিল। কাজেই সেখানে যে দ্বার বা দরজা ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই ঐতিহাসিক ঘটনা অনেকেই লিপিবদ্ধ করেছেন। ইবন কাসির (র) এর বর্ণনা থেকে:
“...খলিফা উমার (রা.) সম্মুখে অগ্রসর হয়ে বাইতুল মুকাদ্দাসের খ্রিষ্টানদের সাথে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করলেন এবং শর্ত করলেন যে, তিন দিনের মধ্যে সকল রোমান নাগরিক বাইতুল মুকাদ্দাস ছেড়ে চলে যাবে। এরপর তিনি বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করলেন। প্রবেশ করলেন সেই দরজা দিয়ে, মি‘রাজের রাতে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন যে, বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশের সময়ে তিনি তালবিয়া পাঠ করেছিলেন, ভেতরে গিয়ে দাউদ (আ.)-এর মিহরাবের পার্শ্বে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামায আদায় করলেন। পরের দিন ফজরের নামায মুসলমানদেরকে সাথে নিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করলেন।...এরপর তিনি ‘সাখরা’ বা বিশেষ পাথরের নিকট এলেন। কা‘ব আল-আহবার (র) থেকে তিনি ওই স্থান সম্পর্কে জেনে নিয়েছিলেন। কা‘ব (র) এই ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন যেন তিনি মাসজিদটি ওই পাথরের পেছনে তৈরি করেন। হযরত উমার (রা.) বললেন, ইহুদি ধর্ম তো শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপর বাইতুল মুকাদ্দাসের সম্মুখে মাসজিদ নির্মাণ করলেন। এখন সেটি উমারী মাসজিদ নামে পরিচিত।” [11]
ইমাম আহমাদ (র) আরও বর্ণনা করেন যে, উমার (রা.) বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশের পর ঠিক সেখানেই নামায পড়েন, যেখানে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) নামায পড়েছিলেন।[12] উমার (রা.) দ্বার দিয়ে প্রবেশ করেন, নামায আদায় করেন, এবং পরে মাসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে—মাসজিদ তৈরির আগেই সেখানে দ্বার ছিল। বিবরণ থেকে এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, এই দ্বার হচ্ছে বাইতুল মুকাদ্দাস এলাকার প্রবেশদ্বার। বাইতুল মুকাদ্দাসের একটি মানচিত্রের ছবি দেখলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। উমার (রা.) এর প্রবেশদ্বার এবং অন্য স্থানগুলো এতে চিহ্নিত করে দেখানো আছে।
“আল আকসা (বাইতুল মুকাদ্দাস) কমপ্লেক্সের মানচিত্র” [মানচিত্রটি তৈরি করেছেন: গুলরু নেসিপোগলু (GÜLRU NECIPOĞLU), অধ্যাপক: ইসলামিক আর্ট অ্যান্ড আর্কিটেকচার
বিভাগ: হিস্ট্রি অব আর্ট অ্যান্ড আর্কিটেকচার, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়] [13]
আসলে ওই এলাকাটি সম্পর্কে স্থানীয়দের পরিষ্কার ধারণা রয়েছে। এই দ্বার ও মসজিদের খুঁটিনাটি তাদের জানা। এমনকি এখানে “বুরাক দ্বার” নামে একটি প্রবেশদ্বারও আছে [মানচিত্রে ৮ নং দ্বার]। দ্বারটি বর্তমানে বন্ধ। এই দ্বার ও এলাকাটির ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তারা মোটেও নাস্তিক ও খ্রিষ্টান মিশনারিদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হন না। এ ব্যাপারে ওই সব সরলমনা মুসলিম বিভ্রান্ত হন, যারা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে বাস করেন, যাদের এলাকাটি সম্পর্কে ধারণা নেই এবং ইসরার ইতিহাস সম্পর্কেও বিস্তারিত জ্ঞান নেই।
আমরা আরও একটি বিবরণ দেখতে পারি:
“...এরপর তিনি [আবু বকর (রা.)] সেখান থেকে সোজা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট চলে আসলেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনি কি এদের কাছে বলেছেন যে এই রাতে আপনি বাইতুল মুকাদ্দাসে গিয়েছিলেন?’ তিনি বললেন, ‘হাঁ।’ আবু বকর (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী!সে মাসজিদটির বর্ণনা দিন তো; আমি সেখানে গিয়েছিলাম।’ তখন নবী (ﷺ) বললেন, ‘তখন বাইতুল মুকাদ্দাসকে আমার সামনে তুলে ধরা হলো। আমি তার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।’ এরপর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আবু বকর (রা.) এর কাছে বাইতুল মুকাদ্দাসের বর্ণনা দিতে লাগলেন। আর আবু বকর (রা.) প্রতিবারই বলতে লাগলেন, ‘আপনি সত্যই বলেছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর রাসুল।’ ...”[14]
এখানে দেখা যাচ্ছে যে, আবু বকর (রা.) পূর্বে বাইতুল মুকাদ্দাসে গিয়েছিলেন এবং সেখানকার বর্ণনা তাঁর জানা ছিল। রাসুল (ﷺ) যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে আবু বকর (রা.) এর দেখা বাইতুল মুকাদ্দাস হুবহু মিলে গিয়েছিল। যদি বর্ণনা না মিলতো, তাহলে তো আবু বকর (রা.) বুঝতেন যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) সত্য বলেননি। অথচ আদৌ এমন কিছু হয়নি, মুহাম্মাদ (ﷺ) এর সত্যবাদিতাই আবু বকর (রা.) এর কাছে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। যে সমস্ত নাস্তিক ও খ্রিষ্টান মিশনারি ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারে মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে অপবাদ দেয়, তাদের কি উচিত না এই বিবরণটি দেখা?
আরও একটি বিবরণ উল্লেখ করছি:
“...আমি [উম্মু হানি (রা.)] বললাম, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনি এ [ইসরা ও মিরাজ এর] কথা লোকদের কাছে প্রকাশ করবেন না, অন্যথায় তারা আপনাকে মিথ্যাবাদী বলবে ও আপনাকে কষ্ট দেবে।’
কিন্তু তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই তাদের কাছে এ ঘটনা ব্যক্ত করবো।’ তখন আমি আমার এক হাবশি দাসীকে বললাম, ‘বসে আছো কেন? জলদি রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে যাও, তিনি লোকদের কী বলেন তা শোনো, আর দেখো তারা কী মন্তব্য করে।’ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বের হয়ে গিয়ে লোকদের এ ঘটনা জানালেন। তারা বিস্মিত হয়ে বললো, ‘হে মুহাম্মাদ! এ যে সত্য তার প্রমাণ? এমন ঘটনা তো আমরা কোনোদিন শুনিনি।’ তিনি বললেন, ‘প্রমাণ এই যে, আমি অমুক উপত্যকায় অমুক গোত্রের একটি কাফেলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সহসা আমার বাহন জন্তুটির গর্জনে তারা ত্রস্ত হয়ে পড়ে। ফলে তাদের একটি উট হারিয়ে যায়। আমি তাদের উটটির সন্ধান দিই। আমি তখন শামের দিকে যাচ্ছিলাম। এরপর সেখান থেকে ফিরে আসার পথে যখন দাজনান পর্বতের কাছে পৌঁছি, তখন সেখানেও একটি কাফেলা দেখতে পাই। তারা সকলে নিদ্রিত ছিল। তাদের কাছে একটি পানিভরা পাত্র ছিল, যা কোনো কিছু দিয়ে ঢাকা ছিল। আমি সে ঢাকনা সরিয়ে তা থেকে পানি পান করি। এরপর তা আগের মতো করে ঢেকে রেখে দিই। আর এর প্রমাণ এই যে—সে কাফেলাটি এখন বায়যা গিরিপথ থেকে ‘সানিয়াতুত তানঈমে’ নেমে আসছে। তাদের সামনে একটি ধূসর বর্ণের উট আছে, যার দেহে একটি কালো ও আরেকটি বিচিত্র বর্ণের ছাপ আছে।’”
উম্মু হানি (রা.) বলেন, “একথা শোনামাত্র উপস্থিত লোকেরা সানিয়ার দিকে ছুটে গেলো। তারা ঠিকই সম্মুখভাগের উটটিকে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর বর্ণনামতো পেলো। তারা কাফেলার কাছে তাদের পানির পাত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তারা বললো, ‘আমরা পানির একটি ভরা পাত্রে ঢাকনা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। জাগ্রত হওয়ার পর পাত্রটিকে যেমন রেখেছিলাম তেমনই ঢাকা পাই, কিন্তু ভেতর পানিশূন্য ছিল।’ তারা অপর কাফেলাকেও জিজ্ঞেস করলো। সে কাফেলাটি তখন মক্কাতেই ছিল। তারা বললো, ‘আল্লাহর কসম!তিনি সত্যই বলেছেন। তিনি যে উপত্যকার কথা বলেছেন, সেখানে ঠিকই আমরা ভয় পেয়েছিলাম। তখন আমাদের একটি উট হারিয়ে যায়। আমরা অদৃশ্য এক ব্যক্তির আওয়াজ শুনতে পাই,যে আমাদের উটটির সন্ধান দিচ্ছিলো। সেমতে আমরা উটটি ধরে ফেলি।’” [15]
এই ঘটনায় আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারে সে যুগেও লোকজন সন্দেহ পোষণ করেছিল। আর মুহাম্মাদ (ﷺ) সন্দেহবাদীদের যথাযথ প্রমাণ দেখান। সুস্পষ্টভাবে তাদের সামনে মুহাম্মাদ (ﷺ) এর কথার সত্যতা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। যে সমস্ত নাস্তিক ও খ্রিষ্টান মিশনারিরা মুহাম্মাদ (ﷺ) এর ইসরা ও মিরাজ মিথ্যা প্রমাণের জন্য কলম ধরে, তারা কেন এই বর্ণনাটি উল্লেখ করে না? সংশয়বাদীদের কি উচিত না, এই বর্ণনাটি ভালোমতো লক্ষ করা, যাতে মুহাম্মাদ (ﷺ) সেই যুগের সংশয়বাদীদের সুস্পষ্টভাবে তাঁর কথার স্বপক্ষে প্রমাণ দেখিয়েছিলেন?
সব শেষে বলবো যে—ইসরা ও মিরাজ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) এর জন্য বিরাট এক মর্যাদা ও সাধারণ মানুষের জন্য পরীক্ষা। যুক্তি ও বিবেকের কষ্টিপাথরে কেউ যদি যাচাই করে, তাহলে সে এটা নিশ্চিত বুঝতে পারবে যে, সারাজীবনের আল-আমিন (বিশ্বস্ত) মুহাম্মাদ (ﷺ) ইসরা ও মিরাজের ব্যাপারেও সত্য কথা থেকে এক চুল বিচ্যুত হননি। আর তখনই কেবল এ পরীক্ষায় সফল হওয়া সম্ভব হবে।
وَ مَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إلاَّ فِتْنَةً لِلنَّاسِ
“আর আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি তা কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্য।” [16]
আরো পড়ুনঃ
মিরাজের রাতে নবী(ﷺ) কি আসলেই ডানাওয়ালা ঘোড়ায় করে আসমানে গিয়েছেন?
কা'বা ও আল আকসা নির্মাণের সময়ের ব্যাবধান সম্পর্কে হাদিসের তথ্য কতটুকু সঠিক?
মিরাজের রাতে নামায ৫০ থেকে ৫ ওয়াক্ত হবার দ্বারা কি আল্লাহর বাণী বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে?
মিরাজের যাত্রা শুরুর স্থান নিয়ে হাদিসে কি স্ববিরোধিতা আছে?
মিরাজের ঘটনায় রাসুল(ﷺ) ও উম্মে হানী(রা.) এর উপর ইসলামবিরোধীদের নোংরা অপবাদের জবাব
তথ্যসূত্রঃ
[1] 'Temple Mount' - Wikipedia, the free encyclopedia
[2] আল-কুরআন, সুরা বনী ইসরাইল (ইসরা), ১৭ : ১
[3] সহীহ মুসলিম, হাদিস : ৭১২
[4] ফাতাওয়া শায়খ উসাইমিন : ১২/৩৯৪
[5] সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস : ৭৫৩
[6] আল কুরআন, সুরা ইবরাহিম, ১৪ : ৩৭
[7] সহীহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৬৪
[8] সহীহ মুসলিম, খণ্ড : ১, কিতাবুল ঈমান, হাদিস : ৩২৮
[9] আত-তাবাকাত আল-কুবরা খণ্ড : ১, ইবন সা’দ, পৃষ্ঠা : ২৪৬-২৪৮ দ্রষ্টব্য
[10] সহীহ মুসলিম, খণ্ড : ১, কিতাবুল ঈমান, হাদিস : ৩০৯
[11] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবন কাসির (র), ৭ম খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), পৃষ্ঠা : ১০৭- ১০৮
[12] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবন কাসির (র), ৭ম খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), পৃষ্ঠা : ১১২
[13] The Dome of the Rock as palimpsest: 'Abd al-Malik's grand narrative and Sultan Süleyman's glosses By Gülru Necipoğlu; পৃষ্ঠা ২০-২১
[14] সীরাতুন নবী (সা.), ইবন হিশাম (র), ২য় খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পৃষ্ঠা : ৭৪
[15] সীরাতুন নবী (সা.), ইবন হিশাম (র), ২য় খণ্ড (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), পৃষ্ঠা : ৭৬-৭৭
[16] আল-কুরআন, বনী ইসরাইল (ইসরা), ১৭ : ৬০